Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নামোল্লেখ না করে শাবিতে আন্দোলনরত ৩ শ’ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৩৩ পিএম

বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনরত শাবির দুই থেকে তিনশ’ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে এসএসপির জালালাবাদ থানায়। জালালাবাদ থানার এসআই (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বাদী হয়ে দায়ের করেছেন এই মামলা। সোমবার দায়েরকৃত মামলার নম্বর ৫ (১) ২২। তবে মালার এজাহারে কোন শিক্ষার্থীর নামোল্লেখ নেই। তবে বাদী দাবি করেছেন, গত রোববারের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা শুধু ইটপাটকেলই নয়, আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলিও ছুঁড়েছিল। মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ইটপাটকেল ও ককটেলে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর), অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর), জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত), এসআই আসাদুজ্জামান, কাজী জামাল উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম, এএসআই কামাল হোসেন, ফারুক আহমেদ, কনস্টেবল রকিবুল হাসান, জয়নাল আবেদীন, মিজানুর রহমান, ইয়ারুপ মিয়া, কাওছার হাবিব, শুকুর আলী আহত হন। আহতদের ওসমানীতে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। শিক্ষার্থীদের ছোঁয়া গুলিতে গুরুতর জখম হয় কনস্টেবল সাবিনা আক্তারের বাম পায়ে। ইটপাটকেলে কনস্টেবল সঞ্জিত দাসের ডান হাতের আঙুল ভেঙে যায়। মাথায় ফেটে যায় ইটের আঘাতে সিআরটির কনস্টেবল ফাহাদ হোসেন অপুর।

এজাহাওে আরোও উল্লেখ করা হয়েছে, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজার পদত্যাগের দাবিতে গত রোববার (১৬ জানুয়ারি) ২টা ৫৫ মিনিটের দিকে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ঘটনার খবর পেয়ে জালালাবাদ থানার এসআই (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান,এএসআই ফারুক আহমদ, কনস্টেবল মিজানুর রহমান, কনস্টেবল নার্গিস আক্তার, এসআই নিহারেন্দু তালুকদার, কনস্টেবল তাপস বিশ্বাস, জোনাকি তালুকদার, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু খালেদ মামুন, এসআই মো. আসাদুজ্জামান, এসআই মো. মাহাবুর আলম মন্ডল, এসআই কাজী জামাল উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম, মো. লোকমান হোসেন, লিটন চন্দ্র নাথ, এএসআই মো. কামাল হোসেন, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, খোরশেদ আলম, কনস্টেবল ইয়ারুপ মিয়া, কাওছার হাবিব, রকিবুল হাসান, শুকুর আলী, সঞ্জিত দাস, আলমগীর হোসেন, মেহেদি হাসান, মাজহারুল ইসলাম, সুহেল মিয়া, শিবা রাণী দাস, পারুল আক্তার, বিভা রাণী দাস, তানিয়া, তান্নি বেগম, সাথী রাণী নাগ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। পরবর্তীতে এসএমপির উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ক্রাইম-উত্তর) শাহরিয়ার আল মামুন, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রশাসন-উত্তর) গৌতম চন্দ্র দাসসহ এসএমপির ক্রাইসিস রেসপন্স টিমের এসআই ইব্রাহিম, নায়েক সুহেল, মাজেদ, কনস্টেবল শফিউল, ফয়সল, খালেদ, আলমাছ, মামুন, আলমগীর, রায়হান, কামরুল, ফেরদৌস, শাহীন ও এসএমপির পুলিশ লাইন্সের এসআই আতিকুর রহমান, এএসআই কামাল, কনস্টেবল ফিরোজ, হোসাইন, মানিক, মনির, সাইফুল, মির্জা, শিপলু, সুজন, স্বপ্না, কনক, তানিয়া, মাম্পি, সুপ্রমা, চম্পা, সুবিতা, সাবিনা, সাথী, তানিমা সবাই অবস্থান করেন শাবিতে। সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্টের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে শুরু হয় ছাত্রীদের আন্দোলন। পরে শাবি ভিসির মৌখিক আশ্বাসে সাময়িকভাবে আন্দোলন স্থগিত করেন ছাত্রীরা। ১৫ তারিখ অবধি দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ওইদিন সাড়ে ৫টায় গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন করেন ছাত্রীরা। উত্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৬ জানু আনুমানিক বিকাল ৩টায় আন্দোলনে যোগ দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেদিন বিকাল সোয়া ৩টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ভিসিকে। তারা ড. এমএ ওয়াজদ আলী আইসিটি ভবনে তালা দিয়ে ভিসিকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এজাহারে আরো উল্লেখ রয়েছে, বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে এসএমপির উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ ওই ভবনে ঢুকে শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের অনুরোধ জানান। তিনি ভিসিকে ভবন থেকে বের করার চেষ্টা করেন। শিক্ষার্থীরা কারো কথা না শুনে শ্লোগান অব্যাহত রাখে। একপর্যায়ে বিকাল সাড়ে ৫টায় আন্দোলনরত ২-৩শ’ উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী হঠাৎ চড়াও হয় কর্তব্যরত পুলিশের ওপর। তারা সরকারি আগ্নোয়াস্ত্র ধরে টানাটাানি করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। চারদিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছুঁড়ে। এ ছাড়াও পুলিশের ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ক্যাম্পাসে সৃষ্টি করে আতঙ্ক। ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীরা সেদিন সোয়া ৩টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা অবধি ক্যাম্পাসে অবস্থান করে থেমে থেমে আক্রমণ অব্যাহত রাখে পুলিশের ওপর। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, জানমাল, আগ্নেয়াস্ত্র ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় ১১ রাউন্ড রাবার কার্তুজ ও ২০ রাউন্ড সিসা কার্তুজসহ মোট ৩১ রাউন্ড শটগানের গুলি ছুঁড়ে।এ ছাড়া ২১টি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে সিআরটি। সেদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উদ্ধার করা হয় ভিসিকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ