Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাঘায় বাঁধ নির্মান এলাকায় চলছে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন

বাঘা (রাজশাহী) স্টাফ রিপোটার | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৪:৪৯ পিএম | আপডেট : ৪:৪৯ পিএম, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

রাজশাহীর চারঘাট-বাঘা এলাকায় ৭ শ’কোটি টাকা ব্যায়ে নদীর তীর প্রতিরক্ষা মূলক কাজে ব্যবহারের জন্য ব্লক তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন দরকার নদীর পাড়ে স্লোপিং করে ব্লক সেটিক করা। কিন্ত তার আগে কতিপয় প্রভাবশালী পাড় সমান করে দেয়ার নামে তিনটি ড্রেজার নামিয়ে বালি (ভরাট) উত্তলন করে ব্যবসা শুরু করছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার মীরগঞ্জ ভানুকর এলাকায় গেলে এ দৃশ্য চোখে পড়ে।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর ৬ আসনের স্থানীয় সাংসদ ও বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ শাহরিয়ার আলম নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের দু:খ দুর্দশা ও ভাঙ্গন-সহ বন্যার কথা চিন্তা করে গত বছর তাঁর নির্বাচনী এলাকা চারঘাট উপজেলার ইউসুপপুর থেকে বাঘা উপজেলার গোকুলপুর ঘাট পর্যন্ত নদীর তীর রক্ষায় ৭ শ ২৪ কোটি টাকায় ১২ কিলো মিটার বাঁধ এবং বাঘার চকরাজাপুর এলাকায়ায় নদী ড্রেজিং করার জন্য আরো প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদন করেন।

সরজেমিন বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার মীরগঞ্জ ভানুকর গ্রামের নদী এলাকায় গিয়ে দেখো গেছে, অত্র এলাকার প্রভাবশালী আব্দুর রহমান ও সোহেল নামে দুই ব্যক্তি সহ আরো কিছু লোকজন নদীতে তিনটি ভেকু নামিয়ে দেদারছে ভরাট বালি উত্তোলন করে বাইরে বিক্রী করছেন। যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন ঐ এলাকার আ’লীগ নেতা ফজলুল হক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবু-সহ স্থানীয় ভুমি অফিসের জনৈক তৌশীলদার।

নাম প্রকাশ না করার সর্তে মীরগঞ্জ এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী ও সাধারণ লোকজন অভিযোগ করে বলেন, শুনেছি নদীর তীর রক্ষার জন্য ১০ টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৭ শ’ ২৪ কোটি টাকা প্রকল্প অনুমোদ পেয়েছেন। তারা ব্লক তৈরীর পাশা-পাশি নদীর পাড় স্লোপিং করবেন এবং যতোটুকু মাটি তোলার দরকার সেটি পাড়ের উপরে এনে পাড় বাধায় করবেন। যাতে করে ভ্রমন প্রিয় মানুষ নদীর ধারে এসে ঘুরতে পারেন। কিন্ত এখানে সেটি হচ্ছে না। এখানে কতিপয় প্রভাবশালী রাত-দিন সমাজে নদী থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাক বালি উত্তোলন করে মানুষের কাছে বিক্রী করছেন। এর ফলে একদিকে পাকা রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। অন্য দিকে সঠিক নিয়মে নদীর পাড় বাধায় করা হচ্ছে না।

এ বিষয়ে খন্দকার কনকষ্টাকশান এর ম্যানেজার নুরুনবী বলেন, নদীর পাড় থেকে ২৫ মিটার স্লোপ এবং ৩৫ মিটার ডামপিং হবে। আর ডামপিং থেকে কিছু মাঠি এনে পাড় বাধায় হবে। এ কাজ গুলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করে থাকে। কিন্তু এখানে কতিপয় ব্যক্তি নিজেদের সার্থে তারা এ কাজ গুলো করছে।

বালি উত্তোলনকারী আব্দুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি ভারত থেকে আনা গরু’র ব্যবসা করতাম। এটায় সবাই জানে। বর্তমানে করিডোর বন্ধ থাকায় কিছু লোকজন নিয়ে এই বালি তোলার কাজটি করছি।

এদিকে এলাকাবাসী সহ খোদ বাঁধ রক্ষনা-বেক্ষন কমিটির সদস্যা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি মনিরুজ্জামান, বাঘা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মেজাজুল ইসলাম মেরাজর অভিযোগ করে বলেন,
এই নদীতে শুধু বালু উত্তোলন নয়, ব্লক নির্মানেও ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। আমরা বিষয় গুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি।

এ বিষয়ে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম মুর্তজার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা নদী থেকে বালি তুলার খবর পেয়ে বুধবার ঘটনা স্থালে গিয়ে ছিলাম। তাদের বারণ করে এসেছি। এর পরেও যদি তারা এ কাজ করে থাকে, তাহলে ওদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ