রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সীতাকুণ্ডে সাগর উপকূলে অবস্থিত একটি শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে আমদানিকৃত স্ক্র্যাপ জাহাজ ৯ মাস ধরে কাটিং না করে সাগরে ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে নাব্যতা সঙ্কটে আশপাশের ইয়ার্ডগুলোতেও জাহাজ আমদানি ব্যাহত হতে পারে বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসীসহ অনেকে। এছাড়া পলি জমে ঐ এলাকায় নতুন চর সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বারআউলিয়া সাগর উপকূলে অবস্থিত মাহিনুর শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে আমদানিকৃত একটি স্ক্র্যাপ জাহাজ কাটিং না করে দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস সেটি ইয়ার্ডের সামনে সাগরে ফেলে রেখেছে ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতিদিন জোয়ারের পানিতে আসা পলি মাটি ঐ জাহাজে আটকে গিয়ে আশপাশের এলাকা ভরাট হয়ে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাপানি পতাকাবাহী ৮ হাজার টন ওজনের এই জাহাজটি এএইচজেট শিপব্রোকার নামক এজেন্টের মাধ্যমে ক্রয় করে মাহিনুর শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে আমদানি করা হয় ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল। এরপর জাহাজটি ৭০-৮০ শতাংশ কাটিং হয়ে যাবার পর হটাৎ হাইকোর্ট থেকে একটি ওয়ারেন্ট ইস্যু করে জাহাজটি কাটিং বন্ধের নির্দেশনা দেন বিজ্ঞ আদালত। সেই থেকে দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস সাগর পাড়ে ফেলে রাখায় জাহাজটির উভয় পাশে পলি জমে ধীরে ধীরে নতুন একটি চরের সৃষ্টি হতে চলেছে। এই চর দিন দিন আরো বড় হয়ে ঐ ইয়ার্ড এলাকায় নাব্যতা সঙ্কট সৃষ্টি করছে। পরিদর্শনকালে সোনাইছড়ির জোড় আমতলের বাসিন্দা মো. সালাউদ্দিন ও মো. আবু বকর বলেন, সাগর পাড়ে যদি একটি গাছও দীর্ঘদিন পড়ে থাকে সেটি ঘিরে ঐ এলাকায় একটি বালুর স্তরে রূপ নিয়ে থাকে। ঠিক সে হিসেবে একটি বিশাল জাহাজ মাহিনুর শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের সামনের সাগর পাড়ে দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে আছে, সেখানে জাহাজটি ঘিরে চর পড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। আর যতদূর শুনেছি জাহাজটি বিদেশি মালিকের কাছে সেখানকার কোন এক প্রতিষ্ঠান কিছু টাকা পাওনা ছিলো। তা পরিশোধ না করে তারা সেটি বাংলাদেশে বিক্রি করে দেয়ায় এখন তাদের পক্ষে এখানে আদালতে মামলা হয়। এ কারণেই জাহাজটির কাটিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মাহিনুর শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের মালিক মো. নুরুন্নবী মানিক বলেন, ব্যাংক থেকে আমরা শত শত কোটি টাকা লোন নিয়ে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করে স্ক্র্যাপ জাহাজ কিনেছি বাংলাদেশি ক্রেতার কাছ থেকে। কেনার আগে বিদেশি বিক্রেতারা এ জাহাজটির কোন দেনা নেই বলে আমাদেরকে লিখিত দেয়। এর প্রেক্ষিতে আমি স্ক্র্যাপ জাহাজটি কিনেছি। আর এটির জন্য সরকারকে শুল্ক দিয়েছি ৩ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকারও বেশি। এসব টাকার বিপরীতে ব্যাংকে প্রতিদিন বিপুল অংকের সুদ দিতে হচ্ছে। তাই একদিন জাহাজটি কাটা বন্ধ মানে আমার বিপুল পরিমান আর্থিক ক্ষতি হয়ে যাওয়া। তবুও আদালত ওয়ারেন্ট ইস্যু করায় আমি জাহাজ কাটিং বন্ধ রেখেছি। তিনি আরো বলেন, ২০১৮ সালে জাহাজটির যে মালিক ছিল তার কাছে একজন টাকা পাওনা ছিলেন। এরপর আরো দুই জন মালিক বদল হয়ে ২০২১ সালে এটি বাংলাদেশে এসেছে। এ সময়ের কোন মালিকের বিরুদ্ধেই পাওনা টাকা নিয়ে কেউ মামলা করেনি। আমি সর্বশেষ মালিক ডেমো ইন্টারন্যাশনালের কাছ থেকে এটি স্ক্র্যাপ হিসেবে কিনেছি। কাস্টমস আইন অনুযায়ী এটি স্ক্র্যাপ লোহা। আমরা ৭০-৮০ শতাংশ কাটিংও শেষ করেছি। এরপর এর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ কারণে আমি কেন দায়ী হবো? তিনি বলেন, আদালতে ডেমো ইন্টারন্যাশনালের আইনজীবী মৌখিকভাবে ব্যাংক গ্যারান্টির জামানত দেবে বলে জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু তা না দিয়ে বিভ্রান্তি করে। শুধু তাই নয় এর আগেও এ ধরণের প্রতিষ্ঠান শিপব্রেকার্সদের হয়রানি করলেও প্রতিকার না হওয়ায় এসব ঘটনা বাড়ছে ক্রমশ।
এবিষয়ে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ ইনকিলাবকে বলেন, উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করায় বিজ্ঞ আদালত জাহাজটি কাটিং বন্ধের নির্দেশনা দেন। সে কারণে এভাবে জাহাজটি পড়ে আছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।