Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রাফিক পুলিশকে বিদেশি নাগরিকের টাকা ছুড়ে মারার ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড়

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:৪৪ পিএম

রাজধানীতে ট্রাফিক পুলিশকে বিদেশি নাগরিকের টাকা ছুড়ে মারার ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে তোলপাড়। ইতোমধ্যেই এই ঘটনার ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনার ছবি, ভিডিও ও সংবাদ শেয়ার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছেন নেটিজেনরা।

জানা গেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের অধীনে রাওয়া ক্লাবের সামনে ট্রাফিক পুলিশকে চীনের এক নাগরিক টাকা ছুড়ে মারেন। এ সময় ওই চীনা নাগরিক কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ইউ ওয়ান্ট মানি, আই গিভ ইউ দিস (তুমি টাকা চাচ্ছ, আমি তোমাকে টাকা দিচ্ছি)’। এসময় তাকে কিছু অশ্লীল শব্দ বলতে শোনা গেছে।

এই ঘটনার ভিডিও মঙ্গলবার থেকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল ভিডিও প্রকৃত ঘটনা জানতে ইতোমধ্যে খোঁজ খবর নিচ্ছে ডিএমপির তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ।

পুলিশ বলছে, মঙ্গলবার ওই চীনা নাগরিকের গাড়ি রাওয়া ক্লাবের সামনে কর্তব্যরত এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য আটকিয়ে কাগজ চেক করছিলেন। এতে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে দেরি হতে থাকায় কোনো একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করা ওই চীনা নাগরিক ট্রাফিক পুলিশের দিকে টাকা ছুঁড়ে মারেন। সে হয়তো ভেবেছে টাকার জন্য তার গাড়ি থামিয়েছিল পুলিশ।

এদিকে এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষ পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জাহিদুর রহমান ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘পুলিশের সাথে ওই ব্যক্তির কি কথা হয়েছে, তা আমরা জানি না। তবে ভিডিওতে যতটুকু দেখা যাচ্ছে, তা পুলিশ ও দেশের জন্য খুবই লজ্জার। আমরা চাই এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও পুলিশ অপরাধী হলে তার কঠোর শাস্তি আর ওই ব্যক্তি অপরাধী হলে তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’

আরিফুর রহমান মিতুল লিখেছেন, ‘এদেশের আর রইলো কি! ট্রাফিক পুলিশকে টাকা ছুড়ে মারলেন ক্ষুব্ধ বিদেশি!’

মাহবুব রাব্বানী মিলন লিখেছেন, ‘আমাদের নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে বহির্বিশ্বের কাছে ও আমরা চোর ও বাটপার হিসাবে পরিণত হয়েছি।’

আফসোস করে মনিরুজ্জামান লিখেছেন, ‘এটা লজ্জার। খুবই লজ্জার! শেখ মুজিবের বাংলাদেশে এসব হতে পারে না, হওয়া উচিত না। উনি বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই কষ্ট পেতেন, আফসোস করতেন।’

অতীতের এই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মহি উদ্দিন লিখেছেন, ‘ট্রাফিক পুলিশের অত্যাচারে অতিষ্ঠ বাইক চালক যখন ক্ষোভে নিজের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিলেন, তখন পুলিশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার অভিযোগ সেই পুড়িয়ে দেয়া বাইকের মালিককে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়েছিলো। কয়েক ঘন্টা পর থানা থেকে বের হয়ে সেই বাইক চালক বলেছিলেন, কারো প্রতি ক্ষোভ নয়, মনের খুশিতে তিনি বাইকে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছেন! তাহলে এই যে বিদেশি, ট্রাফিক পুলিশকে অশ্লীল গালি দিয়ে টাকা ছুঁড়ে মারলো, এখানে কেনো ভাবমূর্তি শুধুই মূর্তির মতো নিশ্চুপ? ওই বিদেশিকে ধরে থানায় আনলেন না কেনো? কেনো সেই বিদেশি থানা থেকে বেরিয়ে বললো না, মনের খুশিতে রাস্তায় টাকা ছুড়েছি!’

আক্ষেপ করে মুহাম্মাদ দানিয়াল লিখেছেন, ‘এর চেয়ে লজ্জার আর কি আছে? বিদেশীরাতো ওদের দেশে বাকস্বাধীনতা পায়। কথা বলার অধিকার পায়। প্রতিবাদ করে অভ্যাস। আমাদের তো নিরবে শেষ হয়ে যাওয়া অভ্যাস। প্রতিবাদ করার সাহস বহুত আগেই হারিয়ে গেছে!’

ওয়াহেদুল ইসলামের অনুরোধ, ‘যারা ইতোমধ্যে উন্নয়নের জোয়ারে দেশকে ডুবিয়েছেন, তাদের প্রতি অনুরোধ এই দিকটায় একটু উন্নতি করুন দয়া করে। কারণ এখানে দেশের সম্মান জড়িত।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ