পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1720476286](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। স্বেচ্ছায় পদত্যাগের জন্য আগের দিনের বেধে দেয়া সময়ের পর গতকাল বুধবার দুপুর থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন তারা। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ভিসির যদি দোষ থাকে তবে সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে তাই মেনে নেয়ার কথা জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভিসি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে সিন্ডিকেট নির্বাচন স্থগিত করেছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে আন্দোলনে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারী শিক্ষকদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান ও মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষকদের একাংশ।
জানা যায়, ভিসির স্বেচ্ছায় পদত্যাগের জন্য শিক্ষার্থীদের গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেওয়া আল্টিমেটাম শেষে বিকাল তিনটায় ভিসির বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রতিনিধি দল ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলসহ স্থানীয় নেতাকর্মীর সাক্ষাতের পর মঙ্গলবার রাতে ভিসির স্বেচ্ছায় পদত্যাগের জন্য সময় বেঁধে দেন। অনশনের ঘোষণা দেওয়ার রাতে ভিসির বাসভবনের সামনে রাস্তার পাশে এক হাতে টালার থলি অপর তাতে বন্দুক নেওয়া এক কুশপুত্তলিকা স্থাপন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা তিনটায় অনশনে যাওয়ার পূর্বে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা আমরণ অনশনে যাব বলে ভিসিকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ নেওয়ার জন্য সময় দিয়ে দিয়েছিলাম। ভিসি তা করেননি। সম্ভবত আমাদের কারো মৃত্যু হলে ভিসি ও তাঁর প্রশাসন ব্যবস্থা নিবেন। এর জন্য আমাদের মরা উচিত। এদিকে ২৪ জন শিক্ষার্থী অনশনে বসার পর গত রোববার পুলিশি হামলায় আহত হয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজল কুন্ডু তাদের আন্দোলনে যোগ দেন। সজল কুন্ডু সেদিনের ভয়াবহ পুলিশি হামলার বর্ণনা দিয়ে জানান, তার শরীরে এখনো সে ৬৩টি স্প্রিন্ট্যার রয়েছে। সেদিন পুলিশি হামলায় তার দুইজন বন্ধু আহত হয়ে ড. এম এ ওয়াজেদ আলী ভবনের পাশে পড়ে থাকতে দেখে তাদেরকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই হামলার শিকার হয়ে রক্তাক্ত হন তিনি। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আবারো পুলিশি হামলার শিকার হন তিনি ও তার বন্ধুরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের ঘোষণা দিলেও তার চিকিৎসার ভার বহন করেনি বলে জানান তিনি। এদিকে গতকাল সকালে গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের কোনো দোষ থাকলে সরকারি যেকোন সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন বলে জানিয়ে ভিসি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিরা গালাগাল সহ্য করে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করছেন। আমাদের শিক্ষকরা এর আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে তারা তাদের ফিরিয়ে দেন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার যে ঘটনা ঘটেছে, সেটিতে আমি খুবই মর্মাহত। যখন তাদের দাবি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চলে আসবে, তখন কে বা কারা পুলিশের ওপর এ হামলা করে তা খতিয়ে দেখা হবে।
অপরদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারী শিক্ষকদের কুরুচিপূর্ণ স্লোগান ও মন্তব্যের বিরুদ্ধে বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শিক্ষকদের একাংশের মানববন্ধনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের লায়লা আশরাফুন নিজেদের বুদ্ধিজীবী শ্রেণিতে নিজেদের বিলং করেন বলে উল্লেখ করে বলেন, আমরা কোনো চাষাভুষা নই যে তারা আমাদের যা খুশি তাই বলবে। তাঁর দেওয়া এমন বক্তব্যের পর আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বাইরে অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেন, ‘এ দেশের সরকারি আমলাদের যে বেতন দেওয়া হয় তার অর্ধেকর বেশি আয় আসে কৃষিজীবি মানুষদের হাত ধরে,তাই কোন চাষাকে এইভাবে অবমাননাকর কথা আমার বাবার ওপর বর্তায়।’ ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডকেট নির্বাচনও স্থগিত করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে গত বৃহস্পতিবার রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। রোববার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আইসিটি ভবনে ভিসিকে অবরুদ্ধ করেন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। সোমবার বিকালে ক্যাম্পাসে পুলিশ দেখে ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন? প্রশাসন জবাব চাইসহ’ নানা ধরনের স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। এর পরপরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তাতে শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশত আহত হন। এর জেরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিলেও তারা নির্দেশ উপেক্ষা করে হলে অবস্থান করেন। উল্টো তারা ভিসির পদত্যাগ দাবি নতুন করে আন্দোলন শুরু করেন। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করে। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ থেকে ৩০০ শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছে। গুলি বর্ষণ ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিটের অভিযোগ আনা হয় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।