Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভারতীয় গরুর রমরমা বাণিজ্য

ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা

মোশফিকুর রহমান সৈকত, নীলফামারী থেকে | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৩ এএম

ভারতীয় গরুর নামমাত্র হাট নিলামের ছাড়পত্র এবং নামমাত্র কাস্টমসের ছাড়পত্র দেখিয়ে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়ত ভারত থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন চোরাই পথে আসছে রোগা গরু। আর এ সকল অসুস্থ-রোগা গরু ভারত থেকে নিয়ে আসছে বাংলাদেশের সক্রিয় একটি সিন্ডিকেট। এতে করে সরকার যেমনি হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব, তেমনি বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা ও ওমিক্রনের মত প্রানঘাতি সংক্রমন। সরেজমিনে দেখা যায়, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ভারতীয় বর্ডার পার হয়ে এবং লালমনিরহাটের পাটগ্রাম ও বুড়িমারী থেকে ট্রাক, ট্রাকটর, পিকআপ, নছিমন ও করিমন যোগে জলঢাকা উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় এসব গরু সরবরাহ করছে সক্রিয় সিন্ডিকেট চক্র। ফলে জলঢাকায় এই অবৈধ গরু ব্যবসায়ীর একটি সক্রিয় সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এদের মাধ্যমেই জলঢাকায় চলছে ভারতীয় অসুস্থ গরুর রমরমা বাণিজ্য। অতি সম্প্রতি এ সব চিত্র চোখে পড়ে জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ হাটে। ভারতীয় গরুর এই রমারমা ব্যবসা দৃষ্টিগোচর হয় স্থানীয় সুধী সমাজের ব্যক্তিসহ গণমাধ্যমকর্মীদের। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা এ সংক্রান্ত রিপোর্টের জন্য হাটে উপস্থিত হলে হাট ইজারাদার কর্তৃক বাকবিতন্ডায় সৃষ্টি হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে বিষয়টি নিঃসপত্তি হয়। অভিযোগ উঠেছে জনমনে যে, ভারতে করোনা এবং ওমিক্রন যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে সিমান্ত ঘেঁসা পার্শবতী দেশ বাংলাদেশের নাগরিকরা চিন্তিত্ব। আর অবৈধ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সেই দেশের রোগা গরু কয়েক হাত হয়ে চোরাই পথে প্রবেশ করছে বাংলাদেশে। এতে করে করোনা এবং ওমিক্রনের মত প্রানঘাতি রোগ বৃদ্ধি শঙ্কা রয়েছে।

সরেজমিনে গত ১ ফেব্রুয়ারি মীরগঞ্জ হাটে দেখা যায়, ১২ থেকে ১৫টি বিশাল আকৃতির ভারতীয় গরু। হাট ইজারাদারদের গোপন যোগসাজশে সক্রিয় সিন্ডিকেটটি ভারতীয় গরুগুলো হাটে তুলেছেন। হাটটিতে নেই কোন করোনার বাধ্যবাধগতা। এমনকি সিংহভাগ ক্রেতা বিক্রেতার মুখে ছিল না মাস্ক। হাট ইজারাদার কর্তৃক স্বাস্থ্যবিধির কোন পদক্ষেপ লক্ষ করা যায়নি। জনসমুদ্র এ হাটটিতে ভারতীয় গরু এড়িয়ে চলছে সচেতন নাগরিকরা। এ সময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, মীরগঞ্জের হাটের ঐতিহ্য আছে দেশের দক্ষিণ ও উত্তরোঞ্চলে। এই খ্যাতি ভাঙ্গিয়ে হাট ইজারাদারদের গোপন যোগসাজশে সক্রিয় একটি গরু ব্যবসায়ীরা অপ্রতিরোধ্য সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, ভারতীয় গরু এ হাটে আশায় আমরা শংকিত ও চিন্তিত। না জানি ভারতের মত আমাদের এলাকায় করোনার প্রার্দুভাব বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে গত কয়েক হাট থেকেই এমন অভিযোগ শুনে আসছেন উপজেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় গত হাটে নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসান নিজেই পরিদর্শনে যান মীরগঞ্জ হাট। এদিনেই গণমাধ্যমকর্মীরা রিপোর্টের জন্য যান মীরগঞ্জ হাটে। গণমাধ্যমকর্মীরা ভিডিও চিত্রসহ ও হাটে উপস্থিত লোকজনদের সাক্ষাৎকার নিতে গেলে হাট ইজারাদার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত লোকজন সাংবাদিকদের বাধা প্রদান করেন। এতে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয় উভয়পক্ষের মধ্যে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহাবুব হাসান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এবং তিনি নিজেই দেখতে পান চলতি করোনার বিধি নিষেধ নেই হাটটিতে। মাস্ক ছাড়া হাটে প্রচুর জনসমাগম। তিনি এসব দৃষ্টিগোচরে হাট ইজারাদারদেরসহ দালালদের হুশিয়ার করে বলেন, আমি দ্বিতীয় বার হাটে এসে যেন এ রকম ব্যাপার দেখতে না পাই। এমন হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, এমন অভিযোগ গত হাটবার পেয়েছি এবং সাবধান করে দিয়েছি, আজ নিজে গিয়ে পরিদর্শন করেছি, আগামী হাট থেকে এমনটা হলে আমি হাট ইজারাদারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।



 

Show all comments
  • হাসান আল মেহেদী ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১:৫২ এএম says : 1
    ভারতীয় গরু আসা বন্ধ করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • হুসাইন আহমেদ হেলাল ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১:৫২ এএম says : 0
    বাংলাদেশ এখন গুরু ছাগলে স্বয়ং সম্পূর্ণ। ভারতের গরু কোনো দরকার নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • মামুন আহাম্মাদ ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১:৫৩ এএম says : 0
    প্রশাসনের নজর দারি বাড়াতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ