Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইনকিলাবে সংবাদ প্রকাশের পর হাসপাতাল বন্ধ

পৃথিবীতে আসার পরই কপালে ৯ সেলাই

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০২২, ৭:৩৯ পিএম

"পৃথিবীতে আসার পরই কপালে ৯ সেলাই" শিরোনামে দৈনিক ইনকিলাবে রোববারের (১৬ জানুয়ারী) সংখ্যার ১২ পাতায়, একটি সংবাদ ছাপা হয়। এখানে আলমদিনা নামক একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন ক্লিনিকের এক আয়ার হাতে নবজাতকের কপাল কাটায় ৯ টি সেলাই লাগে। নবজাতকের মা রুপা বেগমও মৃত্যুপথযাত্রী প্রায়। কর্তব্যরত ডাক্তার তিন ব্যাগ রক্তের দেওয়ার তাগিদে চলছে রক্ত স্যালাইন।

গতকালের ইনকিলাবের প্রকাশিত সংবাদটি ছিল জেলার শীর্ষ আলোচনার বিষয়বস্তু। এই ঘটনায় পুলিশ ক্লিনিকের মালিক পলাশ ও আয়া চায়নাকে আটক করে নিয়মিত মামলায় আসামি করায় তারা এখন জেল হাজতে। সর্বশেষ জেলার শীর্ষ কর্মকর্তারা আলোচনা করে ঐ ক্লিনিকের সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে তালাবন্ধ করে দেন।

মোট কথা, ফরিদপুর সদর থানার হারোকান্দি এলাকার আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতাল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

উল্লেখ থাকে যে, রুপা আক্তার (২০) নামের অন্তঃসত্ত্বাকে কথিত নার্স সিজার করার অভিযোগ ওঠার পর শনিবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে হাসপাতালটিকে মৌখিক ভাবে বন্ধ ঘোষণা করার কথা বললে ও গতকাল রোববার (১৬ জানুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেন, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান।
অবশ্য শনিবার বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতেও এ তথ্য জানায় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।

সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, ফরিদপুর মেডিক্যাল প্রাকটিস এবং বেসরকারি ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরি (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৮২-এর বিধান লঙ্ঘন করায় ও প্রতিপালনে ব্যর্থ হওয়ায় শনিবার দুপুর পর থেকে ২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য হাসপাতালটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রোববার কার্যকারী হলো। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই হাসপাতালটি বন্ধ থাকবে।

প্রসঙ্গত, আল-মদিনা নামে ফরিদপুরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বা রুপা আক্তারকে সিজার করেন চায়না বেগম নামের এক কথিত নার্স। সিজারের সময় নবজাতকের মাথাসহ শরীরের কয়েক জায়গায় কেটে ফেলেন ঔ আয়া চায়না বেগম।

পরে নবজাতকের মাথায় ৯টি সেলাই দেওয়া হয়।সেই নবজাতকের অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক। নবজাতক ও তার মা ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। প্রসূতি মায়ের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ এলাকায়। ঘটনাটি ফরিদপুর জুড়ে আলোচিত হলে আল-মদিনা হাসপাতালের মালিক পলাশ মোল্যা ও সিজার করা নার্স চায়না বেগমকে কারাগারে থাকায় তাদের জামিনের ও জোর চেষ্টাও চলছে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, আটক হাসপাতালটির মালিক পলাশ ও নার্স চায়নার বিষয়ে আরো খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কাজ করছেন।

জানাযায়, প্রসূতির অবস্থা ও নবজাতকের অবস্থা এখনও বিপদজনক। রোববার নবজাতকের ফুফুর সাথে কথা হয়, ইনকিলাবের সাথে তিনি বলেন,আমার ভাবির এখনও প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।

পাশাপাশি রক্তও দিতে হচ্ছে। নবজাতকের অবস্থা খুব কষ্টদায়ক। ওর দিকে তাকানো যায় না। ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর বাবুর কপালের সেলাই কেটে আবার সেলাই করা হয়েছে। তখনকার মায়া কান্না সজ্জ করা যায়নি।
নবজাতক হাসপাতালের নতুন ভবনের ৬ষষ্ঠ তলার ৬ নং ক্যাবিনে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এই হ্রদয় বিধারক ঘটনাটি জাতীয়,, দৈনিক ইনকিলাবে,, গুরুত্বের সাথে ছাপা হওয়া, ইনকিলাব পরিবারকে ধন্যবাদ জানান জেলার সুশীল সমাজ।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ দিন ফরিদপুরের অলিতে গলিতে প্রায় তিনশত বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকের সৃষ্টি হলেও সিভিল সার্জন অফিস ছিল নিরব ভুমিকায়। অনাকাঙ্ক্ষিত বহু ঘটনার জন্য সিভিলসার্জন অফিসকেও জেলাবাসী দায়ী করছেন অনেকটা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ