Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

হঠাৎ লঞ্চে ধোঁয়া দেখে ছবি-ভিডিও ফেসবুকে দেয়ায় যাত্রীদের মারধরের অভিযোগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:১৫ পিএম | আপডেট : ৮:১৮ পিএম, ৯ জানুয়ারি, ২০২২

ঢাকা থেকে বরিশালগামী সুরভী-৯ লঞ্চে ইঞ্জিনের বাষ্প নির্গমনের পাইপ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে সহযোগিতা চাওয়া যাত্রীসহ আরও কয়েকজন যাত্রীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করতে গেলে দুই টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরাপারসনকে মারধর করা হয়। রবিবার (৯ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বরিশাল নদীবন্দর এলাকায় সুরভী-৯ লঞ্চে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

লঞ্চের একাধিক যাত্রী জানান, ছয় শতাধিক যাত্রী নিয়ে শনিবার (৮ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চটি বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রাত ১১টার দিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া এলাকায় পৌঁছালে ইঞ্জিনের বাষ্প নির্গমনের সাইলেন্সর পাইপ থেকে ধোঁয়া বের হতে থাকে। যাত্রীরা এটা দেখতে পেলে তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নারী যাত্রীরা কান্নাকাটি শুরু করেন। লঞ্চ তীরে ভেড়ানোর জন্য কর্মচারীদের অনুরোধ করতে থাকেন যাত্রীরা। এর মধ্যে আতঙ্কিত কোনো একজন যাত্রী ৯৯৯-এ কল করে সহযোগিতা চান। এছাড়া কয়েকজন যাত্রী মোবাইলে স্থিরচিত্র ধারণ ও ভিডিও করে ফেসবুকে পোস্ট করেন। কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস বাহিনী স্পিডবোট নিয়ে লঞ্চের দিকে এগিয়ে আসে। তাদের নির্দেশে লঞ্চটি চাঁদপুরের মতলবপুর উপজেলার মোহনপুর স্টেশনে ভেড়ানো হয়।

রাত সাড়ে ৩টায় মোহনপুর থেকে ছেড়ে সাড়ে ৪টায় চাঁদপুর স্টেশনে ভেড়ানো হয় লঞ্চটি। বিআইডব্লিউটিএর চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তাসহ তিন কর্মকর্তা লঞ্চে উঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরে ভোর ৫টায় যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হয় লঞ্চটি। সকাল ১০টার দিকে বরিশালে নদীবন্দরে পৌঁছে লঞ্চ সুরভী-৯। এরপর গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রীরা লঞ্চ থেকে নেমে যেতে শুরু করেন। এসময় ধোঁয়া বের হওয়ার ঘটনাটি যেসব যাত্রীরা মোবাইলে ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন এবং ৯৯৯-এ কল করে সহযোগিতা চেয়েছিলেন তাদের খুঁজে মারধর শুরু করেন লঞ্চের স্টাফরা। এসময় ভিডিও চিত্র ধারণ করতে গেলে বেসরকারি টেলিভিশনের দুই ক্যামেরাম্যানকেও মারধর করা হয়। লঞ্চ স্টাফদের হামলায় দুই ক্যামেরাম্যানসহ বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন।

সুরভী-৯ লঞ্চের মাস্টার আবুল কালাম বলেন, শুক্রবার লঞ্চটি পিকনিক ট্রিপে গিয়েছিল। পরে লঞ্চটি ধোয়ামোছা করা হয়। এতে সাইলেন্সর অ্যাডজাস্ট পয়েন্টের ভেতরের অংশে থাকা কাপড় ভিজে যায়। শনিবার রাতে লঞ্চটি বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হলে ভেজা কাপড় গরম হয়ে ধোঁয়া বের হয়। এতে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এসময় যাত্রীদের মারধরের বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান আবুল কালাম। এ বিষয়ে সুরভী লঞ্চ কোম্পানির পরিচালক রেজিন উল কবির বলেন, যাত্রী ও সংবাদকর্মীদের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনায় সুরভী-৯ লঞ্চের ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমানকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় লঞ্চের অন্য কোনো স্টাফ জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যাত্রী ও সংবাদকর্মীদের মারধরের ঘটনায় সুরভী-৯ লঞ্চের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিআইডব্লিউটিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। যাত্রীদের ওপর হামলার ঘটনায় নৌপুলিশে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে বরিশাল সদর নৌথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্র্তা (ওসি) হাসনাত জামান জানান, এখন পর্যন্ত যাত্রী ও সংবাদকর্মীদের মারধরের ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ