Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

আপীল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত সার্চ কমিটির সকল সদস্যের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যাদের সমন্বয়ে এই অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে তারা প্রায় সকলেই প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশে যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে তাদের লক্ষ্য থাকবে বিদায়ী কমিশনের মতোই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা। এটা জনগণের সঙ্গে আরেকটি প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ধরনের তামাশা জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করবে। গত এক দশকে মানুষের মৌলিক অধিকারকে কেড়ে নেয়া হয়েছে, মানুষের ভোটের অধিকারকে কেড়ে নেয়া হয়েছে। এটা একটা বড় অপরাধ। এর জন্য ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সার্চ কমিটির সদস্যদের আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততার তথ্য তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, কমিটির প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন দুই টার্মে। তিনি ২০০৭ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তার পিতা ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত গণ পরিষদের সদস্য। তার ছোট ভাই সাজ্জাদুল হাসান বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব হিসাবে কাজ করেছেন। আরেক সদস্য ছহুল হোসাইন ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। অন্য সদস্যবৃন্দ প্রায় সকলেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিভিন্নভাবে সম্পৃক্ত। যেমন- বিচারপতি কুদ্দুস সাহেবের গোটা পরিবার আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত। আর যে দুইজন কনট্রোলার জেনারেল ও পিএসসির চেয়ারম্যান তারাও আওয়ামী লীগ সরকার দ্বারাই মনোনীত। সুতরাং পুরো ছয় জনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।

বর্তমান সংকট উত্তরণে নিরপেক্ষ সরকারের কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে অনুসন্ধান কমিটি এবং তাদের দ্বারা গঠিত নির্বাচন কমিশন কোনো ক্রমেই গ্রহনযোগ্য, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবে না বিধায় বিএনপি গঠিত অনুসন্ধান কমিটির কমিটির বিষয়ে কোনো আগ্রহ প্রকাশ করতে চায় না।বিএনপি মনে করে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অর্থহীন এবং অগ্রহনযোগ্য। বিএনপি মনে করে কেবলমাত্র নিরপেক্ষ সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন সংক্রান্ত সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে এই সংকট উত্তরণ সম্ভব।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে ধবংস করে ফেলেছে। নির্বাচন কমিশন শুধু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যর্থ হচ্ছে তা নয়। তারা চুরি করছে, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হয়েছে। এটা আন-বিলিভেবল। তারা (ইসি) ইভিএম কিনছে ১১ গুণ বেশি দাম দিয়ে ভারতের থেকে। এরকম একটা জঘন্য পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। আমাদের স্পষ্ট কথা দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।

নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে কী করা উচিত প্রশ্ন করা হলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এজন্য এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে, এই সংসদ বাতিল করতে হবে। তারপরে নতুন সরকার আসবে। তারা অবশ্যই প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হবে। সমাধান আছে, দেশে ভালো লোক আছে।
এলপিজি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য দুঃসহ ভোগান্তি তৈরি করেছে।

কূটনৈতিক ক্যাডার সার্ভিসকে দলীয়করণ: মির্জা ফখরুল বলেন, মার্কিন কংগ্রেসম্যান গ্রেগোরি মিকসের বক্তব্যকে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশের দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিকৃতভাবে উপস্থাপনে দেশের কূটনৈতিক ক্যাডার সার্ভিসকে দলীয়করণের সর্বশেষ নিকৃষ্ট উদাহরণ। অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার তাদের সকল অবৈধ ও বেআইনি কর্মকাণ্ড বিশ্ববাসীর কাছে আড়াল করার জন্য বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের অবৈধভাবে করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করেছে। সভায় এই ধরনের বেআইনি কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় এবং বিদেশে কর্মরত দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে নিরপেক্ষতার সঙ্গে কর্তব্য পালনের আহবান জানানো হয়।

মোবাইল ইন্টানেটের গতির ইনডেক্স প্রসঙ্গে সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, স্পিড টেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্স’ এর ২০২১ সালের প্রতিবেদনে মোবাইল ইন্টারনেটের গতির ক্ষেত্রে ১৩৮ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৮তম হওয়ায় চরম হতাশা প্রকাশ করা হয়। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার দাবি যে কতটা অসাড় তা প্রমাণিত হয় এই তথ্যের মাধ্যমে। বাগাড়াম্বর ও দুর্নীতির জন্যই সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে জনগণকে মোবাইল ইন্টারনেটের গতি বাড়ানোর সেবা প্রদান করতে। স্থায়ী কমিটির সভায় ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।



 

Show all comments
  • মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৪:৪৫ এএম says : 0
    সম্পূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের দায়িততো সেনাবাহিনীর হাতে ছেড়ে দেওয়া হউক ।
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৪:৪৭ এএম says : 0
    সম্পূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের দায়িততো সেনাবাহিনীর হাতে ছেড়ে দেওয়া হউক,নির্বাচন শেষ করে যারা জনগণের ভোটে জয়ী হবেন,তাঁদের হাতে সেনাবাহিনী ক্ষমতা প্রদান করবেন। সেখানে কাহার ও আপত্তি থাকার কথা নয়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ