রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
১৯২০ সালের সাবেক মহকুমা শহর রামগড়। আজ রামগড় স্থলবন্দর নির্মাণে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যবদলের আশা করছেন। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা রামগড় উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মহামনি এলাকায় ফেনী নদীর ওপর বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ গত বছরের ৯ মার্চ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে শুভ উদ্বোধন করেন। যার ফলে রামগড় স্থলবন্দরের স্থাপনা দ্রুত এগিয়ে যাওয়ায় পার্বত্যাঞ্চলের লাখো মানুষের ভাগ্যবদলসহ আর্থিক উন্নতির দ্বার খুলে যাবে এমন আশার আলো দেখছেন। এদিকে বাংলাদেশ-ভারতের দু’দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন সময়ে পরির্দশনকালে সাংবাদিকদের জানান, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ অতুলনীয়ভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। রামগড় স্থলবন্দর তারই একটা অংশ এবং বাংলাদেশ ও ভারত মৈত্রীবন্ধন পুরোদমে চালু হলে স্থলবন্দটি দু’দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য, সাংস্কৃতিক, উচ্চ শিক্ষা, পর্যটনসহ সুসম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করবে।
রামগড় পৌর মেয়র মো. রফিকুল আলম কামাল বলেন, রামগড় স্থলবন্দরের কাজ এগিয়ে যাওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ অর্থনীতিতে অবদান রাখাসহ আর্থিক উন্নতির দ্বার খুলে যাবে বলে মনে করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা মজুমদার বলেন, রামগড় স্থলবন্দর পুরোদমে চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্য, উচ্চশিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে দুই দেশের মানুষ উপকৃত হবে।
রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারী বলেন, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ সেতু উদ্বোধরে পর পরবর্তীতে স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাওয়ায় পার্বত্যবাসী আশার আলো ইতোমধ্যে দেখা শুরু করে দিয়েছে।
সংশিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে স্থলবন্দরকে ঘিরে ১০ একর জায়গায় বন্দর টার্মিনাল, সড়কপথ, গুদামঘর, চেকপোস্ট, কাস্টমস ও বিজিবি’র জন্য জমি অধিগ্রহনসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এদিকে রামগড়-হেঁয়াকোন্ড বারৈয়ারহাট সড়কে ১৬টি সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের পথে। প্রধান সড়ক প্রশস্তকরণসহ ৭ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেট)-এর চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুমোদন দেয়া প্রকল্পের কাজ চলমান। প্রকল্পটি ৩ হাজার ৪৬১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ধরা হয়। তার মধ্যে ২ হাজার ৬১৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা সরকার দেবে, বাকি ৫৮১ কোটি ২০ লাখ টাকা বিদেশি ঋণ এবং ২৬০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বিশ্ব ব্যাংকের অনুদান।
এদিকে ৬ নভেম্বর সর্বশেষ রামগড় স্থলবন্দর সরেজমিনে পরির্দশনকালে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, রামগড় স্থলবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণে বিশ্ব ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে এ ব্যয় বহন করবেন। তিনি আরো বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের আপামর জনগন এবং ত্রিপুরাসহ সাতটি রাজ্যের বাসিন্দারা ভ্রমনের সুযোগ এবং সবচেয়ে বড়কথা দুদেশের কানেকটিভিটি বৃদ্ধি পাবে।
উল্লেখ্য, গত ২০১৫ সালের ৬ জুন ঢাকা সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামগড় স্থলবন্দর ফেনী নদীর উপর বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু ১-এর ভিত্তিপ্রস্তর প্রতিস্থাপন আনুষ্ঠানিকভাবে শুভ উদ্বোধন করেন। যার ফলে দীর্ঘ দিনের আশা পুরন হতে যাচ্ছে রামগড় স্থলবন্দর।
এদিকে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ সম্প্রতি উদ্বোধনরে পর পরর্বতীতে স্থলবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ দ্রæত গতিতে এগিয়ে যাওয়ায় অত্র অঞ্চলের মানুষের মাঝে আনন্দের জোয়ারে ভাসছে। অপরদিকে-স্থানীয় ব্যবসায়ী ও দু’দেশের আমদানি-রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশের পার্বত্য খাগড়াছড়ি রামগড়-ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুম মহকুমা শহর এর দু’দেশের শুল্ক স্টেশনটি দ্রুত চালুর দাবি জানান। আগে থেকে শুল্ক স্টেশনটি চালু হলে প্রতি বছর বারণী স্নানোৎসব উপলক্ষে দু’দেশের লাখো মানুষের মিলন মেলা থেকে রাজস্ব আয় পেতো রাষ্ট্র এবং রামগড় স্থলবন্দর পুরোদমে চালু হলে এলাকার অনেক বেকার সমস্যা সমাধানসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের জনসাধারনের অনেকটা পরিবর্তনে খুলে যাবে অর্থনীতিসহ উন্নয়নের দ্বার।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যসহ মেঘালয়, আসাম, মনিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড এবং অরুণাচলসহ এ সাতটি রাজ্যের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষে দু’দেশের সরকার প্রধান এ উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি মনে করেন, পুরোদমে স্থলবন্দর চালু হলে দুদেশের সার্বিক উন্নয়নসহ সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ় হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।