বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, স্লোগান নয়, এখন একশনের সময়। শেখ হাসিনার পতন ছাড়া বাংলাদেশের মুক্তি হবে না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আন্দোলনের বিকল্প নেই। রাতের অন্ধকারে বিনা ভোটের এই সরকারের পতন ঘনিয়ে এসেছে। তিনি আজ বুধবার বিকালে খুলনার ডুমুরিয়ার গুটুদিয়ায় বিএনপির গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করছিলেন।
তিনি বলেন, রামপালের পাশেই সুন্দরবন। যুগযুগ ধরে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। আর এই সুন্দরবন ধ্বংস করার জন্য কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করবে বলে পণ করেছে। এই প্রযুক্তি ভারতের। কিন্তু ভারত সরকারের প্রযুক্তি ভারতবর্ষে স্থাপনের অনুমতি দেয় না। সেইটা আমাদের দেশে করছে। আজকে দেশটাকে ধ্বংস করার জন্য, পরিবেশের বিপর্যয় নানাবিধ কর্মকান্ড করছে। আর তড়িঘড়ি করে বিদ্যুৎ দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে। এই সরকার ও তাদের সহযোগীরা ১০ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। ১০ লক্ষ কোটি টাকা যদি বিদেশে থাকে তাহলে দেশের অর্থনীতির কি অবস্থা হবে? বাংলাদেশের শুরু হয়েছিল মাত্র ৭৫০ কোটি টাকার বাজেট দিয়ে। ৫০ বছর পর ১০ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। এই টাকাগুলি কার? এই টাকা আমাদের ফেরত আনতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান বলেন, ছাগল দিয়ে শেখ হাসিনা দেশ চালাচ্ছেন। সবদিক দিয়ে শেখ হাসিনার পৃথিবী ছোট হয়ে আসছে। ২০২২ সালের মধ্যে এই সরকারের পতন হবে। তার অধীনে আগামীতে কোন নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। ২ কোটি টাকার জন্য যদি খালেদা জিয়ার জেল হয়, তাহলে ৩২ কোটি টাকার জন্য কতোবছর জেল হবে? বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিএনপিকে শক্তিশালী করুন। রাজপথে নামুন। রক্ত না দিলে মুক্তি মেলে না।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, দেশে ৫ ধাপে ইউপি নির্বাচন শেষ হয়েছে। প্রথম ধাপে নৌকা প্রতীকের ৭৬ শতাংশ পরাজয় হয়েছে। ধাপে ধাপে পরাজয় হয়েছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের। যে নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি, সেই নির্বাচনে তাদের এই অবস্থা। জামানত বাতিল হচ্ছে। আ’লীগ নেতাকর্মীরাই আজ নৌকার বিরুদ্ধে দাড়িয়েছে। নৌকা আজ শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতীক নয়। নৌকা এখন লুটপাট, ধর্ষণ, দুর্নীতির প্রতীক। এ কারণে মানুষ আজ এর বিরুদ্ধে। তার উদাহরণ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। অমিত আরো বলেন, পথে পথে বাধা দিয়েছেন, গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছেন, পুলিশ বেত্রাঘাত করেছে তবুও মানুষ সমাবেশে এসেছে। গাড়ি, লঞ্চ, ট্রেন বন্ধ করে লাভ নেই। জনগণ জেগে উঠেছে, এই জনগণকে ঠেকানো সম্ভব নয়। অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। মনে রাখবেন, খালেদা জিয়ার টিকে থাকারন সাথে আ’লীগের টিকে থাকার সম্পর্ক রয়েছে।
সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা। সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে সুচিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে খুলনা জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে ডুমুরিয়ার স্বাধীনতা চত্বরে সমাবেশ করার জন্য প্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়েছিল দলটি। তবে একই স্থানে ছাত্র ও যুবলীগের সমাবেশ আহবান করায় সেখানে পুলিশের অনুমতি মেলেনি। পরবর্তীতে বিএনপি গুটুদিয়া ফুটবল মাঠে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সকাল থেকে সমাবেশ স্থলে নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে আসতে শুরু করে। দুপুর ১২ টায় গুটুদিয়া ফুটবল মাঠে সমাবেশ শুরু হয়।
বৈরি আবহাওয়া উপক্ষো করে সকাল থেকেই নেতা কর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন। দুপুর নাগাদ সমাবেশস্থল কানায় কানায় ভরে ওঠে। শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।