Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জন্মনিবন্ধনে ডিজিটাল ভোগান্তি

দালালচক্র সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য সর্বত্রই জন্মগ্রহণই যেন অভিশাপ : ১৭ সেবায় বাধ্যতামূলক বঞ্চিত মানুষ

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

প্রশাসনিক সব কর্মকাণ্ড ডিজিটাল পদ্ধতিতে ব্যবহার হওয়ায় জন্মনিবন্ধন অপরিহার্য। পাসপোর্ট, আইডি কার্ড, জমি রেজিস্ট্রেশন, করোনার টিকা, বিয়ে এবং স্কুলে ভর্তিসহ ১৭টি সেবার ক্ষেত্রে জন্মসনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে সন্তান জন্ম নেয়ার পর মানুষ স্থানীয় প্রশাসনে জন্মনিবন্ধন করেন। কিন্তু ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন করায় ‘সার্ভার ত্রুটি’ অজুহাতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে জেলা, উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে সময়মতো জন্মনিবন্ধন করা যাচ্ছে না। অথচ জন্মনিবন্ধন না করলে নানা ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে।

জানতে চাইলে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার জেনারেল (অতিরিক্ত সচিব) মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী বলেন, মানুষ সারা বছর জন্মনিবন্ধন করে না। নভেম্বর-ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে এসে সবাই একসঙ্গে নিবন্ধন করতে চায়। ফলে একসঙ্গে ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন করতে গিয়ে সার্ভার অনেক সময় বেশি লোড হয়ে যায়। একটু সমস্যা সৃষ্টি হয়। শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যেই জন্মনিবন্ধন করা যায়। জন্মনিবন্ধন বিষয়ে আমরা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিবকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তারা যেন জনসাধারণকে জন্মনিবন্ধনে উদ্বুদ্ধ করে তার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জন্মনিবন্ধনে প্রকৃতপক্ষে কোনো ভোগান্তি নেই। তবে কিছু কিছু অসুবিধা আছে। সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের দিকে এগোচ্ছি।

জাতীয় জন্মনিবন্ধনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে নাগরিক অধিকার সুরক্ষায় ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন। সারাদেশেই সাধারণ মানুষ জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, জন্মনিবন্ধন সনদের জন্য আবেদন করার শর্তে জটিলতা রয়েছে। রয়েছে সনদ প্রদানে দীর্ঘসূত্রতা। সরকারি ফি’র বাইরেও নেয়া হচ্ছে অর্থ। ১৭টি সেবার ক্ষেত্রে জন্মসনদ বাধ্যতামূলক হওয়ায় মানুষ বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে জন্মনিবন্ধন করছেন। এরপরও বাধ্যতামূলক ও জরুরি এই সনদ পেতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সারাদেশের মানুষকে। সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তাদের দাবি জনবল সঙ্কট, ইন্টারনেটের ধীরগতি ও কেন্দ্রীয় সার্ভারে নানা জটিলতার কারণে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা। পাসপোর্ট তৈরি, বিয়ে নিবন্ধন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, চাকরিতে নিয়োগ, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভোটার তালিকা তৈরি, জমি রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক হিসাব খোলা, আমদানি ও রফতানি লাইসেন্স, গ্যাস, পানি, টেলিফোন এবং বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমতি, করদাতা শনাক্তকরণের নম্বর, ঠিকাদারি বা চুক্তির লাইসেন্স, ভবন নকশার অনুমোদন, ট্রেড লাইসেন্সপ্রাপ্তি এবং মোটরযানের নিবন্ধন পেতে জন্মনিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক। ঢাকা সিটিকে বসবাসরত নাগরিকদের স্থানীয় কমিশনারের প্রত্যায়নপত্র লাগে। এক সময় সন্তানের বাবা ও মায়ের জন্মনিবন্ধন লাগত না। এখন সকলের জন্মনিবন্ধনের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। বয়স্ক কেউ জন্মসনদ নিতে গেলে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। একই সঙ্গে হয়রানি দিন দিন বাড়ছে। অনেক ইউনিয়নের তথ্য সেবাকেন্দ্র থেকে নোটিশ জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে সার্ভার আপডেট করার জন্য সমস্যা হচ্ছে এ কারণে জন্মবিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ শহরের জামতলা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মো. বাবুল মিয়া। তার ৬ সন্তান। ছোট দুই ছেলের জন্য জন্মনিবন্ধন করতে মাস দেড় আগে সুনামগঞ্জ পৌরসভায় যান তিনি। পৌর কর্মকর্তারা জানান, সন্তানের জন্মনিবন্ধন করতে হলে মা-বাবার জন্মনিবন্ধন অবশ্যই থাকতে হবে। এরপর বাবুল মিয়া সুনামগঞ্জ পৌরসভায় নিজের জন্মনিবন্ধনের জন্য আবেদন করেন। গত ১১ অক্টোবর ফি জমা দেন। ৫ দিন পৌরসভার সংশ্লিষ্ট শাখায় যান। কিন্তু জন্মনিবন্ধন পাননি। বাবুল মিয়ার মতো সারাদেশেই সাধারণ মানুষ জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, জন্মনিবন্ধন সনদের জন্য আবেদন করার শর্তে জটিলতা রয়েছে। রয়েছে সনদ প্রদানে দীর্ঘসূত্রতা। সরকারি ফির বাইরেও নেয়া হচ্ছে অর্থ। ১৭টি সেবার ক্ষেত্রে জন্মসনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু ‘বাধ্যতামূলক’ ও জরুরি এই সনদ পেতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। সম্প্রতি দেশে ১২ থেকে ১৮ বছরের শিশুদের করোনার টিকা কার্যক্রম শুরু হলে জন্মনিবন্ধনের সনদ উত্তোলনের হার বেড়ে যায়। কিন্তু এই সনদ সংগ্রহ করতে গিয়ে অভিভাবকরা ঘাটে ঘাটে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। দিতে হচ্ছে বাড়তি টাকাও। আবার অনেকের জন্মসনদ সংশোধন করতে হচ্ছে। সেখানে ভোগান্তি আরো বেশি। জন্মনিবন্ধন উত্তোলন ও সংশোধনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে দালালচক্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানান, জনবল সঙ্কট, অদক্ষ জনবল, দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, ত্রুটিপূর্ণ প্রযুক্তির ব্যবহার, ইন্টারনেটের ধীরগতি, কেন্দ্রীয় সার্ভারে ত্রুটি, সেবাদানকারীর দুর্ব্যবহার, তথ্য প্রদানে অনীহা এবং নাগরিকদের সচেতনতার অভাবে সারাদেশের ‘জন্মনিবন্ধন সনদ’ কার্যক্রম দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দুর্ভোগ লাঘবে সরকারের পক্ষ থেকেও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেই। জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম সহজ এবং সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে বিভাগীয়, সিটি করপোরেশন, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এবং ইউনিয়নে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। তাদের জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনে সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু এসব টাস্কফোর্স ঠিকমতো কাজ করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়ের রেজিস্ট্রার জেনারেল (অতিরিক্ত সচিব) পলাশ কান্তি বালার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার অফিসের একাধিক কর্মকর্তা জানান, স্যার নতুন যোগদান করেছেন। অফিসের কাজে খুলনায় গেছেন।
জন্মনিবন্ধন নতুন করে করতে কিংবা সংশোধনে কয়েকশ’ গুণ বেশি টাকা নেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ করলে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার জেনারেল (অতিরিক্ত সচিব) মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী বলেন, এ রকম হলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেন। আমরা ব্যবস্থা নেব। জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনে খুবই সামান্য পরিমাণে ফি দিতে হয়। এখন যদি দালালচক্র অতিরিক্ত টাকা-পয়সা নেয়, সেটি আমাদের জানান। রেজিস্ট্রার জেনারেল বলেন, আমাদের টেকনিক্যাল কাজের লোক মাত্র দু’জন। এ জন্য টেকিনিক্যাল সাপোর্ট তুলনামূলকভাবে কম। আমরা জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি।

১৭ সেবায় বাধ্যতামূলক পাসপোর্ট তৈরি, বিয়ে নিবন্ধন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, চাকরিতে নিয়োগ, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভোটার তালিকা তৈরি, জমি রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক হিসাব খোলা, আমদানি ও রফতানি লাইসেন্স, গ্যাস, পানি, টেলিফোন এবং বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমতি, করদাতা শনাক্তকরণের নম্বর, ঠিকাদারি বা চুক্তির লাইসেন্স, ভবন নকশার অনুমোদন, ট্রেড লাইসেন্সপ্রাপ্তি এবং মোটরযানের নিবন্ধন পেতে জন্মনিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক। সারাদেশেই জন্মনিবন্ধন তুলতে গিয়ে মানুষকে নাজেহাল হতে হচ্ছে। জেলাগুলো হচ্ছেÑ বগুড়া, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, ঢাকা, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, বরিশাল, পিরোজপুর, রাঙামাটি ও খুলনা।

শিবগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী মারিয়া কিপতিয়া করোনা ভাইরাসের টিকার নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন। জন্মসনদে তার বাবার নাম ভুল রয়েছে। এ জন্য নিবন্ধন হচ্ছে না। পৌরসভায় গিয়ে সংশোধন কার্যক্রম চালাতেও পারছেন না। কারণ তিন দিন ধরে জন্মনিবন্ধনের সার্ভার ডাউন হয়ে আছে। জন্মনিবন্ধনের ছোটখাটো এ রকম অসংখ্য সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন ২৫-৩০ জন মানুষ এলেও সার্ভার ডাউনের কারণে তারা ফিরে যাচ্ছেন।

বরিশাল : চরম ভোগান্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) জন্মনিবন্ধন শাখার বিরুদ্ধে। ভোগান্তির কারণে অনেকেই জন্মসনদ নিতে যাচ্ছেন না। সনদ পেতে জুড়ে দেয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি শর্ত। এসব শর্ত পূরণ করতে গিয়ে অনেকেরই হাঁসফাঁস অবস্থা। যাদের জন্ম ২০০১ সালের পর তাদের জন্মনিবন্ধনের জন্য বাবা-মায়ের জন্ম সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে সন্তানের জন্মনিবন্ধন করাতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে। বিসিসির জন্মনিবন্ধন শাখার চারটি কম্পিউটারের মধ্যে ২টি প্রায় সময়ই বিকল থাকে। এতে কাজের গতি কমে যায়। আটকা পড়ে হাজারো আবেদন। দুই সপ্তাহ আগে ফরম জমা দিয়েও সনদ হাতে না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকে।

স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে সন্তানের জন্মনিবন্ধন করাতে আসা সালমা বেগম নামের এক নারী জানান, স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই জন্মনিবন্ধন আছে। তবে একজনের ইংরেজিতে, আরেকজনের বাংলা। এ কারণে তারা আবেদনই করতে পারছেন না। সন্তানেরটাও হচ্ছে না। সিটি করপোরেশনের জন্মনিবন্ধনের আবেদনপত্র জমা নেয়ার দায়িত্বে থাকা কর্মী ইরানী বেগম বলেন, মা-বাবার নিবন্ধন বাংলায় হলে সন্তানও বাংলায় জন্মনিবন্ধন সনদ পাবে। আর মা-বাবার সনদ ইংরেজিতে হলে সন্তানেরটাও ইংরেজি হবে। আর মা-বাবারটা আলাদা হলে তারা আবেদনই করতে পারবেন না। দু’জনেরটা এক ভাষায় করে নিতে হবে। এ ধরনের সমস্যা অনেক হচ্ছে।

চাঁদপুর : জন্মসনদ পেতে জমা দিতে হচ্ছে একগুচ্ছ কাগজ। তাও আবার হাতে পেতে সময় লাগে ১০ থেকে ১৫ দিন কিংবা কয়েক মাস। আবার অনেকে মাসের পর মাস ঘুরেও পাচ্ছেন না সনদ। কিছু কিছু গ্রাহকের অভিযোগ, দালালদের হাতে অতিরিক্ত টাকা দিলেই দ্রুত সনদ মেলে। তবে সংশ্লিষ্টদের দাবি, সার্ভার সমস্যার কারণেই সনদ দিতে দেরি হয়। চাঁদপুর পৌরসভা কার্যালয় থেকে জানানো হয়, জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে অনলাইন আবেদনপত্রের সাথে মা-বাবার জন্মসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, শিক্ষাগত যোগ্যতা বা বয়স প্রমাণের সনদপত্র, স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণপত্র বা হোল্ডিং নাম্বারের কাগজ এবং শিশুদের ক্ষেত্রে শিশুকার্ড (ইপিআই কার্ড) সংযুক্ত করে জমা দিতে হয়। পৌর কর্তৃপক্ষ নতুন জন্মনিবন্ধন সনদে ১০০ টাকা, সংশোধনীতে ২০০ টাকা ও প্রতিলিপির ক্ষেত্রে ১০০ টাকা ফি নেয়। তবে অনেকের কাছ থেকে ১০০০ টাকা নেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

টাঙ্গাইল : জেলার সদর পৌরসভায় জন্মনিবন্ধন সনদ নিতে এসে অনেকেই চরম ভোগান্তির অভিযোগ তুলেছেন। কর্তৃপক্ষ বলছে, দক্ষ জনবলের অভাবেই এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। শহরের কাগমারার বাসিন্দা ইকবাল বলেন, ‘নতুন জন্মনিবন্ধন করতে এসেছি। হাতে কাগজ নিয়ে এদিক-ওদিক ঘুরে করতে পারলাম না। অফিস বলছে সার্ভার বন্ধ। এ রকম নানা অজুহাত তারা প্রতিনিয়তই দিচ্ছে।’ টাঙ্গাইল পৌরসভার সচিব শাহনেওয়াজ পারভীন বলেন, সফটওয়্যার বেশ সমস্যা করছে।

শরীয়তপুর : জেলার ইউনিয়ন ও পৌরসভা থেকে জন্মনিবন্ধন সনদ তুলতে গিয়ে নানা ভোগান্তির অভিযোগ তুলেছেন সেবাপ্রার্থীরা। তারা জানান, জন্মসনদ পেতে তিন-চার মাস পর্যন্ত লেগে যায়। সনদ পাওয়ার পর দেখা যায় তাতে অনেক ভুল। সেই ভুল সংশোধন করতে গেলে নতুন করে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। শরীয়তপুর জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক আবেদা আফসারী বলেন, ‘৪৫ দিনের মধ্যেই জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন করার বিধান। কিন্তু মানুষ তা করে না। সময়মতো নিবন্ধন না করার কারণেই এই সমস্যা বাড়ছে।’

পিরোজপুরের ১০ উপজেলার ৫০টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ২টি পৌরসভায় এ কার্যক্রমে মানুষ এখন নাকাল। উপজেলা ও পৌরসভার সেবা প্রদানে যে ফি, তার চেয়েও দুই-তিন গুণ বেশি অর্থ দিতে হচ্ছে মানুষকে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ইউপি সচিব ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের চৌকিদাররাই নিয়ন্ত্রণ করছেন এই সেবা।

সারাদেশের স্থানীয় প্রশাসনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় সবখানেই জন্মনিবন্ধন করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবাপ্রার্থীরা। ইন্টারনেটের গতি কম, সার্ভার খারাপ ইত্যাদি অজুহাত দেখিয়ে সেবাপ্রার্থীদের দিনের পর দিন ঘুরানো হচ্ছে। তবে কোনো কোনো কেন্দ্রে অসাধু কর্মকর্তাদের হাতে কিছু টাকা তুলে দিলেই জন্মসনদ পাওয়া যায়।



 

Show all comments
  • Mujibur Rahman ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ২:৫৯ এএম says : 0
    এই ভোগান্তির ডিজিটালের চেয়ে এনালগই ভালো ছিলো
    Total Reply(0) Reply
  • তুষার আহমেদ ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ৩:০০ এএম says : 0
    এটা এখন সবচেয়ে বড় জাতীয় সমস্যা
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Sarwar Alam ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ৪:৩৪ এএম says : 0
    সরকার কি ওদের বেতন দেন জনগনের ভোগান্তি বাড়ানোর জন্যে ?
    Total Reply(0) Reply
  • গোলাম মোস্তফা ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ৪:৩৫ এএম says : 0
    ডিজিটালের কার্যক্রম চলছে অ্যানালগের থেকেও ধীর গতিতে!
    Total Reply(0) Reply
  • Amranul Haque ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ৪:৩৬ এএম says : 0
    বাংলাদেশ মানেই ভোগান্তি। এখানে জন্ম নেওয়াও একটা ভোগান্তি। সরকার জনগণের পকেট কেটে ট্যাক্স ই নেয় শুধু
    Total Reply(0) Reply
  • Nusrat Jahan ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ৪:৩৭ এএম says : 0
    আগে জন্মসনদ বাধ্যতামূলক ছিল না। তাই অনেকের মা বাবার জন্মসনদ নেই। এখন প্রথমে বাবা মায়ের জন্মসনদ বানাতে হবে তার পর আমাদের ভর্তি সংক্রান্ত কাজ সম্পাদন করতে হবে।সঠিক তথ্যের অভাবে কিভাবে কি করতে হবে তার কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।
    Total Reply(0) Reply
  • HM Mahfuj Alahi ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ৪:৩৭ এএম says : 0
    আরে আমি তো ১৫ বার গেছি তার পর ১৬ বারের সময় হয়েছে
    Total Reply(0) Reply
  • জসিম ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ৪:৩৮ এএম says : 0
    সার্ভার জটিলতা, লোকবল সংকট ও সমন্বয়হীনতার কারণে ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম চলছে অ্যানালগের থেকেও ধীর গতিতে। আবেদনের ১০ দিনের মধ্যে মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠানোর তারিখ দেয়া হলেও আবেদনকারীর মোবাইলে যাচ্ছে এক মাসেরও বেশি সময় পর। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, পাসপোর্ট ও বিবাহ নিবন্ধনের মত গুরুত্বপূর্ণ কাজে ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করায় তা পেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে
    Total Reply(0) Reply
  • মহিউদ্দিন ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ৯:৩৩ এএম says : 0
    এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে একমাত্র মহান আল্লাহ ছাড়া আর কোন বিকল্প অবশিষ্ট নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ৪:৫৭ পিএম says : 0
    উন্নত বিশ্বে তারা ইসলামের অনেক কিছু মানে তারা জনগণকে সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করে কোন কাজ করতে গেলে খুব সহজে করতে পারে আর আমাদের দেশে কোন কাজ করতে গেলে কত ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে হয় এই সরকার গুলা আমাদের জীবনটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে যদি আজকে আল্লাহর আইন দিয়ে দেশ চলতো তাহলে আমাদের জীবনটা খুব সহজ-সরল হতো
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ আনোয়ার হোসেন ৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১১:২৪ পিএম says : 0
    জন্মনিবন্ধন এর ভোগান্তি অতিদ্রুত সমাধানের জন্য কর্তাব্যক্তিরা একটু সুনজর দিলে হয়তো কিছুটা সমাধান সম্ভব।
    Total Reply(0) Reply
  • Saiful Islam ৮ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:৩৯ এএম says : 0
    গত সেপ্টেম্বর ১৬ তারিখ আইডি কার্ড সংশোধন এর জন্য সকল কাগজ পত্র জমা দেই। ফোন দিলে বলে স্যার আসলে দিবে, সার্ভারে সমস্যা। আজকেনা সামনের দিন দিবে। এমন করতে করতে তিন মাস চলেগেলো এখন পর্যন্ত আইডি কার্ড সংশোধন হচ্ছে না। কেন এত হয়রানি করছে?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জন্মনিবন্ধনে ডিজিটাল ভোগান্তি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ