Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেদখলে ৩ হাজার ৪শ’ একর বনভূমি

এস কে সাত্তার, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

বেদখল হয়ে গেছে ঐতিহ্যাহী গারো পাহাড়। সীমান্তবর্তী শেরপুরের পাহাড়ি অঞ্চল ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ি উপজেলার ২৮ হাজার ২৫১.৫৯ একরের বিশাল বনভূমির ৩ হাজার ৩শ’ ৯১.১৭ একর বনভ‚মিই বেদখল হয়ে গেছে। বেদখলের পরিমাণ আরো বেশি হবে বলে স্থানীয়রা জানান।
বন ধ্বংস করে জনবসতি গড়ায় আশ্রয়স্থলের অভাবে জীববৈচিত্র চরম হুমকী ও বিলুপ্তির পথে। অভিযোগ উঠেছে, বনবিভাগের তৎকালিন দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তাদের যোগশাজসেই বনভূমি বেদখল হয়েগেছে। ফলে একদিকে
আশ্রয়স্থলের অভাবে জীববৈচিত্রও বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অপর দিকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে। তেমনই জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা ও হুমকীর মূখে পড়েছে।
প্রাচিনতম ঐতিহ্যবাহী গারো পাহাড়ও আজ ধ্বংসের শেষ প্রান্তে। পাহাড় ভরা নানা প্রজাতির প্রাণীবৈচিত্র ও জীববৈচিত্র ওআজ বিলুপ্তির পথে। অথচ দেড় যুগ আগেও ছোট-বড়- মাঝারি পাহাড়ি টিলায় ছিল অসংখ্য বন্যপ্রাণির আশ্রয়স্থল। চষে বেড়াতো হাতি, বাঘ, ভালুক, হরিণ, মেছোবাঘ, বানর, হুনুমানসহ জীব-জন্তুু। নানা প্রজাতির পাকপাখালীর কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত থাকতো গোাঁ বনাঞ্চল। বন্যপ্রাণি-জীববৈচিত্রও আজ বিপন্ন। এখন পশু-পাখি, স্তন্যপায়ী, বিভিন্ন প্রজাতি চোখেই পড়ে না। শতবর্ষী ডা. আব্দুল বারী ও সরোয়ার্দী দুদু মন্ডল জানান, ঘনজনবসতি ও বন ধ্বংসের কারণে জীববৈচিত্র বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
রাংটিয়ার অবৈধ বাড়ির মালিক ‘মানিক’ জানান, অনেকেই বাড়িঘর করে বসবাস করছে। গরিব মানুষ বাড়ি বিক্রি করে ফরেস্টার স্যারকে বলেই জঙ্গলে বাড়ি করে বসবাস করছি। কোঁচ নেতা জাগেন্দ্র কোঁচ, যোগল কিশোর কোঁচ জানান, আমরা বনজঙ্গলে সেই বাপ-দাদার আমল থেকেই বসবাস করে আসছি। অসুবিধা হয়নি।
বন বিভাগ জানায়, ৩টি রেঞ্জে বিভক্ত গারো পাহাড়। রাংটিয়া রেঞ্জ, বালিজুড়ি রেঞ্জ ও মধূটিলা রেঞ্জ। রাংটিয়া রেঞ্জে বনভ‚মি ৮৮০২.৮১ একর, বে-দখল হয়েছে ১৪২৬.৫ একর। বালিজুরি রেঞ্জে বনভ‚মি ৮৩৪৫.৫০ একর, বে-দখল হয়েছে ৪৭৭একর। মধূটিলা রেঞ্জে বনভূমি ৪২৮২.২৯ একর, বে-দখল হয়েছে ৫৮৯.৬২ একর।
শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ আবু ইউসুফ বিপুল পরিমাণ বনভ‚মি বে-দখলের কথা স্বিকার করে জানান, হাতি নিরীহ প্রাণী। চেষ্টা করছি যাতে হাতি মারা না পড়ে। হাতি মারলে ছাড়া হবে না। অবার মানুষের জানমালেরও কোন ক্ষতি না হয়, সেদিকে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কিছু সচেতনতামূলক ক্যাম্পেন করা হয়েছে। হাতি মানুষের দ্ব›দ্ব নিরসনে পাহাড়ে অভয়াশ্রম গড়ে তোলার বিকল্প নেই। তিনি প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ জানান, বনভ‚মি উদ্ধারে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণও হাতির জন্য বনবিভাগ অভয়াশ্রমের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
শেরপুর জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ জানান, গারো পাহাড়ে হাতি- মানুষের দ্ব›দ্ব বেড়ে যাওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ