রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এখন ইন্টার্ন চিকিৎসকদের রাজত্ব চলছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনুপস্থিতিতে চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি নিয়ম বর্হিভুতভাবে রোগীকে রেফার্ড করাসহ মৃত্যু ঘোষণাও করছেন তারা। অভিযোগ উঠেছে, ইন্টার্নদের ওপর ভর করেই সরকারি হাসপাতালে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন না অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তারা ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বসে থাকেন। বিশেষজ্ঞরা শুধু খাতা কলমে রয়েছেন। আর সব কিছু করছেন ইন্টানরা।
যশোর ২৫০ শষ্যা জেনারেল হাসপাতালে যশোর ছাড়াও নড়াইল, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার রোগীরা চিকিৎসরা নেন। প্রতিদিন বহি:বিভাগে এক হাজার রোগী চিকিৎসা গ্রহন করে থাকে। আর ভর্তি থাকে গড়ে সাড়ে ৩শ রোগী। জরুরি চিকিৎসা সেবা মূলত এখানেই হয়ে থাকে।
যেকারণে সাধারণ রোগীদের ভরসার জায়গা হাসপাতালটি। কিন্তু দিন দিন ভেঙ্গে পড়ছে হাসপাতালটির চিকিৎসা ব্যবস্থা।
গত ১৮ ডিসেম্বর যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কে হৈবতপুরের কাজী নজরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের কাছে ট্রাকের ধাক্কায় থ্রি- হুইলারের চালক রুহুল হোসেন(৫০) আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তার অবস্থা গুরুতর হলেও কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আসেননি। দীর্ঘ সময় পর দুই জন ইন্টার্ন আসেন। রোগীর প্রেসার মাপেন। এরপর মৃত ঘোষণা করেন। রোগীর স্বজন সোহরাব হোসেন জানিয়েছিলেন, এক প্রকার বিনা চিকিৎসায় রুহুল আমিনের মৃত্যু হয়।
ভুক্তভোগী আরেক রোগীর স্বজন জানান, ২৪ ডিসেম্বর চাচড়া ইউনিয়নের ভাতুড়িয়া বাজারে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে জিহাদ হোসেন(১৮) জখম হয়। তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কোন বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা রোগীর ভাগ্যে জোটেনি।
একজন ইন্টার্ন রোগীর চিকিৎসা দিয়েছেন। গত ৫ নভেম্বর ছুরিকাহত হয়ে ভর্তি হন আজগর আলী (৬০)। তার বুকের আঘাতটি গুরুতর হলেও কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাকে দেখতে আসেননি। পরে একজন ইন্টার্ন তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে দেন।
ওয়ার্ডে দায়িত্বরত একজন জ্যেষ্ঠ সেবিকা জানান, নিয়ম অনুযায়ী রোগী ভর্তির পর একজন ইন্টার্ন আসবেন। তিনি রোগীর অবস্থা দেখে সহকারী রেজিস্ট্রারকে জানাবেন। সহকারী রেজিস্ট্রার রোগী দেখে অবস্থা অনুযায়ী অনকলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে ডাকবেন। কিন্তু এসব নিয়ম মানেন না ইন্টার্নরা।
আরেক সেবিকা জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দায়িত্বে রোস্ট্রার করে দিয়েছেন। কিন্তু অধিকাংশরা সঠিকভাবে ওয়ার্ড রাউন্ডে আসেননা। একাধিক রোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন, দুপুরের পর থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত বিশেষজ্ঞদের সরকারি হাসপাতালে দায়িত্ব পালনে আসেননা। ইন্টার্নদের ওপর ভর করে তারা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বাণিজ্যে ব্যস্ত থাকেন। সরকারি হাসপাতালে রোগীরা ভর্তি হয়ে বিশেষজ্ঞদের পরিবর্তে ইন্টার্নদের চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশেষজ্ঞরা মাঝে মাঝে ওয়ার্ড রাউন্ডে গেলেও তড়িঘড়ির কারণে রোগীরা ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না। তাদের অনিয়মের কারণে রোগীরা সরকারি হাসপাতালে সঠিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে অনেকেই সরকারি হাসপাতাল ছেড়ে ক্লিনিকে চলে যেতে বাধ্য হন। এতে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত বাণিজ্য আরও বেড়ে যায়।
সূত্র জানায়, বর্তমানে হাসপাতাল চলছে ইনটার্ন দিয়ে। সাধারণ রোগীদের সাথে তারাও খুব রুঢ় আচরণ করেন। তাদের আক্রমন থেকে রক্ষা পাননি হাসপাতালের কর্মচারি মেহেদি হাসান। সামান্য কারণে ইন্টার্নরা মিলে তাকে মারপিট করেন। এছাড়া ইন্টার্ন চিকিৎসকদের চুক্তিপত্রের অঙ্গিকার মানছেন না। তারা যা ইচ্ছা তাই করছেন
হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, বিগত দিনের তত্ত¡াবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ হাসপাতালের ঘোষণা দিয়েছিলেন কোন ইন্টার্ন রোগীর মৃত্যু ঘোষণা দিতে পারবেন না। এছাড়া রোগীকে রেফার্ড ও ছাড়পত্র তারা দেবেন না।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মকান্ড নিয়ে নানা কথা শোনা যাচ্ছে। আগামীতে কর্তৃপক্ষের মিটিংয়ে বিষয়গুলো সমাধান করা হবে। আরএমও আরো জানান, ইন্টার্নদের ওপর ভর করে সরকারি হাসপাতালে দায়িত্ব পালন না করে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিকে ব্যস্ত থাকার বিষয়টি খোঁজ নেয়া হবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবগত করব।
সরকারি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করার বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান জানান, তার জানা মতে অনকলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগীর কাছে আসেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।