পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও সংস্থাটির সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার (প্রত্যাহার) জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। চিঠির বিষয়বস্তু জানাতে গিয়ে গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে ফোনে আলাপের বিষয়গুলোই চিঠিতে লিখেছি। যুক্তরাষ্ট্র পুলিশ প্রতিবছর হাজার মানুষকে মেরে ফেলে। সেখানে ১০ বছরে বাংলাদেশে ৪০০ জন মারা যাওয়ায় তাদের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার ঘটনায় হাসির খোরাক তৈরি হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেয়া চিঠিতে কী লেখা হয়েছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনাদের দেশে (যুক্তরাষ্ট্রে) তো বহু লোক মারা যায়। প্রতিবছরই হাজারখানেক লোককে পুলিশই মেরে ফেলে। তো আপনারা ওইগুলোকে বলেন ‘কিলিং দ্য লাইন অব ডিউটি’। আর আমাদের দেশে যখন এমন হয় তখন এ দেশের পত্রিকা বলে, এটা হয়েছে এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং।
তিনি বলেন, দুটোই এক্সট্রা জুডিশিয়াল। কারণ তারাও আইনের পথে যায় না। ওখানেও পুলিশ মেরে ফেলে, এখানেও মেরে ফেলে। কিন্তু সংখ্যায়, আপনার দেশে তো বছরে হাজারখানেক মারে। আর বলছেনধ এখানে ১০ বছরে ৪০০ লোক মেরে ফেলেছে। এগুলো তো হাসির খোরাক। মনে হচ্ছে, ওদের এই জিনিসগুলো ঠিক হয়নি। এগুলোই আমরা চিঠিতে লিখেছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বিøঙ্কেনের সঙ্গে যখন আলাপ হয় তিনি তখন ডেমোক্রেসির কথা বলেছিলেন। বিøঙ্কেন বলেছেন বাইডেন সরকারের ম্যান্ডেট হচ্ছে মানবাধিকার এবং গণতন্ত্র। আমরা বলেছি, হ্যাঁ, গণতন্ত্রের কারণেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আমাদের দেশের ভিত্তিটাই হচ্ছে গণতন্ত্র। যুক্তরাষ্ট্রে ২৬ শতাংশ মানুষ যদি ভোট মোটামুটি দেয় তাহলে ভালো নির্বাচন হয়েছে। আর আমার এখানে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ভোট দেয়া নরমাল বিষয়। আমাদের এখানে মানুষ এ বিষয়ে খুবই সচেতন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিøঙ্কেন মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেছেন। আমি বলেছি, আমরা সব সময় এটা নিয়ে সোচ্চার এবং এ নিয়ে আমাদের কোনো কম্প্রোমাইজ নেই। এমনকি র্যাব যেখানে বাজে কাজ (মানবাধিকার লঙ্ঘন) করেছে, সেখানে শাস্তি হয়েছে। এই চিঠি কত তারিখে দেওয়া হয়েছে এবং জবাব এসেছে কি? এ প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখনতো তারা ছুটি কাটাচ্ছে। পরে হয়তো জানাবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছে, ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের আশাবাদ ব্যক্ত করার পাশাপাশি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমন ও মাদকবিরোধী কর্মকান্ডে র্যাবের ভ‚মিকার কথা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন আব্দুল মোমেন। বিøঙ্কেনকে পাঠানো চিঠিতে র্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার বিষয়টি রয়েছে।
গতকাল সিলেটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন সংলাপে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত (নিষেধাজ্ঞা) অপ্রত্যাশিত। র্যাব প্রতিষ্ঠান হিসেবে যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য। প্রতিষ্ঠানটির কারণে সন্ত্রাস, মাদক ও মানবপাচার কমেছে। তাই এই সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে তাজ্জব মনে হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের বিষয়টি যাচাইয়ের সুযোগ আছে। আমরা সে কথাটাই আবার চিঠিতে লিখেছি। মানবাধিকারের বিষয়ে আমরা সোচ্চার। এ নিয়ে আমরা আপস করি না।
বাংলাদেশে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাব ও সংস্থাটির সাবেক-বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর গত বছরের ১০ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দফতর।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে র্যাবের সাবেক ডিজি ড. বেনজীর আহমেদ রয়েছেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের আইজি। বেনজীর আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দফতর। পাশাপাশি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞার আওতায়ও পড়েছেন।
এ ছাড়া র্যাবের বর্তমান ডিজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত ডিজি (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত ডিজি (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত ডিজি (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত ডিজি (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র্যাব-৭-এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর সে দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ২০১৮ সালের মে মাসে কক্সবাজারের টেকনাফে পৌর কাউন্সিলর একরামুল হককে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে সম্পৃক্ততার জন্য এ দুজনের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি বিøঙ্কেন ফোন করেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনকে। তাঁদের সেই ফোনালাপে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বাংলাদেশকে অবহিত করার অনুরোধ করেছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, র্যাব কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ল’ফার্ম নিয়োগ দেওয়ার কথা ভাবছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।