Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা

ওমিক্রন প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে মানুষ যে হারে ভিড় জমাচ্ছে তাতে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ করোনা নিয়ন্ত্রণে সফলতার উদাহরণ হয়েছে। এখন যে সংক্রমণ কমে গেছে এটা ধরে রাখতে হবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বাড়তে পারে সংক্রমণ। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষ মাস্ক ব্যবহার না করেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ হচ্ছে, সেখানেও মাস্কের ব্যবহার নেই বললেই চলে। এতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সকলকে ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ দিতে সুরক্ষা অ্যাপ আপডেট করা হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন সামনের সারিতে থাকাদের সীমিত পরিসরে দেয়া হচ্ছে। ভ্যাকসিন গ্রহণের কার্ড নিয়ে ষাটোর্ধ ও সামনের সারিতে থাকা যারা তারা ভ্যাকসিন নিতে পারবেন। এই মাসের শেষের দিকে অ্যাপের মাধ্যমে তা শুরু হবে। এখন বিষয়টি নিয়ে আইসিটি বিভাগ কাজ করছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন একটা বড় কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে। এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ৭ কোটি। শতকরা হিসেবে তা ৬০ ভাগ মানুষকে দেয়া হয়েছে। আর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে সাড়ে ৪ কোটি, শতকরা হিসেবে তা ৩০ ভাগ। ১২ থেকে ১৩ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার টার্গেট সরকারের। এখন পর্যন্ত দেয়া হয়েছে ৩০ ভাগ মানুষকে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’ বিশ্বের প্রায় ৯০টি দেশে ছড়িয়ে গেছে। আগের ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার চেয়ে ‘ওমিক্রন’ খুব দ্রুত সংক্রমণ করছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ ‘লকডাউন’ জারি করেছে। ভ্রমণের ক্ষেত্রে অনেক কড়াকড়ি আরোপ করে রেখেছে। বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই দুইজন শনাক্ত হয়েছেন। তারা দুজনই জিম্বাবুয়েফেরত জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের সদস্য। আক্রান্ত দুই নারী ক্রিকেটার সুস্থ আছেন। ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ লকডাউন দিয়েছে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশও এই ব্যবস্থায় যাবে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ইউরোপের অনেক দেশ লকডাউন দিয়েছে। আমরা আমাদের দেশে লকডাউন চাচ্ছি না। কিন্তু মানুষ মাস্ক পড়ে না এবং স্বাস্থ্য বিধিও মানছে না। এজন্য ওমিক্রন বাড়ার আশঙ্কা করছে সরকার। সারাদেশের মানুষ যেন আগের মত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে এজন্য জেলা প্রশাসক এবং সিভিল সার্জনদের চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। দেশে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নেই, কিন্তু করোনা তো (অন্য ভ্যারিয়েন্ট) আছে! ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থেকেও যদি আমরা রক্ষা পেতে চাই, আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে- যেটি আমরা করছি না।

এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের সমালোচনা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষ যেন বেপরোয়াভাবে না ঘুরে বেড়ায়; কিন্তু সেটা হচ্ছে, রাজনৈতিক অনুষ্ঠানগুলো কীভাবে হয়? কক্সবাজারে লাখ লাখ মানুষ যাচ্ছে, কেউ মাস্ক পরছে না। বিয়ে হচ্ছে, কেউ মাস্ক পরছে না। তাহলে সংক্রমণ বাড়ার সুযোগ তো রয়েছে! আমরা এ বিষয়ে দুঃখিত।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোভিড নিয়ন্ত্রণে সফলতার উদাহরণ হয়েছে। সব হাসপাতালে এখন অক্সিজেন সাপোর্ট আছে। সংক্রমণ কমে গেছে। এটি ধরে রাখতে হবে।

উল্লেখ্য, আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রীও মালদ্বীপ যাবেন। বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্য কর্মীও নিতে চায় মালদ্বীপ। এ ব্যাপারে মালদ্বীপের এই সফরে চুক্তি করবে দুই দেশ। সার্বিক বিষয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে গতকাল সভা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ