পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যখনই কোনো দেশ ভালো করে, তার শত্রু বাড়ে, চাপও বাড়ে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারিভাবে বিশেষ কিছু করেনি, বলেনি। বাংলাদেশের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাপ দিচ্ছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, তারা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) তাদের কাজ করছে, আর বাংলাদেশ বাংলাদেশের কাজ করছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে এক আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যায় দন্ডিত পলাতক দুই অপরাধী সৈয়দ জিয়াউল হক, আকরাম হোসেনসহ এ হত্যাকান্ডে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য চেয়ে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের আওতাধীন ‘রিওয়ার্ড ফর জাস্টিস’ (আরএফজে) দপ্তর এ পুরস্কারের ঘোষণা দেয়।
‘রোহিঙ্গা সঙ্কট ও প্রত্যাবাসন’বিষয়ক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ড. মোমেন বলেন, আমেরিকানরা এভাবে পুরস্কার ঘোষণা করে সাফল্য পেয়েছে। অনেক দেশে যাদের পাওয়া যায় না তখন তারা এভাবে পুরস্কার ঘোষণা করে। আমি শুনেছি, ওসামা বিন লাদেনকেও ধরার ক্ষেত্রে এভাবে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। এ কৌশল অনেক সময় সাকসেসফুল হয়। আমি মামলাটা (অভিজিৎ হত্যা) পুরোপুরি ফলো করিনি। এসব বিষয়ে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভালো বলতে পারবেন। আমি কেসটা পুরোপুরি ফলো করিনি। শুনেছি দু’জনের শাস্তি হয়েছে। দুইজন পলাতক আছে। কোথায় কোন দেশে আছে আমরা জানি না। আমাদের তাদের যে ধরার চেষ্টা, এটা তাদের ধরার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে। তিনি আরো বলেন, ওদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, জাজমেন্ট হয়েছে; তারপরও ওরা পালিয়ে গেছে। এখনও যদি পুরস্কার ঘোষণার কারণে তাদের ধরা সম্ভব হয়, আমরা এটাকে স্বাগত জানাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তিন খুনিকে ধরার জন্য বাংলাদেশ সরকারও পুরস্কার ঘোষণা করেছে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, আমরাও বঙ্গবন্ধুর তিন খুনি, যাদের অবস্থান জানি না তারা কোথায় আছেন; তাদের ধরার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছি। কেউ যদি ওদের সঠিক তথ্য দিতে পারেন অবশ্যই সরকার তাদের পুরস্কার দেবে। তারাও (যুক্তরাষ্ট্রও) এ রকম দিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে চাপে রাখার চেষ্টা করছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমন বলেন, আমাদের দেশের কিছু লোকজন আছেন যারা প্রতিনিয়ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিশেষ করে ওখানকার আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন। মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন। মিথ্যা ভিডিও বানাচ্ছেন। ওখানে কিছু লোক আছে, দেশেও কিছু লোক আছে। যারা দেশের উন্নয়নে খুব সন্তুষ্ট না। দেশে একদল লোক আছে আওয়ামী লীগ এত ভালো করে ফেলছে কেন, দেশের মানুষ ভালো থাকবে কেন সেটা তারা চায় না। তাদের ধারণা, সবসময় আমরা পরনির্ভরশীল থাকব। বাংলাদেশ তো নিজের ওপর নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছে। এরা এটা পছন্দ করেন না। অনেকে মিথ্যা তথ্য দেন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা তথ্য দেয়া হচ্ছে, সেখানে সরকারের কিছু কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কেউ মরলে বিচারবহিভর্‚ত হত্যা আর আমেরিকায় মরলে লাইন অব ডিউটিতে মারা গেছে। আর আমাদের দেশে একজন মারা গেলেই গণমাধ্যম সঙ্গে সঙ্গে বড় হরফে লেখে, বিনা বিচারে হত্যা। সব দেশে অনেক লোক পালিয়ে থাকে, পরে ধরাও পড়ে। এটা কোনো বিগ ডিল নয়, আপনার দেশের একজন পালিয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এসব কর্মকান্ডে বাংলাদেশ চাপ অনুভব করছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, তারা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) তাদের নিয়মে চলছে। কিন্তু সরকারিভাবে আমাদের ওপর বিশেষ কিছু করেনি। তারা তাদের কাজ করছে।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বাংলা একাডেমির বইমেলা থেকে বেরিয়ে আসার সময় সন্ত্রাসীরা মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ রায়কে হত্যা এবং তার স্ত্রী রাফিদা বন্যা আহমেদকে আহত করে। ওই হামলায় ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের একটি আদালতে ৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেয়া হয়েছে। ওই আসামিদের মধ্যে দু’জন- সৈয়দ জিয়াউল হক (মেজর জিয়া) ও আকরাম হোসেনের অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছিল এবং তারা এখনো পলাতক রয়েছেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানবতাবাদী অনেক পশ্চিমা দেশই রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। তারা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তাও দিচ্ছেন। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তিনি আরো বলেন, মিয়ানমার আমাদের শত্রু দেশ নয়। তারা আমাদের প্রতিবেশী। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তবে তারা একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি। পশ্চিমা অনেক দেশ স্বীকার করেছে, রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধন করা হয়েছে। তাদের ওপর নিপীড়ন চালানো হয়েছে। তবে তারাই মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে। এমনকি শান্তিতে নোবেল জয়ী ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক সদস্য দেশও তাদের সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। অতীতে আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গারা সেখানে ফেরত গেছে। এখনো আমরা আলোচনার মাধ্যমেই রোহিঙ্গাদের ফেরাতে চাই। রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ তৈরির জন্য মিয়ানমার প্রতিজ্ঞা করলেও সেটা রাখছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।