Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যশোরে করোনায় আক্রান্ত ৮৭ ডাক্তার, ১৯ নার্স ও ১২ কর্মচারী

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৬:১৮ পিএম

যশোরে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে চিকিৎসক, কর্মচারী এবং সেবিকারা নতুন করে খারাপ খবরের মুখোমুখি হচ্ছে। প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গে হাসপাতালে ইয়োলো জোন, রেড জোন ও আইসিউতে ভর্তি হচ্ছে রোগী। তাদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক, কর্মচারী এবং সেবিকারাও। অন্যদিকে প্রতিদিনই করোনা বা উপসর্গ নিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর খবর। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে গত এক সপ্তাহে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ জন এবং উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১৫ জন। যশোর সিভিল সার্জন বলছেন গত সপ্তাহের করোনার মৃত্যু বিশে¬ষণ করে দেখা গেছে যারা মারা যাচ্ছেন বেশিরভাগই টিকা নেননি।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয় সূত্রমতে, তৃতীয় ঢেউয়ে যশোর জেলায় ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ ৮৭ চিকিৎসক, ১৯ নার্স এবং ১২ জন কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হন। করোনা আক্রান্তরা সকলেই নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে হাসপাতালের বহিঃবিভাগসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। চিকিৎসক, সেবিকা বা কর্মচারীরা স্বাস্থ্যবিধি মানলেও চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের রয়েছে উদাসীনতা। বারবার বলার পরেও তাদের মুখে মাক্স উঠাতে পারছেন না ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও সেবিকারা। এদিকে হাসপাতালে জায়গা সংকট থাকায় রোগীরা মেঝেতে গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে আরও কয়েকগুণ।
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে ওয়ার্ড ইনচার্জদের সাথে কথা বললে তারা জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মাক্স পরার বিষয়টি তাদের দেখভাল করার জন্য বলছেন। সেবিকারা সবসময় মাক্স পরতে বলে, কিন্তু যখন রোগী বৃদ্ধি পায় ওয়ার্ডে তখন কোন কিছুই নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না। আমরাও করোনার তীব্র ঝুঁকিতে রয়েছি।
হাসপাতালের বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা পশু চিকিৎসক মো: আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাসপাতালে স্বাস্থ্যবিধির যে পরিস্থিতি দেখছি তাতে এভাবে চলতে থাকলে আক্রান্ত বাড়বেই।
গৃহীনি রাবেয়া সুলতানাকে মাক্স না পরা অবস্থায় দেখে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেউ তো পরেনি তা আমি পরে কি করবো’। রাবেয়ার এমন কথা শুনে ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভ আক্তার হোসেন বলেন, হাসপাতালে মাক্স বাধ্যতামূলক এবং নজরদারির সাথে কিভাবে হাসপাতালে ভিড় কমানো যায় সেদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্ববাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘হাসপাতালে স্বাস্থ্যবিধি এবং মাক্স পরার বিষয়টি নজরদারি করতে সেবিকা- চিকিৎসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে আসা মানুষেরা যেমনি ঝুঁকিতে থাকবে; তেমনি চিকিৎসক- সেবিকারাও ঝুঁকিতে থাকবে। এজন্য সকলের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের অনেক চিকিৎসক ও সেবিকা করোনা আক্রান্ত। তারা নিজ বাড়িতে আছেন।
যশোর সিভিল সার্জন ডা.বিপ¬ব কান্তি বিশ্বাস বলেন, আমরা গত এক সপ্তাহের করোনার তথ্য বিশে¬ষণ করেছি। এতে দেখা গেছে যারা মারা গেছেন, তারা সকলেই বয়োবৃদ্ধ এবং টিকা গ্রহণ করেননি। আমি সকলকে আহ্বান করবো দ্রুত টিকা গ্রহণের জন্য।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ