পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
দেশে কোটিপতির সংখ্যা প্রথমবারের মতো এক লাখ ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার। বর্তমানে এক কোটি টাকার আমানতকারী অ্যাকাউন্ট সংখ্যা এক লাখ ২৩৯টি। করোনার মধ্যেই গত দেড় বছরে কোটিপতি বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, মানুষের আয় কমার পরও কোটিপতির সংখ্যা বাড়ার এই প্রবণতা সমাজে আয়বৈষম্য বাড়াচ্ছে। তারা বলছেন, দেশে অর্থনীতির আকার ক্রমেই বড় হচ্ছে। প্রতিবছরই বাড়ছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়। তবে কিছু মানুষ যেমন গরিব হয়েছে, তেমনি ধনীরা আরও বেশি ধনী হয়েছে। সমাজের এই আয়বৈষম্য আরও ভালোমতো ফুটে উঠে রাজধানীসহ সারাদেশের বাজারগুলোর চিত্র দেখলে।
শীত মৌসুমের দাম কমার কথা থাকলেও রাজধানীর খুচরা বাজারে আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শীতের সবজি। সবজির পাশাপাশি দাম বাড়ার প্রতিযোগীতায় রয়েছে লাল লেয়ার মুরগি ও পাকিস্তানি ছোট মুরগিও। ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ প্রবাদটাকেও হুমকিতে ফেলে চাল ও মাছের দামের গ্রাফ উপরেই উঠছে। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারদরও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আয় না বাড়লেও দিনের পর দিন লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবনে নেমে এসেছে অস্বস্তি। এক কথায় সাধারন মানুষের অবস্থা যেন ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’। গতকাল রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৮০-১৮৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬৫-১৭০ টাকা। তিন সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০-১৫৫ টাকা। ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি দাম বেড়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগিরও। ব্যবসায়ীরা সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২৯০-৩০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৭০-২৮০ টাকা। দু’সপ্তাহ আগে এই মুরগির দাম ছিল কেজিপ্রতি ২৫০-২৭০ টাকা।
মুরগির দামের বিষয়ে মিরপুর-১১ বাজারের ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর কিরণ বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন কম হচ্ছে। ফলে বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কম। এ কারণেই দাম বেড়েছে। বয়লার মুরগির দাম বাড়ায় সোনালী মুরগির দামও বাড়ছে।
মুরগির দাম বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। গত সপ্তাহের মতো ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। সেই সঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহের মতো পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। তবে বাজারে নতুন আসা দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা।
এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ফুলকপির পিস বিক্রি করছেন ৪০-৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৪০ টাকা। বিচি ছাড়া শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২০-৩০ টাকা।
ফুলকপি ও শিমের দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মিলন মিয়া বলেন, বাজারে যে ফুলকপি ও শিম আসছে, সেগুলোর মান ভালো। বিচি ছাড়া শিমের সরবরাহও কিছুটা কম। ফুলকপির সাইজ আগের থেকে বড়। এ কারণে শিম ও ফুলকপির দাম একটু বেশি। তবে কয়েকদিনের মধ্যে এসব সবজির দাম কমে যেতে পারে।
অপরিবর্তিত রয়েছে বিচি শিমের দাম। আগের মতো বিচি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। সেই সঙ্গে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে নতুন আলুর। তবে বাজারে এখন বড় সাইজের নতুন আলু পাওয়া যাচ্ছে। এই নতুন আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় রয়েছে পাকা টমেটো ও গাজর। গত সপ্তাহের মতো পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা। গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। এছাড়া বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, শাল গমের কেজি ৩০-৪০ টাকা, লাল শাকের আঁটি ১০-১৫ টাকা, মুলা শাকের আঁটি ১০-১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর পালং শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা। এগুলোর দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৭৫০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৭০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দাম ২০ থেকে ৫০ টাকা কেজি প্রতি বেড়েছে।
এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৮০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।