Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সমস্যার উৎস সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত ভিসি

সমাবেশে আনু মুহাম্মদ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) চলমান অস্থিরতার মূল উৎস ক্ষমতাসীন সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত ভিসি বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর প্রফেসর আনু মুহাম্মদ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শাবিপ্রবির ভিসি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিনকে অপসারণ, হামলাকারী পুলিশ-ছাত্রলীগের বিচার এবং শিক্ষার্থীদের উপর দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংহতি সমাবেশে এমন কথা বলেন আনু।

প্রফেসর আনু মুহাম্মদ বলেন, বর্তমানে শাবিপ্রবিতে যে সমস্যা সেই সমস্যার উৎস আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ে না, এ সমস্যার উৎস হলো সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত ভিসি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি জ্ঞান চর্চার দিকে যায়, সৃজনশীলতার দিকে যায়, জ্ঞান চর্চা যদি ক্ষমতাকে প্রশ্ন করতে চায়, দুর্নীতিকে প্রশ্ন করতে চায় তাহলে সেই জ্ঞান চর্চা করতে দেয়া যাবে না। আর এজন্য একটা ভয়ের জায়গা তৈরি করতে হবে। আর সেই কাজে দুটি শক্তি থাকবে। একটা হলো ভিসির নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আরেকটি হচ্ছে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন। এই দুই শক্তি যাতে অবাধে কাজ করতে পারে তার মূল পৃষ্ঠপোষকতা দেয় সরকার। সুতারং সরকার চায় এমন উপাচার্য যে সরকারের কথায় উঠবে বসবে।

তিনি বলেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে আছে তাদের সামনে মুলার মত যেটা ঝুলছে সেটা হচ্ছে বড় বড় কনস্ট্রাকশন। সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় বড় কনস্ট্রাকশন দেয়া আছে, কিন্তু সেগুলোতে কোন স্বচ্ছতা নেই। ফাঁকা জায়গাগুলো পূরণ হয়ে যাচ্ছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় থাকছে না, ভবনে আক্রান্ত এক একটা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে।

১৯৮৩ সালে তৎকালিন ঢাবি ভিসির স্বেচ্ছায় পদত্যাগের ইতিহাস টেনে আনু বলেন, ভিসির দ্বায়িত্ব হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সৃজনশীল পরিবেশ তৈরি করা। ১৯৮৩ সালে সামরিক বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর আক্রমণ করে অনেক শিক্ষার্থীকে জখম, আহত করেছিলেন। সেই সময়ে যে ভিসি ছিলেন তিনি এর প্রতিবাদে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছিলেন। এটাই তো একজন ভিসির দ্বায়িত্ব হওয়ার কথা। কিন্তু এখন আমরা দেখছি ভিসি নিজেই পুলিশ ডেকে এনে সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে, লাঠি দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে।
এসময় তিনি শাবিপ্রবি ভিসির উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার সম্মানবোধ যদি থাকে নিজের মধ্যে তাহলে অন্যকে সম্মান করতে শিখুন এবং পদত্যাগ করলে আপনার সম্মানটা থাকবে। আপনি যত ক্ষমতা টিকিয়ে রাখবেন, যতক্ষণ ঐ চেয়ারে বসে থাকবেন তত আপনার সম্মানহানি ঘটবে।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে যে খাবার দেওয়া হয় তাতে যে ক্যালরি থাকে তা দারিদ্রসীমার নিচে উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, সাম্প্রতি আমরা একটা গবেষণায় দেখেছি, আমাদের ছাত্ররা হলে যে খাবার খায় তার কিলোক্যালোরি হচ্ছে ১৮’শ কিলোক্যালোরির কম। যা দারিদ্রসীমায় যে ধরনের পুষ্টিমান থাকে তার চেয়েও কম। তিনি বলেন, চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে যদি একজন শিক্ষার্থী দিনযাপন করে তাহলে কীভাবে তার মেধা বিকশিত হবে? আর পড়াশোনায় কীভাবে মনোযোগ আসবে? আর কীভাবে সে ভবিষ্যতের দিক্ষা গ্রহণ করবে?

বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবিরের সভাপতিত্বে এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদের সঞ্চালনায় সংহতি সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. হারুনুর রশিদ, লেখক ও সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুনয়ন চাকমা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন প্রিন্স, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি অনিক রায়, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সহ-সভাপতি সায়েদুল হক নিশান প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শাবি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ