Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আল্টিমেটামের পর আমরণ অনশনে শাবির আন্দোলনকারীরা

শাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:১৩ পিএম

উপাচার্যের স্বেচ্ছায় পদত্যাগের জন্য আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গতকাল বুধবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত দেওয়া আল্টিমেটাম শেষে বিকাল তিনটায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রতিনিধি দল ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলসহ স্থানীয় নেতাকর্মীর সাক্ষাতের পর মঙ্গলবার রাতে উপাচার্যের স্বেচ্ছায় পদত্যাগের জন্য সময় বেঁধে দেন।

অনশনের ঘোষণা দেওয়ার রাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে রাস্তার পাশে এক হাতে টালার থলি অপর তাতে বন্দুক নেওয়া এক কুশপুত্তলিকা স্থাপন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা তিনটায় অনশনে যাওয়ার পূর্বে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা আমরণ অনশনে যাব বলে ভিসিকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ নেওয়ার জন্য আজ ( বুধবার) দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় দিয়ে দিয়েছিলাম। ভিসি তা করে নি। সম্ভবত আমাদের কারো মৃত্যু হলে ভিসি ও তাঁর প্রশাসন ব্যবস্থা নিবেন। এর জন্য আমাদের মরা উচিত। এদিকে ২৪ জন শিক্ষার্থী অনশনে বসার পর গত রোববার পুলিশি হামলায় আহত হয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজল কুন্ডু তাদের আন্দোলনে যোগ দেন। সজল কুন্ডু সেদিনের ভয়াবহ পুলিশি হামলার বর্ণনা দিয়ে জানান, তার শরীরে এখনো সে ৬৩টি স্প্রিন্ট্যার রয়েছে। সেদিন পুলিশি হামলায় তার দুইজন বন্ধু আহত হয়ে ড. এম এ ওয়াজেদ আলী ভবনের পাশে পড়ে থাকতে দেখে তাদেরকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই হামলার শিকার হয়ে রক্তাক্ত হন তিনি। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আবারো পুলিশি হামলার শিকার হন তিনি ও তার বন্ধুরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের ঘোষণা দিলেও তার চিকিৎসার ভার বহন করেনি বলে জানান তিনি। এদিকে গতকাল সকালে গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের কোনো দোষ থাকলে সরকারি যেকোন সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন বলে জানিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিরা গালাগাল সহ্য করে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করছেন। আমাদের শিক্ষকরা এর আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে তারা তাদের ফিরিয়ে দেন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার যে ঘটনা ঘটেছে, সেটিতে আমি খুবই মর্মাহত। যখন তাদের দাবি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চলে আসবে, তখন কে বা কারা পুলিশের ওপর এ হামলা করে তা খতিয়ে দেখা হবে।

অপরদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারী শিক্ষকদের কুরুচিপূর্ণ স্লোগান ও মন্তব্যের বিরুদ্ধে বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শিক্ষকদের একাংশের মানববন্ধনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের লায়লা আশরাফুন নিজেদের বুদ্ধিজীবী শ্রেণিতে নিজেদের বিলং করেন বলে উল্লেখ করে বলেন, আমরা কোনো চাষাভুষা নই যে তারা আমাদের যা খুশি তাই বলবে। তাঁর দেওয়া এমন বক্তব্যের পর আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বাইরে অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেন, 'এ দেশের সরকারি আমলাদের যে বেতন দেওয়া হয় তার অর্ধেকর বেশি আয় আসে কৃষিজীবি মানুষদের হাত ধরে,তাই কোন চাষাকে এইভাবে অবমাননাকর কথা আমার বাবার ওপর বর্তায়।' উপাচার্য পতনের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিতিশীলতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডকেট নির্বাচনও স্থগিত করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ