Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হুমকির মুখে ফসলি জমি

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১২ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

 কলাপাড়ার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের মধুখালী খালের মধ্যে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার ফলে বিভিন্ন ফসলি জমিতে ধস এবং হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ। স্থানীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এসব ড্রেজার দিয়ে গ্রামাঞ্চলের খাল, বিল ও পুকুর থেকে যত্রতত্র ভ‚গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করায় আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী। বছরের পর বছর ধরে ড্রেজার মালিকরা এ অবৈধ কাজটি করে যাচ্ছে প্রভাবশালী মহল। বিভিন্ন সময় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি জানালেও তা কোনো কাজে আসছে না বলেও অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলাপাড়ার বিভিন্ন স্থানে এভাবে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের কাজ চলমান রয়েছে। অবৈধ মেশিনগুলোর মালিকরা ঘুরে ঘুরে গ্রামের পরিত্যক্ত খাল, ডোবা ও পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করছে। মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের মধুখালী এলাকায় ছোট একটি খালের মাঝখানে অবৈধ ড্রেজার বসিয়েছে বালু উত্তোলন করছেন স্থানীয় এক ক্ষমতাসীন দলের নেতা। তিনি মাধুখালী গার্ডার সেতুর পশ্চিম পাশে বক্সে বালু দিচ্ছেন। খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকিতে পড়েছে খালের দু’পাশের ফসলি জমি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ড্রেজার দিয়ে উত্তোলনকৃত বালুর বেশিরভাগই স্থানীয় ঠিকাদাররা তাদের নির্মাণ কাজে ব্যবহার করে। সড়ক ও সরকারি স্থাপনার মেঝে ভরাট করা হচ্ছে এ বালু দিয়ে। ভ‚গর্ভস্থ এ বালুতে কাদা-মাটির পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে মাটি মিশ্রিত এ বালু দিয়ে তৈরি গার্ডার সেতু, কালভার্ট সড়ক ও স্থাপনা টেকসই না হওয়ায় প্রতিবছর সরকারের উন্নয়ন কাজের কোটি কোটি টাকা গচ্চা যাচ্ছে। তাছাড়া কম খরচে ও সহজ পদ্ধতিতে বালু পাওয়ায় ঠিকাদারদের পাশাপাশি বসতবাড়ি নির্মাণেও অনেকে পরিবেশ বিধ্বংসী এই ড্রেজার ব্যবহার করছে।

ড্রেজার মালিক নুর আলম ও সোহাগ জানান, মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের মধুখালী বাজার সংলগ্ন চলমান গার্ডার সেতুর ২০-৩০ ফুট পাশে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন স্থানীয় দু’জন ক্ষমতাসীন দলের নেতা। তাদের ভাড়া করে আনেন খাল থেকে বালু উত্তোলনের জন্য। নুর আলম বলেন, আমি যেতে চাইনি। তারা নেতা মানুষ জোর জুলুম করে মেশিন ও মালামাল নিয়ে এ ড্রেজার বসিয়েছেন। ড্রেজার মালিকরা আরো জানান, তারা কিছুদিন আগেও পক্ষিয়া বাজার সংলগ্ন দীর্ঘ তিন কিলোমিটার রাস্তার কাজে নদী থেকে বালু উঠিয়েছেন। গার্ডার সেতুর সাব-ঠিকাদার সয়োন হাওলাদার বলেন, আমি ড্রেজার বসিয়ে বালুর যে কাজটি করছি এ বিষয়ে কলাপাড়া ইউএনও, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অবগত আছেন। তারাই আমাকে কাজটি করতে বলছেন এবং সবাইকে জানিয়েই আমি কাজটি করছি। কলাপাড়া উপজেলা সহাকরী কমিশনার (ভ‚মি) জগৎ বন্ধু মন্ডল জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বরদাশত করা হবে না। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, গার্ডার সেতুর মূল ঠিকাদার বিল উঠিয়ে নেয়ার পরে আর কাজ করেনি। দু’পাড়ের লোকজন হাটার জন্য বাকি কাজ স্থায়ীভাবে একজনকে করার জন্য বলা হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের সবাই অবগত আছেন বলে তিনি জানান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ