Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশে এখন করোনা সংক্রমিতদের ৮২ শতাংশেরই ওমিক্রন

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৩:৪৫ পিএম

দেশে এখন করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমিতদের ৮২ শতাংশেরই নতুন ধরন ওমিক্রন। তবে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট থেকে ওমিক্রনে সংক্রমণের হার অনেক বেশি হলেও মৃত্যুর হার কম।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউয়ের উদ্যোগে পরিচালিত কোভিড-১৯ এর জিনোম সিকোয়েন্সিং নিয়ে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

গবেষণায় বলা হয়, চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিএসএমএমইউতে মোট ভর্তি রোগী এবং বহির্বিভাগের রোগীর মধ্যে ৮২ শতাংশের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত। যেখানে ১৮ শতাংশ মানুষের শরীরে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। শুধু বহির্বিভাগের রোগীদের মধ্যে ৮৮ শতাংশ ওমিক্রনে সংক্রমিত। তাদের মধ্যে ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট তিনটি ধরন পরিলক্ষিত হয়েছে বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, ওমিক্রনের বিএ.টু (BA.2) ভ্যারিয়েন্টটি সবচেয়ে বেশি সংক্রামক।

বলা হয়, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ওমিক্রনে সংক্রমণের হার অনেক বেশি। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট জিনোমের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি মিউটেশন পাওয়া গেছে। যার বেশির ভাগ ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিনে হয়েছে। এ স্পাইক প্রোটিনের ওপর ভিত্তি করে বেশির ভাগ ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়। স্পাইক প্রোটিনের গঠনগত বদলের জন্যই প্রচলিত ভ্যাকসিনেশনের পরও ওমিক্রন সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে যায়।

গবেষণার পর্যবেক্ষণে আরও দেখা যায়-
* ওমিক্রন এখন দেশের কোভিড-১৯ সংক্রমণের প্রধান উৎস, কিছুদিন আগে ছিল ডেল্টা।
* তৃতীয়বারের মতো আক্রান্ত হয়েছেন এরকম রোগীরও ওমিক্রন পাওয়া গেছে।
* হাসপাতালে ভর্তিরোগী জিনোম সিকোয়েন্স করে এ পর্যন্ত মোট ৬৫ শতাংশ রোগীর মধ্যে ওমিক্রন এবং ৩৫ শতাংশ রোগীতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে।
* মৃদু উপসর্গের কারণে ওমিক্রন রোগীদের থেকে দ্রুত সংক্রমণ প্রবণতাও রয়েছে।
* ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে কম মাথাব্যথা এবং সর্দির মতো উপসর্গ থাকে।
* শুমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির সম্ভাবনা কম।
* এ গবেষণা জিনোমিক ডাটাবেজ থেকে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে সম্ভাবনা সৃষ্টি করে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিএসএমএমইউর কোভিড-১৯ এর ৯৩৭টি জিনোম সিকোয়েন্সিং করে এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে। এ রিপোর্ট বিএসএমএমইউর চলমান গবেষণার সাড়ে সাত মাসের ফলাফল।

ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনাভাইরাসের সব ভ্যারিয়েন্ট বিপজ্জনক এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে। পাশাপাশি ভাইরাসের নিয়মিত মিউটেশন আমাদের প্রচলিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঝুঁকিপূর্ণ করতে পারে। তাই করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে ও টিকা নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ এর জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার উদ্দেশ্য সিভিয়ার অ্যাকুইট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (এসএআরএস) CoV-2 এর জিনোমের গঠন উন্মোচন ও পরিবর্তনের ধরন এবং বৈশ্বিক করোনাভাইরাসের জিনোমের সঙ্গে আন্তঃসম্পর্ক বের করা, ভাইরাসের বিবর্তনীয় সম্পর্ক, রোগের উপসর্গ, রোগের প্রখরতা, তুলনামূলক হাসপাতাল অবস্থানের মেয়াদকাল এবং বাংলাদেশি কোভিড-১৯ জিনোম ডাটাবেজ তৈরি করা। আন্তর্জাতিক সিকোয়েন্সিং ডাটাবেজ জিন ব্যাংক বিএসএমএমইউর ৯৩৭টি ভাইরাল জিনোম জমা দেওয়া হয়েছে।

বিএসএমএমইউর গবেষণায় ৯ মাস থেকে শুরু করে ৯০ বছর বয়সী রোগী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৩০ থেকে ৫৯ বছর বয়সী রোগীদের সংখ্যা বেশি। শিশুদের মধ্যেও কোভিড সংক্রমণ পাওয়া গেছে। আক্রান্তের হার ৪৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৫১ শতাংশ নারী।

কোভিড আক্রান্তদের মধ্যে যাদের ক্যানসার, উচ্চরক্তচাপ, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস তাদের রোগের প্রখরতা বেশি। এছাড়া মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে যারা ভ্যাকসিন নেননি তাদের হার বেশি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ