Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সার্ভার জটিলতায় গতি নেই বুস্টার ডোজে

নেপথ্যে আইসিটি খাতের দ্বিগুন বিল চাওয়া

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রতিদিনই দেশে করোনার প্রকোপ বাড়ছে। ইতিমধ্যে করোনাভাইরাসের বেশ কয়েকটি নতুন ধরণ বেরিয়েছে। বারবার রূপান্তর ঘটছে ভাইরাসটির। আর সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্ব বুস্টার ডোজের পেছনেই ছুটছে। দীর্ঘদিন থেকে করোনা টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের পর বুস্টার ডোজ কীভাবে সংক্রমণের বিরুদ্ধে সহায়তা করে সে নিয়ে গবেষণা করা হয়। গবেষণায় বুস্টার ডোজকে সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও গত ২৮ ডিসেম্বর বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু হয়েছে। প্রথমে ৬০ বছরের বেশি বয়সী, পরে কমিয়ে ৫০ বছর করা হয়। আর সর্বশেষ গত রোববার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বুস্টার ডোজের বয়সসীমা আরও কমিয়ে ৪০ বছর নির্ধারণ করেন। পাশাপাশি সম্মুখসারির ব্যক্তিরাও বুস্টার ডোজ পাচ্ছেন। এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে পর্যাপ্ত করোনার টিকা থাকায় বুস্টার ডোজ দেয়ার ন্যূনতম বয়স কমিয়ে ৪০ বছর নির্ধারণ করেছি। এখন থেকে ৪০ বছরেও পাবে বুস্টার ডোজ। আমাদের হাতে ৯ কোটি টিকা রয়েছে।

এদিকে বুস্টার ডোজের প্রতি মানুষকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী উদ্বুদ্ধ করলেও আইটি দুর্বলাতায় প্রায় অর্ধ কোটি মানুষ বুস্টারের এসএমএস পাচ্ছেন না। এসএমএস না পাওয়ায় টিকাও নিতে পারছেন না আগ্রহীরা। বুস্টার ডোজ চালু হওয়ার পর ১ মাস অতিবাহিত হলেও গত রোববার পর্যন্ত মাত্র ১৫ লাখ ২১ হাজারের কিছু বেশি টিকা তাই দেশে ৯ কোটি টিকা থাকলেও তার সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। এ সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, বর্তমানে দেশে পর্যাপ্ত টিকা আছে। তাই বুস্টার ডোজ এবং টিকা কার্যক্রমে গতি আরও বাড়ানো দরকার।
অবশ্য বুস্টারের বিড়ম্বনার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম ইনকিলাবকে বলেন, এসএমএস না পাওয়ার অভিযোগ আমরা প্রতিদিনই পাচ্ছি। হাসপাতালগুলোতে দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার ছয় মাস পার হয়েছে এমন ব্যক্তিদের এসএমএস বাড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যদিও সার্ভারের কিছুটা সমস্যা থাকায় কার্যক্রম কিছুটা ধীর গতিতে আছে এটা সত্য। তবে আশাকরি খুব শিগগিরই ঠিক হয়ে যাবে।

সূত্র মতে, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর করোনার টিকার নিয়মিত কেন্দ্রগুলোতে বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করে সরকার। প্রথমে ষাটোর্ধ্ব নাগরিক ও সম্মুখসারির কর্মীদের বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু হয়। দ্বিতীয় ডোজ পাওয়ার ছয় মাস পরই শুধু বুস্টার ডোজ নেয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যে দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, এমন ব্যক্তিরাই বুস্টার ডোজ হিসেবে তৃতীয় ডোজ পাচ্ছেন। পরবর্তীতে ৫০ বছর বয়সীদেরও বুস্টার ডোজ দেয়া হয়। এবার বয়সের সেই সীমা আরও কমিয়ে ৪০ বছর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, এমন ব্যক্তিরাই বুস্টার ডোজ হিসেবে তৃতীয় ডোজ পাচ্ছেন। এ জন্য নতুন করে নিবন্ধনের দরকার হচ্ছে না।

আবুল কাশেম (৬৫)। রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ক্যান্সার রিসার্চ এ্যান্ড হাসপাতালে রেজিস্ট্রেশন করে গত বছরের ৬ মার্চ প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন। ১৬ মে দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। অনেক আগেই ৬ মাস অতিবাহিত হয়েছে। এসএমএস পাওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে তদবিরও করেছেন। কিন্তু এখনো বুস্টারের এসএমএস পাননি। শুধু আবুল কাশেমই নয়; এ রকম লাখ লাখ মানুষ বুস্টারের এসএমএসের অপেক্ষায় আছেন। এ বিষয়ে ক্যান্সার রিসার্চ এ্যান্ড হাসপাতালে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, সার্ভার জটিলতায় আমরা ধীরে ধীরে এসএমএস দিচ্ছি। তবে অন্যান্য হাসপাতালের চেয়ে এখানকার অবস্থা ভালো বলে উল্লেখ করা হয়। এদিকে অবশ্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, টিকার নিবন্ধন, এসএমএসসহ সবকিছুই আইটি খাতের সহায়তায় স্বাস্থ্য অধিদফতর করে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি আইটি খাতের লোকজন এ কার্যক্রমে গত বছরের দুই গুন বিল চাচ্ছে। এ নিয়ে জটিলতার পাশাপাশি বুস্টার ডোজ নিয়ে সার্ভারে কিছু সমস্যা দেখা দেয়ায় বুস্টার কার্যক্রমে গতি পাচ্ছে না। দ্রুত আইটি খাতের সঙ্গে এ সমস্যার সমাধান না হলে টিকা কার্যক্রম আরও মন্থর হতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে বুস্টার ডোজের এসএমএস পাওয়া নিয়েও অনেকে পড়ছেন বিড়ম্বনায়। টিকার এসএমএস দেয়া হয় টিকা গ্রহণের আগের দিন মধ্য রাতে। এসএমএস পাওয়ার আগে অনেকেই ঘুমিয়ে পড়েন বলেও অভিযোগ রয়েছে। আবার অনেক রাতে এসএমএস আসায় দেখতে না পেয়ে পরের দিন যখন দেখেন আর বুস্টার ডোজ গ্রহণ করা হয়ে উঠে না। তাই অনেকেই বুস্টার ডোজ গ্রহণ করতে পারছেন না।##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ