বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মুকুল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামালকে সমার্থন দিয়ে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনসহ জেলার ৩ নেতা উপস্থিত ছিলেন। জাহাঙ্গীর আলম মুকুল দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে চামচ প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। গেল ২৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় ব্যালটে তার নাম ও প্রতীক যুক্ত থাকছে বলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ন কবির জানিয়েছেন। আগামি ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিব্য এবারে পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৭জন, ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৬৪ জন এবং তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৮ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলম মুকুল জানান, দীর্ঘ ৬ বছর ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। ২১ বছর পর ঝিকরগাছা পৌরসভা নির্বাচন হওয়ায় এবারই প্রথম তিনি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। মেয়র পদে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্য থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সংক্ষিপ্ত তালিকায় তার নাম ছিলো। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন তিনি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার কাছে মেসেজ ছিলো বর্তমান মেয়র ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামালের মনোনয়ন ঋণ খেলাপির দায়ে বাতিল হতে পারে। সেই কারণে আওয়ামী লীগের সার্পোট হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়ে ছিলাম। তবে পরবর্তীতে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আগের মূর্হেত পর্যন্ত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ আমার কাছে কেউ বলেনি যে, আপনার প্রার্থীতা প্রাত্যাহার করে নিতে। পরবর্তীতে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দলের মনোনীত প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ালাম। এ সময় নৌকার পক্ষে কাজ করারও অঙ্গীকার করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবুদ্দৌলা সরদার কনক, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ আতিকুর বাবু, সদস্য অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ২১ বছর পর আগামী ১৬ জানুয়ারি এ পৌরসভা নির্বাচনে ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে। এবার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থীর মধ্যে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের চার নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীরা হলেন, নৌকা প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল। চামচ প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মুকুল, নারিকেলগাছ প্রতীকে সাবেক সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক একেএম আমানুল কাদির টুল্লু, জগ প্রতীকে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ছেলিমুল হক সালাম, মোবাইল প্রতীকে যুবলীগ নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ শিপন, আব্দুল্লাহ আল সাঈদ রেলইঞ্জিন প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এছাড়া বিএনপি দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ না নিলেও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইমরান হাসান সামাদ নিপুন কম্পিউটার প্রতীক নিয়ে ঝিকরগাছা পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করছেন। এরমধ্যে গত ২ জানুয়ারি রোববার প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করে ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক একেএম আমানুল কাদির টুলু, আব্দুল্লাহ আল সাঈদ ও শিপন সরদারকে বহিস্কার করার ঘোষণা দেন জেলা সভাপতি শহিদুল ইসলাম। তবে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম মুকুলকে বহিস্কার না করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ঐ সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে জেলা সভাপতি বলেছিলেন, দু’দিনের মধ্যে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানার ঘোষণা দিবেন জাহাঙ্গীর আলম মুকুল। একারণে তাকে বহিস্কার করা হয়নি। ফলশ্রুতিতে মঙ্গলবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন এ প্রার্থী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।