পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজ থেকে বুস্টার ডোজ শুরু করা হচ্ছে। সারা দেশে নয় আপাতত অল্প কিছু কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক বুস্টার দেয়া হবে। যাদের বুস্টার ডোজ দেয়া হবে, আগে থেকেই তাদের মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠিয়ে জানিয়ে দেয়া হবে। ম্যাসেস না পেলে কেউ কেন্দ্রে গিয়ে বুস্টার নিতে চাইলে, তারা বুস্টার পাবেন না। শুধু তারাই বুস্টার নিতে যাবেন, যারা মোবাইলে ম্যাসেজ পাবেন।
গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ইন্টিগ্রেটেড বায়ো-বিহেভিওরাল সার্ভিল্যান্স- আইবিবিএস অব এইচআইভি ২০২০ শীর্ষক এক সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন এসব তথ্য জানান।
লোকমান হোসেন বলেন, আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে বুস্টার ডোজ শুরু হচ্ছে। দেশের সবাইকেই দুই ডোজ টিকা অবশ্যই নিতে হবে। আপনারা দেখেছেন গত কিছু দিনে ওমিক্রনের কারণে বিশ্বে হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল হয়ে গেছে। আমাদের এখানে কিছু পরিমানে ওমিক্রন পাওয়া গেছে এটা সবাই জানে। ওমিক্রনের থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে টিকা নিতে হবে ও মাস্ক পরতে হবে। এ বিষয়ে আমরা স্থানীয় ইউনিয়ন ও পৌরসভা পর্যায়েও কথা বলেছি যাতে সেসব এলাকার রিকশাওয়ালা থেকে সবাই টিকা নেয়।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর ডা. আহদেমুল কবির বলেন, যেহেতু আমাদের সব ইনফরমেশন রক্ষিত আছে, যে যে কেন্দ্রে টিকা দিয়েছেন, সেই কেন্দ্র থেকে এসএমএস পাঠানো হবে। যিনি এসএমএস পাবেন তিনিই টিকা দিতে আসবেন। এসএমএস না পেলে উনি আসবেন না। কারণ এটি একটু ডিসিপ্লিন ওয়েতে এবং তাদের একটু কেয়ারফুলি বুস্টার দেয়া হবে। কারণ দিতে এসে সে আবার সংক্রমতি হোক এটা আমরা চাই না। সুতারাং যারা টিকা পাবেন, তাদের আগে এসএমএম দেয়া হবে।
সারা দেশে দেযয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারাদেশে না। নির্দিষ্ট কয়েকটা জায়গায় বুস্টার দেয়া হবে। সুরক্ষা অ্যাপসকে এটার সঙ্গে একই সাথে আবার আপডেট করা এটা কিন্তু অনেক কাজ। এখনো কাজ চলছে। এটি কিন্তু এখনো পুরোপুরি কম্পিলিট হয়নি। যে কারণে টেক্স ম্যাসেজ দিয়ে সল্প পরিসরে শুরু করা হচ্ছে। এটা তো একটা ট্রানজিকশন। একটা থেকে আরেকটা কাজে যাওয়া। যে কারণে সবসময় ট্রায়াল বেসিসে যেতে হয়।
ডা. আহদেমুল কবির বলেন, বাল্ক লোককে যদি আমরা টেক্স দিয়ে দেই তাহলে আমরা সমস্যাগুলো বুঝতে পারবো না। মঙ্গলবার থেকে আমরা আবার টেক্স করে পরীক্ষামূলক বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করছি। যে যে চ্যালেঞ্জেস গুলো আমরা ফেস করবো যাতে সেগুলো আমরা কারেক্ট করতে পারি।
এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর ট্রায়ার বেসিসে বুস্টার ডোজ প্রয়োগ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এ দিন ছয়জন মন্ত্রীসহ ৬০ জনকের বুস্টার ডোজ প্রয়োগ করা হয়। তাদের কারো শরীরে এখন পর্যন্ত কোনো পাশর্^ প্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে সভায় দেশে এইডস আক্রান্ত হওয়ার পর রোগীদের চিকিৎসা সেবার আওতায় নিয়ে আসার হার প্রতি বছর বাড়ছে বলে জানান বক্তারা। তারা জানান, দুই বছর আগেও চিকিৎসা সেবার আওতায় থাকা রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৫ শতাংশ। কিন্তু বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ৭৭ শতাংশ। জাতিসংঘের চাহিদা অনুযায়ী এ লক্ষ্য ৯৫ শতাংশ। আগামী ৫ বছরের মধ্যে এই লক্ষ্য অর্জনে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন নীতিনির্ধারকরা।
দেশের গে বা পুরুষ সমকামী ও ট্রান্সজেন্ডার জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্তের হার বেড়েছে বলে স¤প্রতি একটি জরিপে উঠে এসেছে। দেশের ১২টি জেলায় এইচআইভি ভাইরাসের ঝুঁকিপূর্ণ চারটি জনগোষ্ঠীর ওপরে এই জরিপ চালানো হয়।
বিএসএমএমইউ’র ভাইরোলজি বিভাগের এ জরিপে নারী যৌনকর্মী, পুরুষ সমকামী, ট্রান্সজেন্ডার এবং ইনজেকশনের মাধ্যমে রক্তের শিরায় মাদক গ্রহণকারী– এ চার জনগোষ্ঠীর ৯ হাজার লোকের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এদের মধ্যে ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক নেয়া জনগোষ্ঠী ৩ হাজার ৮০ জন, নারী যৌনকর্মী ৩ হাজার ১১ জন, পুরুষ সমকামী ২ হাজার ৭৮ জন ও ট্রান্সজেন্ডার ১ হাজার ৭২ জন। এদের বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।
জরিপের ফলাফলে উঠে এসেছে, ২০১৭ সালে পুরুষ সমকামীদের এইচআইভিতে আক্রান্ত হওয়ার হার ছিল শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ; তা ২০২০ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। একই সঙ্গে ট্রান্সজেন্ডারদের মধ্যে ২০১৭ সালে এইচআইভি আক্রান্তের হার ছিল শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ; যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ২ শতাংশ। জরিপের ফলাফল বলছে, নারী যৌনকর্মী ও শিরায় মাদক গ্রহণকারীদের মধ্যে গত জরিপের তুলনায় এইচআইভি আক্রান্তের হার কমেছে।
এ ছাড়া চার জনগোষ্ঠীর মধ্যে আগের তুলনায় সক্রিয় সিফিলিসের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। গত ২০১৭ সালে এ হার ৪ দশমিক ৮ শতাংশ থাকলেও তা বেড়ে ১১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই হারকে উদ্বেগজনক বলছে বিশেষজ্ঞরা।
জরিপ দলের প্রধান ছিলেন বিএসএমএমইউর ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সি। তিনি জানান, আগের জরিপগুলোতে আমরা দেখেছি, ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় মাদক গ্রহণকারীদের মধ্যে এইচআইভিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি ছিল। তবে এই জরিপে বিপরীত প্রবণতা লক্ষ করা গেছে।
তিনি জানান, এইচআইভি ছাড়াও হেপাটাইটিস-বি ও হেপাটাইটিস-সি রোগের ওপরেও জরিপ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ইনজেকশনের মাধ্যমে রক্তের শিরায় মাদক গ্রহণকারীদের মধ্যে এখনও হেপাটাইটিস-বি ও হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস বেশি লক্ষ করা গেছে।
ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সি জানান, উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের এইচআইভি ভাইরাস রুখতে যেসব কর্মসূচি চলমান রয়েছে, এগুলো আরও শক্তিশালী করতে হবে। সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, এগুলো আরও বেগবান করতে হবে।
ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ও বিএসএমএমইউ’র সাবেক ভিসি প্রফেসর নজরুল ইসলাম বলেন, শিরায় মাদক গ্রহণকারী, নারী যৌনকর্মী, সমকামী/পুরুষ যৌনকর্মী এবং ট্রান্সজেন্ডারÑএই চার ধরনের জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি/এইডসের ঝুঁকি বা যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের মধ্যে এই রোগ সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। এটি নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে। স্বাভাবিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই রোগ যাতে না ছড়ায়, সেদিকে এখন থেকে নজর দিতে হবে।
দেশে এইডস পরিস্থিতি
বর্তমান বিশ্বে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৮০ লাখ। এর মধ্যে নতুন আক্রান্ত ১ কোটি ৮০ লাখ। দেশে বর্তমানে এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার। চিকিৎসার আওতায় এসেছে মাত্র ৭ হাজার ৩৭৪ জন। এখনও শনাক্তের বাইরে রয়ে গেছে প্রায় ৭ হাজার। এদের মধ্যে রোহিঙ্গা ১০৫ জন।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।