পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার ঢেউ আবারো আছড়ে পড়েছে বিচার বিভাগে। গত দুই সপ্তাহে অন্তত: ১৮ বিচারপতি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত হয়ে বাসায় কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলসহ বেশ কয়েকজন। দেশের বিভিন্ন বিচারিক আদালতে কর্মরত ২২ জন বিচারক ঢাকায় কর্মশালায় যোগ দিতে এসে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তারা এখন বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এ কারণে বিচারকদের ২ মাসের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট বার সূত্র জানায়, বারের শতাধিক প্র্যাক্টিসিং আইনজীবী নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন করে করোনা সংক্রমণের ক্রমবিস্তারে আজ থেকে হাইকোর্টের বিচারিক কার্যক্রম আবারো ভার্চুয়ালি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। ইতোমধ্যেই আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট ভার্চুয়ালি বিচার কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে।
বিচারাঙ্গন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, আপিল বিভাগে বিচারপতি নিযুক্ত হলেও করোনা আক্রান্ত হওয়ায় গত ৯ জানুয়ারি শপথ নিতে পারেননি বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান। যুক্তরাষ্ট্রে সফরে গিয়ে ৭ জানুয়ারি করোনা আক্রান্ত হন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনূর ইসলাম। গত ১২ জানুয়ারি করোনা আক্রান্ত হন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম। করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩১ ডিসেম্বর থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বিচারপতি আ ন ম বশিরউল্লাহ এবং বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী। হাইকোর্টের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, এ দুই বিচারপতি এখন সুস্থতার দিকে। হাইকোর্ট বিভাগের অন্তত ১৩ বিচারপতি নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে ১৬ জানুয়ারি করোনা আক্রান্ত হন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিনউদ্দিন। ১৭ জানুয়ারি করোনা আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানান অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জোনরেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ। অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের বেশ কয়েকজন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার রূহুল কুদ্দুস কাজল জানান, বারের সদস্য অন্তত অর্ধশত প্র্যাক্টিসিং আইনজীবী করোনা আক্রান্ত হয়ে বাসায় এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ প্রেক্ষাপটে গতকাল মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী জানান, দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবারো ভার্চুয়ালি বিচারকাজ পরিচালনা করতে হবে। সকালে আপিল বিভাগে বিচারকাজ শুরুতেই প্রধান বিচারপতি একথা জানান।
প্রধান বিচারপতি বলেন, চারিদিকে যেভাবে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে ভার্চুয়ালে যেতে হবে। হাইকোর্ট বিভাগের ১৩ বিচারপতি করোনা আক্রান্ত। সুপ্রিম কোর্টের অনেক স্টাফও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে শারীরিক উপস্থিতিতে কোর্টের কার্যক্রম চালানো কঠিন হয়ে যাবে। এদিকে বিচারিক আদালতের অনেক বিচারকও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইন কর্মকর্তাদের মধ্যেও বেশ কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত।
প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্যের পরই সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর পৃথক দু’টি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এতে বলা হয়, সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বুধবার (১৯ জানুয়ারি) থেকে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চুয়ালি উপস্থিতির মাধ্যমে আপিল বিভাগ ও সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সকল বেঞ্চের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি থেকে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট ভার্চুয়ালি কার্যক্রম শুরু করে।
প্রসঙ্গত: ২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশ করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর বিচারাঙ্গনের মানুষও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতিসহ বেশ ক’জন সিনিয়র আইনজীবী, অনেক সাধারণ আইনজীব, বিচারক এবং বিচারপতি করোনা আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। এ বাস্তবতায় দেশের বিচারব্যবস্থা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। দেশের আইনজীবীরা অনেকটা কর্মহীন হয়ে পড়েন। পরে বিশেষ ব্যবস্থায় বিচার প্রক্রিয়া পুনরায় চালুর দাবি ওঠে আইনজীবী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে। এ প্রেক্ষিতে বিধি সংশোধনের মাধ্যমে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০’ অনুমোদন হয়। ওই বছর ১ জুন থেকে সারা দেশের বিচার কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ভার্চুয়ালি শুরু হয়। দেশের বিচারব্যবস্থা প্রথম ভার্চুয়াল জগতে প্রবেশ করে। গত বছর সেপ্টেম্বরের দিকে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। তবে সাড়ে ৩ মাসের মাথায় বিচারব্যবস্থা আবারো ভার্চুয়াল জগতে প্রবেশ করল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।