Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পর্যটকদের আকর্ষণ খাগড়াছড়ি’র ফুলকলি

খাগড়াছড়ি থেকে স্টাফ রিপোটার | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ৪:১৯ পিএম

খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের কাছে অন্যতম দর্শনীয় স্থানের নাম জেলা প্রশাসকের হাতি ‘ফুলকলি’র সমাধি। জেলা শহরের প্রবেশমুখে স্থাপিত নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী ও ফুলকলির ইতিহাস জানতে প্রতিদিন শতশত পর্যটক ফুলকলির সমাধিতে ভিড় জমাচ্ছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি বাইরের পর্যটকদের কাছেও দিন দিন এর আকর্ষণ বাড়ছে
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়,‘১৯৬২ সালে তৎকালীন সাব-ডিভিশনাল অফিসার বা মহকুমা প্রশাসক হাবিবুল ইসলামের সময়ে ফুলকলিকে রামগড় থেকে খাগড়াছড়ি নিয়ে আসেন। ১৯৬২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত প্রায় ত্রিশ বছর ধরে এ জেলার রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কাজে অপরিসীম অবদান রেখেছে এ হাতিটি। বিজয় দিবস কিংবা স্বাধীনতা দিবসে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় কুচকাওয়াজের সময় জেলা প্রশাসককে সালাম দিত এই ফুলকলি।
এ ছাড়াও সত্তর থেকে আশির দশকের মধ্যে খাগড়াছড়িতে পাহাড়ের যে কোনো স্থানে গাড়ি খাদে পড়ে গেলে কিংবা দুর্ঘটনায় কবলিত হলে এ ফুলকলিকে দিয়ে তা উদ্ধার করা হতো। সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর ১৯৯০ সালের ২৭ জুলাই ঝুমঝুম বৃষ্টির দিনে জেলার সর্বোচ্চ পাহাড় আলুটিলায় গেলে পাহাড়ের খাদে পড়ে যায় হাতিটি। সেই দিন ওই খাদেই আনুমানিক বিকেল পাঁচটার সময় ফুলকলি মারা যায়’।
দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণের অভাবে ‘ফুলকলি’র সমাধিস্থল ছিলো জরাজীর্ণ এবং পরিত্যক্ত। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কের গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ফুলকলির সমাধিস্থলটি পর্যটক ও স্থানীয়দের কাছে উপেক্ষিত ছিল। তবে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস স্ব-উদ্যোগে ফুলকলির সমাধিস্থলটি সংরক্ষণ করেন৷
ফুলকলির কবর দেখতে আসা দর্শনার্থী ইদ্রিছ আলী বলেন, প্রাণীর প্রতি যে মানুষের ভালবাসা আছে এ সমাধি দর্শনে তার প্রমাণ মিলে৷ যিনি এ সমাধি সংরক্ষণ করেছেন আমি তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চাই৷
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, খাগড়াছড়ির ইতিহাসের সঙ্গে হাতির অভিন্ন সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে এক সময় পিছিয়ে পরা জনপদ পার্বত্য চট্টগ্রামের ভৌগোলিক গঠনের কারণে জেলা প্রশাসকরা পোষ্য হাতি ব্যবহার করত। ৯০ দশকের খাগড়াছড়ির তৎকালীন জেলা প্রশাসক খোরশেদ আনসার খান ‘ফুলকলি’র পিঠে চড়ে প্রত্যন্ত এলাকায় যেত। ফুলকলির (হাতি) মৃত্যুর পর তিনি পরম মমতায় এটিকে সমাধিস্থ করেন। সেই সমাধি সংরক্ষণের অভাবে এতদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিল। সেই ফুলকলির স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে হাতি ব্যবহারের ঐতিহ্য পর্যটক ও স্থানীয়দের কাছে তুলে ধরতে ‘ফুলকলির সমাধি সৌধ’ গড়ে তোলা হয়েছে

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ