Inqilab Logo

রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

২ ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে গোদাগাড়ীর সেই কলেজ অধ্যাপক বরখাস্ত।

গোদাগাড়ী ( রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ৪:৪৮ পিএম

 কোচিংয়ে দুই ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে রাজশাহীর রাজশাহীর রাজাবাড়ী ডিগ্রি আহাদুজ্জামান নাজিমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি কলেজ অধ্যক্ষ সেলীম রেজা নিশ্চিত করেছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টার সময় কলেজে গর্ভনিং বডির জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় নাজিমের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলা গ্রহন করা হয়েছে।

রাজাবাড়ীহাট ডিগ্রি কলেজের উৎপাদন ও বিপণনের বিভাগের প্রভাষক আহাদুজ্জামান নাজিম
কতৃক নিজ কোচিং সেন্টারে ২ ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ, থানায় মামলা দায়ের, নাজিমকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে দৈনিক ইনকিলাবসহ জাতীয়,স্থানীয়, অনলাইন পত্রিকায় বিস্তর লেখালেখি হয়। ফেসবুকে শিয়ার হলে শ শ ছাত্র ছাত্রী অভিভাবক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ নেগেটিভ মন্তব্য লিখে শাস্তি দাবি করেন। দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। বিষয় কলেজ কতৃপক্ষের নজরে আসে, জরুরী সভা ডেকে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়।

এলাকাবাসি ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী নগরীর মহিষবাথান এলাকায় নাজিমের একটি কোচিং সেন্টার আছে। এটির নাম ‘নাজিম প্রাইভেট সেন্টার’। এখানে গত মঙ্গলবার দশম শ্রেণি পড়ুয়া দুই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে গত শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে এবং জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।

এজাহারের বরাত দিয়ে নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার বিকেলে কোচিংয়ে দুই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ঘটান প্রভাষক নাজিম। ওই দুই ছাত্রীকে ফুসলিয়ে মোটরসাইকেলে তুলে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেন। ওই দুই ছাত্রী তাঁর সঙ্গে না গিয়ে বাড়ি চলে যায়। এরপর কোচিংয়ে আসা বন্ধ করে তারা। পরে শনিবার এক ছাত্রীর সহপাঠী ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাড়ি গিয়ে তাঁর অভিভাবককে ঘটনাটি সম্পর্কে জানায়। এরপর ওই দুই ছাত্রীর অভিভাবকসহ অন্য অভিভাবকেরা শনিবার সন্ধ্যায় কোচিং সেন্টারটি ঘেরাও করে পুলিশে খবর দেন। এরপর পুলিশ গিয়ে নাজিমকে থানায় নিয়ে আসে। এ নিয়ে রাতেই এক ছাত্রীর অভিভাবক বাদী হয়ে শিক্ষক নাজিমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। গত রোববার সকালে নাজিমকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অভিভাবকগণ জানান, সরকারি নির্দেশ মতে, প্রাইভেট ও কোচিং বানিজ্য নিষিদ্ধ থাকলেও বাজশাহী শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় দেদারসে চলছে এ অবৈধ কারবার। এ নিয়ে অহরহ ঘটছে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষদের অনৈতিক কারবার। সহস্যজনক কারণে প্রশাসন রয়েছে নিরব দর্শকের ভূমিকায়।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, আহাদুজ্জামান নাজিম রাজাবাড়ীহাট ডিগ্রি কলেজের উৎপাদন ও বিপণনের বিভাগের প্রভাষক। তবে নিজের কোচিংয়ে তিনি ইংরেজি পড়াতেন। তিনি মাঝে মাঝেই নানা অজুহাতে ছাত্রীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিতেন। লজ্জায় কেউ কিছু না বলে কোচিংয়ে আসা বন্ধ করে দিত। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নাজিম। নাজিম একাধিক বিয়ে করেছেন বলে এলাকাবসি জানান। কয়েক বছর আগে রাজবাড়ী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীদের হাতে তিনি লাঞ্চিত হয়েছিলেন বলে কলেজ শিক্ষার্থী দাবী করেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করা হয়ে ছিল।

এ ব্যপারে রাজাবড়ি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ সেলীম রেজা জানান, কলেজ গর্ভনিং বডির ১১ জন সদস্যের উপস্থিতিতে তাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আজ ২৮ ডিসেম্বর হতে কার্যকর হবে, তিনি আরও জানান বরখাস্ত থাকাকালীন সময়ে বিধিমোতাবেক অর্ধেক বেতন পাবেন। কারন দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে, ৭ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ