বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে চার দিন ধরে পণ্য আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। মুলত অটো এসএমএস সফটওয়্যার চালুর প্রতিবাদেই এ ঘটনা করছেন ব্যবসায়ীরা। সফটওয়্যারভিত্তিক এ কার্যক্রম সময়সাপেক্ষ হওয়ায় আবার পুরোনো পদ্ধতিতে ওজন মেপে পণ্যবাহী যানবাহন পারাপার চালুর দাবি এখন ব্যবসায়ীদের। এদিকে, আমদানীকৃত পন্যবোঝাই হাজার হাজার ট্রাক আটকে রয়েছে তামাবিল স্থলবন্দরের ওপারে শুক্রবার থেকে ওই ট্রাকগুলো সীমান্তের ওপারের ডাউকী এলাকায় আটকা পড়েছে। স্থানীয় চুনাপাথর আমদানিকারকদের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ না পাওয়ায় এসব ট্রাক এসে প্রবেশ করতে পারছে না। এতে চার দিনে সরকার প্রায় তিন কোটি টাকার মতো রাজস্ব হারিয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তামাবিল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবসায়ীদের তথ্যানুযায়ী, গত শুক্রবার থেকে তামাবিল স্থলবন্দরে অটো এসএমএস সফটওয়্যার বসানো হয়। এ পদ্ধতির ফলে ভারত থেকে তামাবিল স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশপর নিবন্ধন করতে হয় পণ্যবাহী যানবাহনগুলো। একই সঙ্গে যানবাহনের ওজনও করা হয় পরিমাপ।
এ পদ্ধতিতে স্থলবন্দরে পৌঁছার পরপরই খুদে বার্তার মাধ্যমে পণ্যবাহীর গাড়িসংক্রান্ত তথ্য আমদানিকারকের কাছে চলে যায়। পূর্বে সীমান্তের দুই পাশেই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে মাপজোখ করা হতো পণ্যবাহী যানবাহনের। পরে তামাবিল স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পর স্থাপন করা হয় ওজন মাপার স্কেল। তবে গত শুক্রবার বন্দরে অটো চালু করা হয় এসএমএস সফটওয়্যার। এতে প্রতিটি গাড়িকে বন্দরে এসে নতুন করে পুরো আমদানির তথ্য দিতে হচ্ছে। এ পদ্ধতি বেশ সময়সাপেক্ষ বলে অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা। তামাবিল পাথর, কয়লা ও চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. সারওয়ার হোসেন বলেন, আগে প্রতি মিনিটে অন্তত দুটি গাড়ি বন্দর পার হতো। কিন্তু এই সফটওয়্যার বসানোর পর থেকে একেকটি গাড়ি পার হতে সময় ব্যয় হচ্ছে ৮ থেকে ১০ মিনিট । প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে ৮০০ থেকে ৮৫০টি গাড়ি পণ্য নিয়ে ভারত থেকে দেশে ঢুকে। এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার টন পাথর আমদানি করা হতো। এ পদ্ধতি স্থাপনের ফলে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৩০টি গাড়ি পণ্য পরিবহন করতে পারবে। এতে ব্যবসায়ীরা যেমন ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তেমনি রাজস্ব হারাবে সরকারও। এছাড়া ভারতের অংশে বন্দর স্থাপন না হওয়ায় সেখানে মাপজোখ করা হয় ম্যানুয়্যাল পদ্ধতিতে। তাই বাংলাদেশ ও ভারতের অংশে ওজনের পার্থক্য দেখা দিচ্ছে। এতে জরিমানার মুখে পড়ছে ব্যবসায়ীরা। ভারতের অংশে বন্দর স্থাপনের জন্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে। সফটওয়্যারটি ভারতের বন্দর নির্মাণের পর চালু করা হলে ব্যবসায়ীদের আপত্তি নেই। তা না হলে সমন্বয় না থাকায় ব্যবসায়ীদের ভোগান্তির শিকার হতে হবে। তামাবিল পাথর, কয়লা ও চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপের সহ-সভাপতি আলী জালাল উদ্দিন জানান, সমন্বয় না করে অটো এসএমএস সফটওয়্যার পদ্ধতি স্থাপন করায় ব্যবসায়ীরা হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরগুলোতে এ পদ্ধতি চালু না হলেও অদৃশ্য কারণে সিলেটে এ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী বলছেন, প্রায় দুই মাস আগে অটো এসএমএস সফটওয়্যার চালুর বিষয়টি অবগত হওয়ার পরই নিরব প্রতিবাদ শুরু করেন তারা। এর জটিলতা নিরসনে এলাকার সংসদ সদস্য, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হলে মন্ত্রীও মেশিন না বসানোর জন্য দিয়েছিলেন ডিও। এর বাইরেও তামাবিল চুনাপাথর, পাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের নেতৃবৃন্দ ঢাকায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সহ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু ব্যবসায়ীদের দাবি উপেক্ষা করে বন্দর কর্তৃপক্ষ তামাবিলে অটো মেশিন বসিয়েছে।
সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম ভূঞা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই অটো এসএমএস সফটওয়্যার পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এ পদ্ধতি বন্ধের দাবিতে আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে সফটওয়্যার পদ্ধতি বন্ধ করা হবে কি না, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।