Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভাটি মেঘনায় নাব্যতা সংকটে ফেরি চলাচল বিঘ্নিত

বিপর্যয়ের কবলে দেশের ৩টি সমুদ্র বন্দর সহ উপকূলীয় এলাকার সড়ক যোগাযোগ

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৮:৩৬ এএম

ভাটি মেঘনায় নাব্যতা সংকটে বরিশাল-লক্ষ্ণীপুর-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের ভোলা ও লক্ষ্ণীপুরের মধ্যবর্তী ইলিশা-মজুচৌধুরীর হাট নৌপথে ফেরি চলাচল মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরত্বের উপমহাদেশের সর্বাধিক দূরত্বের এ ফেরি রুটের কয়েকটি স্থানে মেঘনার ডুবো চড়ার কারণে ফেরি চলাচল অনেকটাই জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এমনকি নাব্যতা সংকট এড়িয়ে ফেরি ও যাত্রীবাহী নৌযানগুলোকে এখন প্রায় ২৫-২৬ কিলোমিটার নৌপথ অতিক্রম করতে হচ্ছে।

ফলে চট্টগ্রামের সাথে লক্ষ্ণীপুর-ভোলা-বরিশাল হয়ে মোংলা ও খুলনা পর্যন্ত সড়ক পরিবহন অনেকটাই বিপর্যস্ত। এতেকরে দেশের ৩টি বিভাগ ছাড়াও চট্টগ্রাম, পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দরের মধ্যেও সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। যানবাহনের চাপ বাড়ছে চট্টগ্রামÑঢাকাÑখুলনা মহাসড়কের ওপরও।
ভাটি মেঘনার গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ভোলার ইলিশা ফেরি ঘাটের সামনে বিশাল এলাকা জুড়ে চড়ার সৃষ্টি হওয়ায় ফেরি সহ সবধরনের নৌযানকেই প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ ঘুরে পন্টুনে ভিড়তে হচ্ছে। উপরন্তু ঐ নৌপথের মেঘনা বক্ষের আরো কয়েকটি স্থানেও নাব্যতা সংকট ক্রমশ বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র তরফ থেকে ইতোমধ্যেই ইলিশা ঘাট থেকে মজুচৌধুরীর হাট ফেরি ঘাট পর্যন্ত হাইড্রোগ্রাফী সার্ভে সম্পন্ন করা হয়েছে। এ সার্ভের ভিত্তিতে পাইলটেজ ও কনজার্ভেন্সী বিভাগ থেকে দিবারাত্র ফেরি সহ সব ধরনের নৌযানের চলাচলের বিষয়টি নিরাপদ রাখতে বয়া, বিকন ও মার্কা সহ লাইটেড বয়া স্থাপন করা হয়েছে।
নৌপথটি দেখাশোনাকারী বিআডবিøউটিএ’র চাঁদপুর অঞ্চলের যুগ্ম পরিচালক জানান, ইলিশা থেকে মজুচৌধুরীর হাট পর্যন্ত নৌযান চলাচলে নির্বিঘ্ন রাখতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। তবে ইলিশা ফেরি ঘাটের সামনে চড়া অপসারন অপতত সম্ভব নয় বিধায়, ঘুরা পথে ফেরি সহ অন্যসব নৌযানের চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে আমরা নতুন নৌপথ চিঞ্হিত করে সব ধরনের নৌ সংকেত ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি। তবে এতে করে নৌপথটির দৈর্ঘ ২২ কিলোমিটার থেকে ২৫-২৬ কিলোমিটারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।

এদিক ঐ ফেরি রুট ব্যাবহারকারী বরিশাল ও চট্টগ্রমের একাধীক ট্রাক ও কভার্ড ভ্যানের চালক সহ মালিকগন নানা দূর্ভোগের কথা জানিয়েছেন। তাদর মতে চট্টগ্রাম থেকে এখন লক্ষ্ণীপুরে এসে মেঘনা পাড়ি দিয়ে ভোলা থেকে ভেদুরিয়াÑলাহারহাট ফেরি পার হয়ে বরিশালে পৌছতে কমপক্ষে এক সপ্তাহ লেগে যাচ্ছে। অথচ এসড়ক পথের দুরত্ব আড়াইশ কিলোমিটারেরও কম। তাদের মতে মেঘনায় নাব্যতা সংকটের পাশাপাশি ইলিশা-মজু চৌধুরীর হাট রুটে নাব্যতটা সংকটে দুরত্ব বৃদ্ধি ছাড়াও মাত্র ৩টি কে-টাইপ ফেরি চলাচল করায় সব যানবাহনকে দিনের পর দিন ঘাটে আটকা থাকতে হচ্ছে। উপরন্তু বরিশাল ও ভোলার মধ্যবর্তি ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ লাহারহাট ও ভেদুরিয়া রুটে ৫টি ইউটিলিটি ফেরি থাকলে ৪টির বেশী চলছে না। এমনকি রাতের বেশীরভাগ সময়ই এরুট ফেরি চলাচল বন্ধ থাকার অভিযোগ করেন পরিবহন চালকগন।
এসব অব্যবস্থার কারণে দেশের অত্যন্ত সম্ভবনাময় মাত্র আড়াইশ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়কে এখন নিত্য দূর্ভোগ সব সম্ভবনাকে ¤øান করে দিচ্ছে। এ মহাসড়ক ব্যবহার থেকে ক্রমে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পন্যবাহী যানবাহনের চলকগন। এমনকি এসব কারণেই ৩টি বিভাগীয় সদরের মধ্যে আজ পর্যন্ত কোন যাত্রীবাহী যানবাহনও চালু হয়নি। অথচ এ জাতীয় মহাসড়কটির ওপরই দেশের উপক’লীয় ৩টি বিভাগের সংক্ষিপ্ত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বাহুলাংশে নির্ভরশীল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ