Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

শেবাচিমে জীবনদায়ী ওষুধ সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় হৃদ রোগীদের চিকিৎসা বিপন্ন

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০২২, ২:৩৩ পিএম

জীবনদায়ী ইঞ্জেকশনের অভাবে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত সরকারী চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান, শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে মুমুর্ষ রোগীদের চিকিৎসা প্রায়সই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। হৃদরোগে আক্রান্তদের জন্য সর্বধীক প্রয়োজনীয় ‘স্ট্রেপটোকিনাস’ ও ‘এক্সাপেরিন’ নামের দুটি জরুরী ইনজেকশনের সরবরাহ গত কয়েক মাস ধরেই অনিয়মিত থাকায় রোগী ও তাদের স্বজনদের মত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও রোগীদের প্রাণ বাঁচাতে চরম অসহায় বোধ করছেন। গরীব-অসহায় রোগীদের সরকারীভাবে বিনা মূল্যে জীবন রক্ষাকারী জরুরী ঔষধ দেয়ার কথা থাকলেও কেন্দ্রীয় ভান্ডার থেকে এসব আপদকালীন ওষুধের সরবারহ প্রায়ই অনিয়মিত হয়ে পড়ছে। গত কয়েক মাস ধরেই আপদকালীন ভান্ডারের ওষুধ সরবরাহও অনিয়মিত বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটির দায়িত্বশীল সূত্র।
বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আধুনিক হৃদরোগ বিভাগ চালু হয় ২০১১ সালে। এই ওয়ার্ডে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী ভর্তির পর প্রথম ১২ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে তাৎক্ষণিক স্ট্রেপটোকিনাস নামের একটি ইনজেকশন দিতে হয়। খোলা বাজারে জরুরি এই ইনজেকশনের দাম ৫ হাজার টাকা এবং এক্সাপেরিন নামের আরেকটি ইনজেকশনের দামও ৫শ টাকা। একই সাথে রোগীকে এক্সাপেরিন নামে দুটি ইনজেকশন দেয়া হয়ে থাকে।
এতদিন সরকারীভাবে এসব ইনজেকশন সরবারহ করায় আর্থিকভাবে উপকৃত হত দরিদ্র রোগীরা। গত জুলাই মাসে কেন্দ্রীয়ভাবে মূল্যবান এসব ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। কেন্দ্রীয় সরবরাহ বন্ধের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দরিদ্র রোগীদের অসহায়ত্ব বিবেচনায় আপদকালীন সংগ্রহ থেকে রোগীদের বিনামূল্যে ওই ওষুধ সরবরাহ করতো। কিন্তু মাসখানেক ধরে আপদকালীন ভান্ডারও শূণ্য। ফলে হৃদরোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন দরিদ্র রোগীরা চরম বিপাকে। সময়মতো জীবন রক্ষাকারী জরুরি ওষুধ না পেয়ে বিপন্ন হয়ে পড়ছে বেশীরভাগ দরিদ্র রোগীদের জীবন।
২০১১ সালে ১০ শয্যার হৃদরোগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রটির শয্যা আর না বাড়লেও ওয়ার্ডটিতে গড়ে ৬৫ জন পর্যান্ত রোগী চিকিৎনাধীন থাকছে। কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে প্রতিমাসে এই ওয়ার্ডে রোগীর মৃত্যুর হার ৮ থেকে ১০ ভাগ। কিন্তু সরকারি জীবন রক্ষাকারী দুটি ইনজেকশনের সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় এই ওয়ার্ডের রোগীদের জীবন অনেক সময়ই ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে।
রোগীদের স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে জ্বর আর গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ছাড়া অন্য সব মূল্যবান ওষুধ নিজেদের টাকায় কিনতে হয়।
বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য প্রায় ২ কোটি টাকার ওষুধ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু জীবন রক্ষাকারী জরুরি এসব ওষুধের সরবরাহ কেন্দ্রীয় ভান্ডার থেকে বন্ধ থাকায় রোগীদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় এসব ইনজেকশন দিতে পারছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তবে এ ব্যাপারে মঙ্গলবার হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলামের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে জরুরী ঐ দুটি ইনকেজকশন তাদের কাছে মজুদ রয়েছে। তবে প্রায়সই চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ সরবরাহ বিঘিœত হয় বলেও তিনি স্বীকার করেন। তার মতে, সরবারহ স্বাভাবিক থাকলে রোগীদের প্রত্যাশা পূরন করা সম্ভব হয়। হৃদ রোগীদের জন্য এসব ইনজেকশন সহ গুরুত্বপূর্ণ সব ড্রগ-এর সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সব সময়ই কেন্দ্রীয় দপ্তর ও ভান্ডারে নিয়মিত তাগিদ দেয়ার কথাও জানান তিনি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ