পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার দরবারে শায়খুল ইসলাম হযরত শাহ্সূফী আল্লামা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল হাসানীর (ক.) ৮৫তম খোশরোজ মাহফিলে ৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি এবং গতকাল শুক্রবার বাদে জুমা আখেরি মোনাজাতে লাখো ভক্ত আশেকের ঢল নামে। এ উপলক্ষ্যে মাইজভাণ্ডার দরবারে দেশ-বিদেশের লাখো ভক্ত জনতা স্বাস্থ্য বিধি মেনে নানান ধর্মীয় ও মানবিক কর্মসূচী পালন করেছে।
জুমার বয়ান ও আখেরি মোনাজাতে দরবারের সাজ্জাদানশীন পার্লামেন্ট অব ওয়ার্ল্ড সূফীজের প্রেসিডেন্ট শাহ্সূফী মাওলানা সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী বলেন, সারা বিশ্বে আজ অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দেশে দেশে চলছে নিরীহ মানবতার ওপর দলন-পীড়ন ও বর্বরতা। বিশ্ববাসী হন্য হয়ে শান্তি খুঁজছে। কিন্তু কোথাও শান্তি নেই।
বহু দেশে নিপীড়ক শাসকদের স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার দম্ভে পিষ্ট হচ্ছে নিরীহ মানবতা। দেশে দেশে শোনা যায় মানবতার করুণ আহাজারি। দেশ ও বিশ্বে চলমান যাবতীয় গর্হিত মানবতারোধী তৎপরতা মোকাবিলায় ওলি বুজুর্গের দেখানো শান্তি-সম্প্রীতির আদর্শকে ধারণ করতে হবে। সর্বত্র শান্তি ও ভালোবাসার বাণী ছড়িয়ে দিয়ে সম্প্রীতির বিশ্ব সমাজ গড়তে হবে।
সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, এ দেশের মাটি ও মানুষের মানস চেতনা উপযোগী ত্বরীক্বায়ে মাইজভাণ্ডারীয়া চর্চা বেগবান করার মাধ্যমে বৈশ্বিক শান্তির রূপরেখাই পেশ করেছেন সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী। তিনি দুই দশক আগে জাতিসংঘ অধিবেশনে প্রদত্ত বক্তৃতায় মদিনা সনদের আলোকে বর্তমান বৈশ্বিক সংকট উত্তরণ এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার যে ডাক দিয়েছিলেন তা আজও বেশ প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যপূর্ণ। দ্বন্দ্ব-হানাহানিমুক্ত সম্প্রীতিময় মানবিক বিশ্ব চাইলে বিশ্ব নেতৃত্বকে এ পথেই ফিরে আসতে হবে।
খোশরোজ উপলক্ষে আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া, সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্ট, মইনীয়া যুব ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠনের ৬ দিনব্যাপী কর্মসূচিতে ছিল খতমে কোরআন, খতমে গাউছিয়া মাইজভাণ্ডারীয়া, ফ্রি চিকিৎসা, মাদক জঙ্গিবাদ ও যৌতুক প্রতিরোধে প্রচার ও গণস্বাক্ষর, ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প, শীত বস্ত্র বিতরণ, মাইজভাণ্ডার রহমানিয়া মইনীয়া দরসে নেজামি আলিম মাদরাসা এতিমখানা ও হেফজখানার সালানা জলসা ও দস্তারবন্দি, মইনীয়া প্রকাশনী কর্তৃক প্রকাশিত কয়েকটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, দেশ-বিদেশের নানা অনুষ্ঠানের দুর্লভ আলোকচিত্র ও ভিডিও প্রদর্শনী।
সালানা জলসায় হেফজখানার ১২ জন হেফজ সমাপনকারী ছাত্রকে পাগড়ি পরিয়ে দেন সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী। মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন মইনীয়া যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইয়্যিদ মেহবুব-এ-মইনুদ্দীন আল-হাসানী, কার্যকরী সভাপতি সাইয়্যিদ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন আল-হাসানী, ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইয়্যিদ হাসনাইন-এ-মইনুদ্দীন আল-হাসানী, ট্রাস্টের মহাসচিব অ্যাডভোকেট কাজী মহসীন চৌধুরী, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী। অতিথি ও আলোচক ছিলেন আনজুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়াজ উদ্দিন মিয়া, আনজুমান সাধারণ সম্পাদক খলিফা শাহ্ আলমগীর খান মাইজভাণ্ডারী, প্রচার সম্পাদক আল্লামা রুহুল আমিন ভুঁইয়া চাঁদপুরী, সহ-প্রচার সম্পাদক শাহ্ মুহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া মাইজভাণ্ডারী, প্রিন্সিপাল গোলাম মুহাম্মদ খান সিরাজী, খলিফা মুহাম্মদ বোরহান উদ্দিন, কাজী মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ প্রমুখ। শেষে মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ, বিশ্বের নিপীড়িত মানবতার পরিত্রাণ এবং দেশ ও বৈশ্বিক শান্তি-সমৃদ্ধি কামনায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।