Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরিশালে করোনা আবার উদ্বেগ ছড়ালেও কারো কোন হেলদোল নেই

১৫ দিনে আক্রান্ত আগের দুমাসের বেশী

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ৭:৩২ পিএম

সবুজ অঞ্চলে থাকা মহানগরী সহ বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় নতুন বছরের প্রথম ১৫ দিনেই আগের দুমাসের বেশী করেনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়ছে। গত ডিসেম্বরের পুরো মাসে যেখানে মাত্র ২২ জন করেনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল, সেখানে চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ১০১। এমনকি নভেম্বর ও ডিসেম্বরের দু মাসে শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৮৮ জন। তবে মধ্য অক্টোবরের পরে গত ৩ মাসে এ অঞ্চলে করোনা পজিটিভ শনাক্ত কোন মানুষের মৃত্যু হয়নি।

কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকেই সংক্রমণ উদ্বেগজনক পর্যায়ে বাড়লেও নুন্যতম কোন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের তোয়াক্কা করছেন না কেউ। এমনকি পুলিশ, প্রশাসন সহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোরও কোন হেলদোল নেই। মাস্ক ব্যাবহারের বিষয়টি বেশীরভাগ মানুষই আমলে নিচ্ছেন না। উঠতি ও তরুণ বয়সীরা মাস্ক পরিধান না করাকেই তাদের কৃতিত্ব বলেই মনে করছে।

এমনকি নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় যেখানে ২৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়, সেখানে পরবর্তী ৭ দিনে সংখ্যাটা ৬৪ জন সহ গত ১৫ দিনে মোট আক্রান্ত ১০১ জন। এরমধ্যে শনিবার দুপুরের পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত ৪ জনের মধ্যে মহানগরীতেই ৩জন । অথচ গোটা ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমণ সংখ্যাটা ছিল ২২। আর গত নভেম্বরের ৩০ দিনে এ অঞ্চলে ৬৬ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল। নভেম্বর ও ডিসেম্বরে কোন মৃত্যু ছিল না। অক্টোবরে ৬ জেলায় মোট আক্রান্ত ২১৭ জনের মধ্যে প্রথম ১৫ দিনে দুজনের মৃত্যু হয়েছিল।

গত জুলাই মাসে করোনার মহা সংকটকাল অতিক্রমকালে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ১৫ হাজার আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয় প্রায় দেড়শ নারী-পুরুষের। এরমধ্যে বরিশাল মহানগরীতেই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। মৃত্যু হয়েছিল ১২ জনের।

গত মে মাসে দক্ষিণাঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩৮০। মৃত্যু হয়েছিল ২৫ জনের। তবে গত আগস্টের মধ্যভাগ থেকেই দক্ষিণাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করলেও গোটা মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। মৃত্যু হয় ১৬৭ জনের। সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতির নতুন মোড় নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ১৯৫ জনে হ্রাস পায়। তবে মৃত্যু হয়েছিল ২৩ জনের।

এদিকে চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে বরিশাল অঞ্চলে ১০১ জন করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হলেও গত ৫ দিনেই আক্রান্তের সংখ্যাটা ৬৩। নতুন এ শনাক্তের মধ্যেও মহানগরী সহ বরিশাল জেলাই শীর্ষে রয়েছে। এ নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় এ পর্যন্ত মোট করোনা পজিটিভ শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৪৫৪ জনে। মৃত্যু হয়েছে ৬৭৯ জনের। আর আক্রান্ত ও মৃতের এ সংখ্যার মধ্যেও এখনো শীর্ষে বরিশাল মহানগরী। গোটা বিভাগের মাত্র ৬% জনসংখ্যার এ নগরীতে এপর্যন্ত সরকারীভাবে করোনা শনাক্তের সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। মারা গেছেন ১০২ জন। আর মহানগরী সহ বরিশাল জেলায় আক্রান্ত ১৮ হাজার ৩৯১ জনের মধ্যে মারা গেছেন ২৩০ জন। পটুয়াখালীতে আক্রান্তের সংখ্যাটা ৬ হাজার ২৪৪। মৃত্যু হয়েছে ১০৯ জনের। ভোলাতেও আক্রান্ত ৬ হাজার ৮৭৪ জনের মধ্যে মারা গেছেন ৯১ জন। পিরোজপুরে মোট আক্রান্ত ৫ হাজার ৩১২ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের। বরগুনাতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৯৬৭। মৃত্যু হয়েছে ৯২ জনের। আর ঝালকাঠিতে ৪ হাজার ৬৬৬ জন আক্রান্তের মধ্যে ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আর সর্বশেষ হিসেবে গত ২৪ ঘন্টায় ১০ জন সহ এ অঞ্চলে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৪ হাজার ৬২৮ জন। সুস্থতার হার ৯৮.১৮% হলেও শনাক্তের গড় হার এখনো ১৯.৭১%। আর গত ৩ মাসে করোনা সংক্রমণে কোন মৃত্যু না হলেও এখনো গড় মৃত্যু হার ১.৪৯%।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ