Inqilab Logo

শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রোগী পছন্দ হলেই যৌনতায় জড়াতেন ফিরোজা নাজনীন বাঁধন!

নির্যাতন ছিল সীমাহীন: দুনিয়ার জাহান্নাম ছিল এই প্রতিষ্ঠান

গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:৩২ পিএম

মাদকাসক্তদের পুনর্বাসনের জন্য নিরাময় কেন্দ্র খোলা হলেও সেখানে চলতো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এমনকি রোগীকে পছন্দ হলে তার ওপর যৌন নির্যাতন চালাতেন নিরাময় কেন্দ্রটির মালিক ফিরোজা নাজনীন বাঁধন। ওই কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কাছে থেকে হাতিয়ে নেয়া হতো লাখ লাখ টাকা। কোনো রোগী তাদের অভিভাবকদের কাছে অভিযোগ করলে নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হতো। র‌্যাব বলছে, ওই কেন্দ্রটির সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সবাই ছিলেন মাদকাসক্ত।

গাজীপুর জেলা শহরের ভুরুলিয়া কালাসিকদারের ঘাট এলাকায় ‘ভাওয়াল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র’ নামক প্রতিষ্ঠানে মঙ্গলবার র‌্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। ওই অভিযানে ফিরোজা নাজনীন বাঁধন সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নগরীর ভাওয়াল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র নামক একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। যেভাবে নিরাময় কেন্দ্র পরিচালনা, চিকিৎসা দেওয়া ও রোগীদের সেবা দেয়ার কথা তা সেখানে দেয়া হতো না। এ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মানসিক, শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করা হতো বলে কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাধনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন রোগীরা।

একটি নিরাময় কেন্দ্র পরিচালনার জন্য যে নিয়ম-কানুন আছে তার অধিকাংশই এখানে মানা হতো না। এ কেন্দ্রে নিম্নমানের খাবার সরবরাহসহ ভর্তিকৃত রোগীদের জন্য কোনো চিকিৎসক ছিলনা। এ কেন্দ্রে যে পরিমাণ রোগী থাকার কথা তার চেয়ে বেশি রোগী ছিল।

তিনি আরো জানান, এখান থেকে শারীরিক নির্যাতনের ফুট প্রিন্ট পাওয়া গেছে। বিশেষ করে রোগীদের ঝুলিয়ে পেটানো এবং শারীরিক নির্যাতনের প্রমাণ হিসেবে রশি উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।২০০৯ সালে কেন্দ্রটি অনুমোদনহীনভাবে শুরু করলেও পরে তার অনুমোদন নেয়া হয়। পরে মালিক ফিরোজা নাজনীন বাধন কোনো প্রকার নিয়ম-কানুন না মেনে কেন্দ্রটি পরিচালনা করতে থাকেন।

এ কেন্দ্র চিকিৎসার নামে জোরপূর্বক রোগীদের আটকে রাখা হতো। এমনও রোগী রয়েছেন যিনি তিন বছর ধরে এ কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। রোগীরা কোনো প্রকার অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর নির্যাতন চালাতেন মালিকের পালিত কর্মচারীরা। এরকম ৫-৭ জন রোগী পাওয়া গেছে যাদের ওপর শারীরিক নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভি নামে এক চিত্রনায়ককে চিকিৎসার নামে এখানে আটকে রেখে সীমাহীন নির্যাতন করা হয়। অভি জানান, দুনিয়ার জাহান্নাম ছিল এই প্রতিষ্ঠান।



 

Show all comments
  • jack ali ৭ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:০৫ পিএম says : 0
    বাংলাদেশের যত মাদক ও মানসিক নিরাময় প্রতিষ্ঠান আছে এগুলো জাহান্নামের থেকেও খারাপ একটা বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে ছোট ছোট রুমের মধ্যে অনেক লোকজন কে রাখে নামাজ পড়ার কোনো জায়গা নাই বই পড়ার কোন জায়গা নাই খেলাধুলার কোন জায়গা নাই যারা মানসিক ও মাদক রোগীদের খেলাধুলা করলে শরীর অনেক ভালো হয় এবং মন অনেক ভাল হয়ে যায় কিন্তু এটার উল্টা হয় যারা ওখানে ভর্তি হয় এবং এরা প্রচুর পয়সা দাবী করে খাদ্য খুবই খারাপ ব্যবহার খুবই খারাপ যারা এগুলো চালায় তারা মানুষ না জানোয়ার আমাদের দেশের সরকার এর জন্য 100% দায়ী
    Total Reply(0) Reply
  • Farzana ৮ জানুয়ারি, ২০২২, ২:৪৮ এএম says : 0
    ঢাকার শ্যামলীতে ডা. গোলাম রাব্বানীর তত্বাবধানে একটা মাদক ও মানসিক নিরাময় কেন্দ্র আছে যার নাম "নিরাময়"। এখানে রোগীদের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। বুয়া নার্স দিয়ে রোগী পেটানো হয়। আর ডিউটি ডাক্তাররা কমবয়সী রোগীদের যৌন নির্যাতন করে। নোংরা স্যাঁতসেঁতে বদ্ধ পরিবেশে রোগীদের রাখা হয়। নোংরা পানি আর খাবার অযোগ্য নিম্নমানের খাদ্য খাওয়ানো হয়। সুস্থ হয়ে গেলেও অসুস্থতার নাম করে রোগীকে আটকে রেখে অভিভাবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। কেউ যদি কোনো রোগী সুস্থ অবস্থায় ফেরত পেতে চান তাহলে ভুলেও এই জানোয়ারদের নিরাময়কেন্দ্রে পাঠাবেন না। আমার এক অসুস্থ পরিচিতাকে আরও অসুস্থ করে ফেলা হয়েছে এভাবে নির্যাতন করে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ