Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দাফন-দাহ নিয়ে চিন্তিত স্বজনরা

দুমকিতে নেই কবরস্থান-শ্মশান

আরিফ হোসেন, দুমকি (পটুয়াখালী) থেকে | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৭ এএম

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় প্রায় ১ লাখ মানুষের বসবাস। উপজেলার অধিকাংশ মানুষের থাকা-খাওয়ার তেমন একটা অভাব না থাকলেও মৃত্যুর পরে অনেকেরই সাড়ে তিন হাত জায়গার খুব অভাব।
দুমকি উপজেলায় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও শেখ হাসিনা সেনানিবাস অবস্থিত হওয়ায় অনেকেই চাকরির সুবাদে এখানে বসবাস করে আসছে। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী দীর্ঘদিন এখানে চাকরি করায় জমি ক্রয় করে ঘর তুলে পরিবার পরিজন নিয়ে থাকেন। অনেক স্থায়ী বাসিন্দাদেরও শুধু বসতভিটাই সম্বল। এদের পরিবারের কেউ মারা গেলে প্রিয় ব্যক্তির লাশ নিয়ে তাদের পড়তে হয় চরম দুশ্চিন্তায়। লাশ কবর দেয়া নিয়ে খুবই সমস্যায় পড়তে হয় অনেকের।
সবাই চান প্রিয়জনের শেষ স্মৃতিটুকু ধরে রাখতে। কিন্তু উপজেলায় কোন সরকারি/বেসরকারি কবরস্থান-শ্মশান না থাকায় দাফন/দাহ করা সেটি আর সম্ভব হচ্ছে না। কেউ মারা গেলে বাড়ির উঠান, আঙিনায় কবর দেয়া হয়। যাদের উঠানও নেই তারা স্বজনের লাশ নিয়ে পড়ে যান চরম বিপাকে। সাড়ে তিন হাত জমির বড়ই আকাল এ শহরে। চাকরি সুবাদে দুমকিতে বসবাস করা সরকারি জনতা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম বলেন আমার মতো অনেকেই আছেন যারা চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে দুমকিতে দীর্ঘদিন বসবাস করছেন, আমরা অনেকেই কোনমতে ২/৩ কাঠা জমি ক্রয় করে ঘর তুলে বসবাস করতেছি। কিন্ত আমাদের পরিবারের কেউ মারা গেলে তাকে কোথায় দাফন করবো সেই চিন্তায় আমরা খুবই চিন্তিত। দুমকিতে একটি সরকারি বা বেসরকারি কবরস্থানের খুবই দরকার। দুমকি অনেক ঘনবসতি এলাকা। এখানে যেকোনো বাড়িতে ঢুকলেই দেখা যায় কেউ বাড়ির সামনে, কারও ঘরের পাশে, কেউ আঙিনায়, কেউ রাস্তার ধারে স্বজনদের কবর দিয়েছেন। প্রতিটি বাড়িই যেন একেকটি কবরস্থান। এক বৃদ্ধ বলেন, আমার বয়স ৭০ বছর। জানি না আর কত দিন বাঁচব। খাওয়া-দাওয়া, ঘুমানোর কোনো চিন্তা নেই। শুধু একটাই চিন্তা, মরার পরে কোথায় আমার লাশ দাফন হবে?
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হোসনে আরা বলেন, দুমকিতে কোথায় খাসজমি আছে তা খতিয়ে দেখে একটি কবরস্থান করার জন্য চেষ্টা করবো।
উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, কবরস্থান করার মতো জমি পাওয়া যাচ্ছে না, আপনি আমাকে জমি দেন আমি কবরস্থান করে দিবো, তবে কারো দাফনে সমস্যা হলে আমার বাসার পাশে ওয়াকফকৃত কবরস্থান আছে সেখানে চাইলে যেকেউ দাফন করতে পারবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাৎ হোসেন মাসুদ বলেন, আমি দুমকিতে যোগদান করার পরেই আমার কাছে মনে হয়েছে এখানে একটি কবরস্থান এবং একটি বিনোদন কেন্দ্র খুবই দরকার। এখানে যাতে সরকারীভাবে একটি কবরস্থান করা হয় সে বিষয়ে আমি উদ্যোগ নিবো। এই মানবিক বিষয়ে নিউজ করার জন্য তিনি ইনকিলাবকে ধন্যবাদ জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ