পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, নির্বাচন কমিশন আইন নতুন মোড়কে পুরনো জিনিস। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল ২০২২ বিষয়ে আজ শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি এমন বক্তব্য দেন ।
তিনি বলেন, আমরা (জাতীয় পার্টি পক্ষ থেকে) ২০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মহামান্য প্রেসিডেন্টের সাথে নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে আলোচনা করেছি। সেখানে আমরা নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বলেছি এবং আমাদের বক্তব্যের লিখিত কপি মহামান্য প্রেসিডেন্ট এবং গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে প্রদান করেছি। সংবিধানের সপ্তম ভাগে নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে বলা আছে। এখানে অনুচ্ছেদ ১১৮(১)- উল্লেখ আছে “প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনারকে লইয়া বাংলাদেশে একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোন আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দান করিবেন।” তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাব করেছিলাম আগামীতে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে তার জন্য উপরোক্ত সংবিধানের বিধান অনুসারে একটি আইন করা দরকার। আইনের উদ্দেশ্য হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে কমিশন গঠন ও সে অনুযায়ী যোগ্য ও মোটামুটি সবার কাছে গ্রহনযোগ্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের বাছাই করার মাপকাঠি ও পন্থা সুনির্দিষ্ট করা। আমরা যোগ্যতার মাপকাঠী বলতে দায়িত্ব পালনের দক্ষতাকে বুঝিয়েছি। মোটামুটি সবার কাছে গ্রহনযোগ্য বলতে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে নিরপেক্ষ ব্যক্তি নির্বাচনের কথা বুঝিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, আমরা আরও উল্লেখ করেছিলাম, আমাদের সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে “নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হইবে।” কিন্তু বাস্তবে এ বিষয়টি খুব একটা কার্যকর হতে দেখা যায় না। ফলে কিভাবে এটি প্রযোজ্য হবে বা কার্যকর করা যাবে তার বিস্তারিত বর্ননা থাকা আবশ্যক। আমাদের প্রস্তাব ছিল সে কারনে এ বিষয়েও একটি আইন থাকা প্রয়োজন। যে আইনে, নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচনী কাজে কোন কর্মচারী নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনাবলী পালন না করিলে নির্বাচন কমিশন নিজেই যেন প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে এইরকম একটি আইন করা দরকার। আমরা যেটা বলতে চেয়েছিলাম তা হল যথপযুক্ত নির্বাচন কমিশন গঠন করলেই তা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ/গ্রহনযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে না; যতক্ষন পর্যন্ত না সে নির্বাচন কমিশনকে কর্তব্য সম্পাদনের সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব ও সহযোগীতা দেয়া হয়। বর্তমান যে আইনটি পাশ হয়েছে তাতে শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশন গঠন বিষটি বিবেচনা করা হয়েছে, তাদের যথাযথ ক্ষমতার বিষয়টি বিদ্যমান আইনের আওতায় আনা হয় নি। আমরা মনে করি বিষয়টিও বিদ্যমান আইন বা আলাদা একটি আইন হিসাবে আনা দরকার ছিল। সম্প্রতি প্রনীত আইনে একটি সার্চ কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে। সে বিষয়ে সুনিদিষ্ট রুপরেখা দেয়া হয়েছে। কিন্তু সার্চ কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়নি।
তিনি বলেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে মনোনীত ব্যাক্তিদের নাম ও পরিচয় সম্বলিত তালিকা প্রেসিডেন্টের কাছে জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে বর্তমান ব্যবস্থায় প্রকাশ করার কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তাছাড়া মাত্র ১৫ (পনের) কর্মদিবসের মধ্যে নাম প্রস্তাব করার বিধানটি বেশি তাড়াহুড়ো বলে মনে হয়; যা জনমনে সংশয় সৃষ্টি করতে পারে। ফলে সার্চ কমিটির কাজের স্বচ্ছতা থাকছে না। আমরা মনে করি মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়ার পূর্বে সার্চ কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত নাম সমূহ জনগনের সামনে প্রকাশ করার প্রয়োজন ও জনগনের মতামত প্রদানের ব্যবস্থা রাখা উচিত। জনগনের মতামত বিবেচনায় এনে তালিকা সংশোধনের সুযোগ রাখার ব্যবস্থা রাখলে বাছাই এর সার্বিক বিষয়টি স্বচ্ছতা পেত। সার্চ কমিটি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত তালিকাটি প্রকাশ করার বিধান না থাকার ফলে শেষ পর্যন্ত সেই তালিকার সুপারিশ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে কি না সেই বিষয়ে সংশয় থাকে। কারন সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদের ৩ দফার কারনে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মতামতের প্রধান্য দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী তার দলীয় বিবেচনায় যেকোন ব্যাক্তি ও ব্যাক্তি বর্গকে মহামান্য রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে মনোনীত করার সুযোগ থাকবে।
তিনি বলেন, বর্তমান আইনটিতে যাতে উপরোক্ত সুযোগ না থাকে সেজন্য সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৮ এর ৩ ধারার পরিবর্তন করে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দানের বিষয়টিও সরাসরি প্রেসিডেন্টের হাতে ন্যাস্ত করা প্রয়োজন ছিল বলে মনে করি। এ আইন প্রনয়ন করার ফলে নির্বাচন কমিশন গঠন ও তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব কার্যকর ভাবে পালনের ক্ষমতায়নে আগের তুলনায় কোন উন্নতি হবে বলে মনে হয় না। আগের মতই উপরোক্ত বিষয় সমূহ পরোক্ষভাবে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নিয়ন্ত্রনে থাকবে। অর্থাৎ নতুন করা আইনটি পুরাতন পদ্ধতিকে একটি আইনগত কাঠামোতে এনে আইন সম্মত করা হচ্ছে। এক কথায় এই আইনটি করার পরেও অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে পূর্বের ন্যায় সংশয় থেকেই যাচ্ছে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি সব সময় চায় অবাধ, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন। কারন, নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রবেশ দ্বার। নির্বাচন সঠিক হলেই দেশে গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ সৃষ্টি হবে। জনগনের কাছে সরকারের জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে। সুশাসনের পরিবেশের উন্নয়ন হবে। সাধারণ মানুষ তার পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারলে গণতন্ত্রের প্রকৃত স্বাদ পাবার পথচলা শুরু হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের এমপি বলেন, সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদের ৩ ধারার কারনে রাষ্ট্রপতি মাত্র দুইটি নিয়োগ বাদে সকল কাজেই পরামর্শ করতে হয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে। তাই নির্বাচন কমিশন গঠনে নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, বিরোধী দলের কাজ হচ্ছে সরকারের ভুলগুলো ধরিয়ে দিয়ে সরকারকে পরামর্শ দেয়া। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী বিরোধী দলের এর বাইরে কিছুই করার নেই। বর্তমান সংবিধান এক ব্যক্তিকে ক্ষমতা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যা বলবেন তাই হবে, যেটুকু বলবেন তার বাইরে সংসদে কিছুই পাশ হবে না। তাই আমরা সরকারের সমালোচনা ও গঠনমূলক পরামর্শ দিয়ে বিরাধী দলের দায়িত্ব পালন করছি। এছাড়া সংবিধানের কিছু ধারা একটির সাথে অন্যটি সাংঘর্ষিক। বিরোধী দল হিসেবে আমরা দেশ ও দেশের মানুষের কল্যানে আমাদের দাবি তুলে ধরছি, মানা না মানা সরকারের ব্যাপার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, এসএম আব্দুল মান্নান, ফখরুল ইমাম এমপি, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এটিইউ তাজ রহমান, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, নাজমা আখতার এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুস সাত্তার মিয়া, উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, নুরুল ইসলাম তালুকদার এমপি, হেনা খান পন্নি, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, এইচএম শাহরিয়ার আসিফ, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ফখরুল আহসান শাহজাদা, মো. আমির হোসেন ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন, মো. হুমায়ুন খান, আনোয়ার হোসেন তোতা, মাখন সরকার, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সুলতান মাহমুদ, এমএ রাজ্জাক খান, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, মঞ্জুরুল হক, গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য তিতাস মোস্তফা, নুরুল হক নুরু, জাকির হোসেন মৃধা, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, ডা. সেলিমা খান, আক্তার দেওয়ান, এসএম সুবহান, কেন্দ্রীয় নেতা মনিরুজ্জামান টিটু, জেসমিন নূর প্রিয়াংকা, কাজী মামুন, তাসলিমা আকবর রুনা, মিনি খান, মন্টি চৌধুরী, সোলায়মান সামি, শারমিন, হাসনা হেনা, মেহেদী হাসান শিপন, রেজাউল করিম রেজা, আব্দুস সালাম লিটন, এসএম হাশেম প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।