Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রশ্ন ঃ ওয়াজ-মাহফিলের বক্তাদের প্রতি ইমাম গাজালী রহ. এর দিক-নির্দেশনা কি?

| প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৩ এএম

(খ) ওয়াযের ক্ষেত্রে তোমার আশা-আকাক্সক্ষা যেন এমন না হয় যে, তোমার মজলিসে মানুষের ঢল নামবে। সবাই তোমার খুব প্রশংসা করতে থাকবে। সবাই খুব প্রভাবিত হয়ে মাতম শুরু করবে, গায়ের পোষাক ছিঁড়ে ফেলবে। মজলিসজুড়ে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হবে। সবাই বলাবলি করতে থাকবে এটাই না হলো একখান ওয়ায। এমন আশা-আকক্সক্ষা দুনিয়ার মোহ ও কলবের গাফলত থেকে সৃষ্টি হয়। সুতরাং তোমর কামনা যেন এমন না হয়। বরং তোমর মনের ইচ্ছা থাকবে- আমি আল্লাহর বান্দাদেরকে দুনিয়া থেকে আখেরাতের দিকে, পাপাচার থেকে আনুগত্যের দিকে, লোভ-লালসা থেকে নির্মোহতার দিকে, ধোঁকা-প্রতারণা থেকে আল্লাহ-ভীরুতার পথে এবং কৃপণতা থেকে দানশীলতার দিকে আহ্বান করে যাবো। শ্রোতাদের কাছে আখেরাতকে দুনিয়ার চেয়ে প্রিয় করে তোলার চেষ্টা করবে। আরও চেষ্টা করবে দ্বীন ও শরিয়তের ‘ইলম’ এবং যুহদ ও ইবাদতের পদ্ধতি শিক্ষা দিতে। কারণ মানুষে স্বভাব শরীয়ত নির্দেশিত পথ থেকে সরে যাওয়া, আল্লাহর অপছন্দনীয় কাজে সময় নষ্ট করা এবং মন্দ চরিত্র গ্রহণ করার প্রবণতাই বেশি। সুতরাং তদের কলবে আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে। মৃত্যুর পর যে ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখিন হতে হবে সে বিষয়ে সতর্ক করতে থাকবে। হতে পারে কারো মনোজগতে পরিবর্তন আসবে, যা তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিবে। তারা তখন আল্লাহর নাফরমানি থেকে ফিরে এসে তাঁর আনুগত্যে নিজেকে আত্মনিয়োগ করবে। এটাই হলো ওয়ায-নসিহতের কার্যকরী ও স্বীকৃদ পদ্ধতি। এর বাইরে তুমি যে পদ্ধতিই গ্রহণ কর না কেন তা তোমার জন্য এবং শ্রোতাদের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। বরং বলা যায় এধরণের প্রবণতা এক প্রকারের মাতলামি এবং শয়তানের ফাঁদ। যার মাধ্যমে শয়তান মানুষকে সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করে এবং তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়। সুতরাং এপ্রকারের বক্তাদের থেকে মানুষের বেঁচে থাকা উচিত। কারণ এমন বক্তা শ্রোতাদেরকে দ্বীনি কোনো ফায়দা দিতে পারে না। যদিও কিছু ফায়দা দেয় তাতে শয়তান বিরক্ত না হয়ে খুশিই হয়। তাই যাদের শক্তি ও ক্ষমতা আছে তাদের কর্তব্য হলো এই ধরণের বক্তাদেরকে মিম্বারে উঠার সুযোগ না দেয়া। এটিও ‘আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকারের অন্তর্ভুক্ত।’
উত্তর দিচ্ছেন : মাওলানা, মুফতি জিয়াউল হক ভাইস প্রিন্সিপাল, মদিনা মাদরাসা শ্রীরামপুর, রায়পুরা, নরসিংদী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ