Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

দ্রুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন দাবি

কক্সবাজার ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৬ এএম

 বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দ্রæত প্রত্যাবাসন, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অপরাধ দমন ও দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা বন্ধের দাবি জানিয়েছে ‹আমরা কক্সবাজারবাসী› সংগঠন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, বিগত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। দেশবাসী এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রের অনুরোধে ও মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেন। শুরুতেই রোহিঙ্গারা প্রায় ৭ হাজার একর বনভ‚মি ও বিভিন্ন প্রজাতির জীবজন্তুর আবাস্থল ধ্বংস করে। যা এ অঞ্চলের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র মারাতœক হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়ার পর থেকে বিশ্বের পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজারকে যেন অপরাধের স্বর্গরাজ্য হিসেবে গড়ে তোলে। কিছু কিছু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র তৈরির কারখানাও গড়ে তুলে। এসব অবৈধ অস্ত্র বিভিন্ন স্থানে সরবারহসহ নানাবিধ অপরাধ কর্মকাÐের জন্ম দিচ্ছে। তারা স্থানীয় ও নিজেদের লোকদের হত্যা, ধর্ষণ, স্থানীয়দের অপহরণ পূর্বক মুক্তিপণ আদায়, ডাকাতি, ছিনতাই, মানবপাচার, ইয়াবাসহ ভয়ংকর মাদক পাচার এবং স্থানীয়দের ঘর-বাড়িতে লুটপাট ও দখল ছাড়াও প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাÐে জড়িয়ে পড়ে। সর্বোপরী রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো যেন মাদক ও অস্ত্রের নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছে। ওখান থেকেই কক্সবাজার জেলাসহ সারাদেশে মাদক ও অস্ত্র পাচার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
আরো অভিযোগ রয়েছে, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছাড়াও দখল-বেদখল ও হত্যাকাÐে ভাড়াটিয়া হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। ইতোমধ্যে বহুবার অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে নানা ধরণের মাদক ও দেশি-বিদেশী অস্ত্র উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
রোহিঙ্গারা ডাটাবেজ এর আওতায় না থাকা এবং এ অঞ্চলের স্থানীয় মানুষের সঙ্গে ভাষাগত মিল থাকার সুযোগে তারা প্রায়-প্রতিদিনই রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বের হয়ে অবাধে বিচরণ করছে কক্সবাজারসহ সারাদেশের আনাচে-কানাচে। তারা এখানকার শ্রমবাজার দখলসহ বিভিন্ন স্থানে জমি ক্রয় করে গড়ে তুলছে স্থাপনা। একইভাবে কৌশলে নাগরিকত্ব লাভ করে বাংলাদেশের পাসপোর্ট ও জাতীয়তা সনদপত্র সংগ্রহ করে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়ে সেখানেও অপরাধ কর্মকাÐ সংগঠিত করছে। এতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘আরশা ও আল-ইয়াকিন’ নামের বিতর্কিত সংগঠন তাদের নিজস্ব মুদ্রা চালু করেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, কক্সবাজারবাসীকে ফিলিস্তিনের মতোই পরিণতি ভোগ করতে হবে। দেশি-বিদেশি এনজিওগুলো নিজেদের স্বার্থে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ঠেকানোসহ সকল অপরাধের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদদ দিয়ে আসছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সর্বোপরী দেশি-বিদেশি এনজিওর ষড়যন্ত্রের কারণে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের বহুমুখি অপরাধ কর্মকাÐের কাছে স্থানীয়রা জিম্মি ও আতংকিত হয়ে পড়েছে। ইতোপূর্বে বিশ্ব ব্যাংক রোহিঙ্গাদের স্থায়ী করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে প্রস্তাব দেয়ার কথাও শুনা গিয়েছিল। যা বাংলাদেশ সরকার প্রত্যাখ্যান করে। এজন্য সরকারকে জেলাবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান, আমরা কক্সবাজারবাসী সংগঠন।
এ সময় দ্রæত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, দেশি-বিদেশি এনজিওগুলোর অপতৎপরতা এবং ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবিতে আমরা কক্সবাজারবাসী সংগঠন জেলা ব্যাপী লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা করতে যাচ্ছে বলে হুসিয়ারী জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আমরা কক্সবাজারবাসী সংগঠনের সভাপতি- বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনসহ আমরা কক্সবাজারবাসী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ