পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বস্তি-সংলগ্ন এলাকার চেয়ে বস্তিতে বসবাস করা মানুষের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি বেশি পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) এর গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় অ্যাডভোকেসি সহায়তায় ছিল হেলথ ওয়াচ বাংলাদেশ। গতকাল সোমবার এ গবেষণার তথ্য প্রকাশ করা হয়।
২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামের বস্তি ও বস্তিসংলগ্ন এলাকায় বসবাস করেন এমন মানুষদের মধ্যে এ জরিপ চালানো হয়েছিল। এর মধ্যে ঢাকার ৪টি (কড়াইল, মিরপুর, ধলপুর ও এরশাদ নগর) এবং চট্টগ্রামের দুটি (শহীদ লেন এবং আকবর শাহ কাটা পাহাড়) বস্তি জরিপের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। ঠিক একই সময়ে দুই শহরে বস্তি ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় চালানো হয়েছিল জরিপ। দৈবচয়নের ভিত্তিতে জরিপের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। অর্থাৎ বাড়ি বাছাই কিংবা মানুষ বাছাই সব ক্ষেত্রে এই দৈবচয়ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে যেসব ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে তাদের বয়স ১০ বছর কিংবা তার বেশি।
এই জরিপ চালানোর জন্য একটি প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছিল। জরিপে অংগ্রহণকারী ব্যক্তি গত ছয়মাসে করোনার সংক্রমণ এড়াতে কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল কি না, ব্যক্তির সামাজিক অবস্থান (বয়স, লিঙ্গ, বৈবাহিক অবস্থা, ধর্মসহ অন্যান্য), ব্যক্তির দীর্ঘমেয়াদী কোনো স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে কি না, করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ দেখা দিয়েছিল কি না, বাসায় কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল কি না, শরীর চর্চা বা কায়িক শ্রম করেন কি না এবং বিসিজি টিকা নেওয়া হয়েছিল কি না।
এছাড়া জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তির উচ্চতা, ওজন ও রক্তচাপ পরিমাপ করা হয়েছিল এবং তাদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। করোনাভাইরাস, রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস (আরএসভি), হিউম্যান করোনাভাইরাস (এইচকভ-এইচকেইউ-১), ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস বি, প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, ডেঙ্গু ভাইরাস, চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের এন্টিবডি এই ব্যক্তিদের শরীরে ছিল কি না তাও পরীক্ষা করা হয়েছিল। এছাড়া রক্তে ভিটামিন ডি ও জিংকের মাত্রাও পরীক্ষা করা হয়েছিল।
গবেষণার ফলাফল : ১. সামগ্রিকভাবে বস্তি-সংলগ্ন এলাকার (৬২.২%) তুলনায় বস্তিতে বেশি সংখ্যক মানুষের (৭১.০%) শরীরে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল। আবার চট্টগ্রামের (৫৪.২%) তুলনায় ঢাকার (৭২.৯%) বেশি সংখ্যক মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গিয়েছিল। ২. জরিপে যারা অংশ নিয়েছে তাদের ৩৬ শতাংশ মানুষের মধ্যে চলমান অথবা পূর্ববর্তী ৬ মাসের মধ্যে করোনার মতো উপসর্গ ছিল। এদের মধ্যে জ্বর, শুষ্ক কাশি, গলা ব্যাথা অথবা একই সঙ্গে করোনার তিনটি উপসর্গই উপস্থিত ছিল। তাদের মধ্যে উপসর্গহীন মানুষের তুলনায় করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডির উপস্থিতি বেশি ছিল। ৩. নিম্ন আয়ের মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি বেশি ছিল। ৪. শারীরিক গঠনের তুলনায় ওজন বেশি এমন মানুষের শরীরে বেশি অ্যান্টিবডির উপস্থিত ছিল। ৫. যারা নিয়মিত হাত ধুয়ে থাকেন, মুখে কিংবা নাকে হাত দেন না, বিসিজি টিকা নিয়েছেন এবং মধ্যমানের কায়িক শ্রম করেন এমন ব্যক্তিদের সার্স কভ-২-তে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম ছিল। ৬. যারা এর আগে রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) অথবা হিউম্যান করোনাভাইরাসে (এইচকভ-এইচকেইউ-১) আক্রান্ত হয়েছেন, তারা করোনাভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার কম ঝুঁকিতে ছিল। অন্যদিকে যারা ডেঙ্গু অথবা চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন তারা করোনাভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকিতে ছিল। ৭. যারা করোনায় আক্রান্ত হননি, তাদের তুলনায় যারা এতে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের রক্তে জিংকের মাত্রা যথাযথ পরিমাণে ছিল। ৮. জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের শরীরে ভিটামিন-ডি এর অভাব উল্লেখযোগ্য হারে লক্ষ্য করা গেছে। তবে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি অ্যান্টিবডির ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলেনি। অর্থাৎ, অ্যান্টিবডি রয়েছে এমন মানুষের শরীরে ভিটামিন ডি বেশি বা কম এমনটা লক্ষ্য করা যায়নি।
সুপারিশ : ১. সংক্রমণের মাত্রা বুঝতে অ্যান্টিবডি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। ২. মহামারি সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান ঘাটতি কমিয়ে আনতে হবে। ৩. বস্তিবাসী কারো মধ্যে করােনার উপসর্গ দেখা দিল কি না তা জানার জন্য পদক্ষেপ বাড়াতে হবে। ৪. করোনার উপসর্গ নিয়ে পক্ষপাতমূলক তথ্য সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। ৫. বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। ৬. গ্রাম ও শহর অঞ্চল লক্ষ্য করে আরও জরিপ, কঠোর নজরদারি চালাতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।