Inqilab Logo

শনিবার, ০৮ জুন ২০২৪, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সেই মিনু আক্তারের ছেলেদের পাশে কেএসআরএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১১:৫৫ এএম

সন্তানদের ভরণপোষণ জোগাতে ‘খুনি’ সেজে তিন বছর ধরে জেল খেটে বের হয়ে করুণ মৃত্যুর শিকার সেই মিনু আক্তারের দুই সন্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে ইস্পাত নির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের কাছে পাঁচ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জেলা প্রশাসকের কাছে চেক হস্তান্তর করেন। এসময় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সুমনী আক্তার উপস্থিত ছিলেন। মৃত মিনু আক্তারের দুই সন্তানের মধ্যে বড় ইয়াসিন (১৩) আছে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ শিশু কিশোর সংশোধনাগারে। ছোট ছেলে গোলাপ (১০) আছে দিনমজুর মামার আশ্রয়ে। কেএসআরএম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে হতভাগ্য মিনু ও তার সন্তানদের দুর্দশার বিষয় জেনে প্রতিষ্ঠানের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন তাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়ার। এ কারণে জেলা প্রশাসকের কাছে দুই সন্তানের জন্য অনুদানের চেক হস্তাস্তর করা হয়েছে। মৃত মিনু আক্তারের বাড়ি কুমিল্লা জেলার ময়নামতি এলাকায়। তিনি সীতাকুণ্ডের জঙ্গল ছলিমপুর এলাকায় থাকতেন। তার স্বামী ট্রাকচালক বাবুল আক্তার ২০১৮ সালে মারা যান।

২০০৬ সালের ২৯ মে নগরীর কোতোয়ালি থানার রহমতগঞ্জ এলাকায় পারভিন আক্তার নামে এক পোশাককর্মীকে গলাটিপে হত্যা করা হয়। পরে তার লাশ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পুলিশ তদন্তে পায়, মোবাইল নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিবেশী কুলসুম আক্তার তাকে খুন করেন। ২০০৭ সালের ২৬ অক্টোবর কুলসুমকে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি কারাগারে ছিলেন। জামিনে বেরিয়ে পলাতক হয়ে যান। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ কুলসুমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। পলাতক থাকা অবস্থায় কুলসুম জানতে পারেন, তার যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। তিনি পরিচিত কয়েকজনের মাধ্যমে সদ্যবিধবা হতদরিদ্র মিনু আক্তারকে খুঁজে বের করেন। সন্তানদের ভরণপোষণ দেওয়ার প্রস্তাবে অসহায় মিনু রাজি হয়ে কুলসুম সেজে ২০১৮ সালের ১২ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। সেই থেকে মিনু কুলসুম হয়ে কারাগারে ছিলেন। বিষয়টি জানাজানির পর চট্টগ্রাম আদালতের একজন আইনজীবী এ বিষয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। হাইকোর্ট গত বছরের ৭ জুন মিনুকে মুক্তির আদেশ দেন। ১৬ জুন মুক্তি পান। ২৯ জুন রাতে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার লিংক রোডে আরেফিন নগর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মিনু।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ