Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আমনের ক্ষতি পোষাতে বোরো চাষ

মোস্তফা শফিক, কয়রা (খুলনা) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৫ এএম

মাঘের সকাল, চারদিকে বইছে শীতের হীমেল হাওয়া। শীতের হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের জদুর বিলে বোরো চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন মহারাজপুর গ্রামের কৃষক আমিনুর রহমান। কনকনে ঠাণ্ডায় জমি প্রস্তুতের সময় এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় আমিনুর রহমানের।
এ সময় তিনি বলেন, গত আমন মৌসুমে চার বিঘা জমিতে ধান চাষ করে ছিলাম। কিন্তু গত ভাদ্র মাসের টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে জদুর বিলসহ কয়রা উপজেলার প্রায় সবগুলো বিল ডুবে যায়। সৃষ্টি হয় পানিবদ্ধতা। কয়েক দিনের মধ্যে অন্য বিলের পানি নেমে গেলেও পানিবদ্ধতায় ডুবে থাকে জদুর বিল। এই অবস্থায় কেটে যায় প্রায় এক মাস। পানি নেমে যাওয়ার পর কিছু ধান গাছ বেঁছে ছিল। তাতেও ঠিক মতো ধান হয়নি। এ কারণে বোরো চাষ করছেন তিনি। কৃষক আমিনুর রহমান আরও বলেন, আমনের ক্ষতি পোষাতে ও পরিবারের খোরাকি মেটাতে দুই বিঘা জমিতে এবার বোরো চাষ করছেন তিনি।
একই এলাকার কৃষক কামরুল ইসলাম বলেন, আমন মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। দুই বিঘায় ধান পেয়েছি সাত মন। এই ধান দিয়ে আমার পরিবারের তিন মাসও চলবে না। তাই বাধ্য হয়ে প্রথমবারের মতো বোরো চাষ করছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে কয়রা উপজেলায় ৪ হাজার ২৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ২শ’ ২৬ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ২ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল (উফশী) বীজ আবাদ করা হবে। এদিকে কৃষকদের বোরো ধানের আবাদ করার জন্য উৎসাহিত করতে সরকারিভাবে ১ হাজার ৫শ’ কৃষককে ২ কেজি করে হাইব্রিড বীজ ও ৫শ’ কৃষককে ৫ কেজি করে উচ্চ ফলনশীল (উফশি) বীজ দেয়া হয়েছে।
মদিনাবাদ গ্রামের কৃষক বাবর আলী হাওলাদার বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমন ধান ভালো না হওয়ায় এবার ১৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপন শুরু করেছি। আশাকরি এক সপ্তাহের মধ্যে ধান রোপন শেষ করতে পারবো।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আব্দুল হামিদ বলেন, আমার ব্লকে ২২০ থেকে ২৩০ হেক্টর জমিতে বরো চাষ হচ্ছে। এখানে উচ্চফলনশীল (উফশি) বীজ আবাদ বেশি হচ্ছে। সেচের পানি ব্যবস্থা করা গেলা মহারাজপুর ইউনিয়নে আরো অনেক জমিতে চাষ করা যেতো। কৃষকদের চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে ২ বার কৃষকের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে অন্য এলাকা থেকে নিম্নমানের বয়স্ক চারা আমদানী করার কারণে আমন ধান ভালো না হওয়ার অন্যতম কারন হতে পারে। সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বোরো ধান চাষে উৎসাহিত করতে সরকারিভাবে কৃষকদের বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ