Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লোকারণ্য দেশের পর্যটনকেন্দ্র

কক্সবাজার-বান্দরবান-কুয়াকাটা-রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি-সিলেট-সুন্দরবন সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকে টইটম্বুর হরিণ-বানর-বাঘ-কুমির বন্যপ্রাণি দেখতে সুন্দরবনে কক্সবাজারে ২ হাজ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

ভ্রমণপিপাসু হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশিরা। সময় পেলেই এদের দেশে-বিদেশে ঘুরে বেড়ানোর জুড়ি নেই। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সিংহভাগ পর্যটকই বাংলাদেশের। যে কোনো ছুটি-উৎসবে নেপাল, ভুটান, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ইউরোপ, আমেরিকার দেশে দেশে ঘুরে বেড়ান বাংলাদেশিরা। এতে বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে চলে যায়। তবে আশার কথা দেশে এখন পর্যটন খাতের আকার দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অসংখ্য নয়নাভিরাম পর্যটন স্পট গড়ে উঠেছে। নতুন নতুন পর্যটন স্পট গড়ে ওঠায় বাড়ছে কর্মসংস্থান, জিডিপিতে অবদানও। বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে পর্যটন খাতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ মানুষের। জাতীয় আয়ে এ খাতের অবদান ছিল ৯৫০ দশমিক ৭ বিলিয়ন টাকা, যা জিডিপির ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। অদূর ভবিষ্যতে তা ৬ শতাংশে পরিণত হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পর্যটনকেন্দ্রগুলোর যাতায়াত ও অন্যান্য সুবিধাগুলো আধুনিকায়ন করা হলে এ খাত থেকে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করতে পারবে।

গতবছর বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের থাবায় স্থবির হয়ে যায় পুরো খাত। করোনা টিকা দেয়া শুরু হলে আবারও ধীরে ধীরে খুলে যায় পর্যটনের দুয়ার। তবে দেশের বাইরে যেতে যুক্ত হয়েছে করোনা সার্টিফিকেট, টিকার সার্টিফিকেটসহ নানা শর্ত। অন্যদিকে দেশের ভেতরেই পর্যটন এলাকাগুলো কাছে টানছে সাধারণ মানুষকে। ফলে দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতেই এখন বাড়ছে বাড়তি চাপ। কক্সবাজারে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকত, প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, বান্দরবানের নীলগিরি, নীলাচল, মেঘলা, থানচি-আলিকদম-রুমা-রোয়াংছড়ির বিস্তীর্ণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, রাঙামাটির কাপ্তাই লেক, সাজেক, খাগড়াছড়ির আলুটিলা, রিসাং ঝর্ণা, সিলেটের বিছানাকান্দি, জাফলং, চাবাগান, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা, খুলনার সুন্দরবনসহ সারাদেশেই ছড়িয়ে আছে অসংখ্য প্রকৃতির লীলাভ‚মি। আর এসব দেখতে প্রতিদিনই ছুটে যান প্রকৃতিপ্রেমিরা। সরকারও এসব এলাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তা ও আকৃষ্ট করতে প্রতিনিয়তই চালিয়ে যাচ্ছে নানা চেষ্টা ও আয়োজন।

সম্প্রতি মহান বিজয় দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলে তিন দিনের ছুটিতে উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে দেশের শীর্ষ পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, খুলনা ও সিলেটের বিভিন্ন স্পটে। জানা যায়, গত ১০ ডিসেম্বরের আগেই কক্সবাজারের ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল ৯৫ শতাংশ বুকিং হয়ে যায়। দেড় লক্ষাধিক পর্যটকের রাত্রিযাপনের সুযোগ থাকা সৈকত এলাকায় গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ভিড় করেছেন প্রায় ৪ লক্ষাধিক পর্যটক। সাথে সাথে বেড়ে গেছে হোটেল ভাড়া ও খাবারের দামও। ২ হাজার টাকার রুম ১৩ হাজার টাকায়ও ভাড়া হয়েছে। আর ভাত-ডাল-আলু ভর্তার খাবার বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকায়। একইসঙ্গে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের আগমনে অনেকেরই ঠায় হয়েছে গাড়িতে, বীচে, কিংবা রাস্তার ধারে। একই অবস্থা ওই জেলার হিমছড়ি, ইনানী, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, মহেশখালীতেও।

পাহাড় কন্যা হিসেবে পরিচিত বান্দরবানেও রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক ভিড় করেছেন ৩ দিনের ছুটিতে। জেলার নীলগিরি, নীলাচল ও মেঘলাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অসংখ্য প্রকৃতিপ্রেমী। এখানেও ১০ তারিখের আগেই সব হোটেল-মোটেল বুকিং হয়ে যায়। আর ট্র্যাকিংপ্রেমীরা পাড়ি জমিয়েছেন জেলার বগালেক, কেওক্রাডং, তাজিংডং, রেমাক্রি, নাফাখুম, আমিয়াখুম, দেবতাখুম, মারায়নতংসহ অসংখ্য পায়ে হাঁটা পাহাড়ি এলাকায়। রাত্রীযাপনের সীমিত সুযোগ থাকা এসব এলাকাতেও ছুটির দিনগুলোতে ছিল অতিরিক্ত পর্যটকের উপস্থিতি। বাধ্য হয়ে অনেকেই তাঁবু টানিয়ে উপভোগ করেছেন পাহাড়, ঝর্ণা, নদী আর মেঘের আলিঙ্গন।

টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকের পদভারে মুখর হয়ে উঠেছে রূপের রানীখ্যাত পার্বত্য জেলা রাঙামাটি। খালি নেই শহরের হোটেল-মোটেল। ঝুলন্ত ব্রিজ, পলওয়েল পার্ক, রাঙামাটি পার্ক, শহীদ মিনার, ডিসি বাংলো, আরণ্যক হলিডে রিসোর্টসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র লোকে লোকারণ্য। পর্যটকদের কথা মাথায় রেখেই অপরূপ সাজে সাজানো হয়েছে পর্যটনকেন্দ্রগুলো।

খাগড়াছড়িতে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে অসংখ্য পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। পর্যটক বাড়ায় ভালো ব্যবসা করছেন হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা। টানা কয়েক দিন খাগড়াছড়িতে হোটেল-মোটেলে কোনো কক্ষ খালি নেই। একই অবস্থা রাঙামাটির সাজেকেও।

সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.), হযরত শাহপরাণ (রহ.) ও গাজী বুরহান উদ্দিনের মাজারসহ পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর, জাফলং, বিছানাকান্দি, রাতারগুল, টিলাগড় ইকোপার্ক, লাক্কাতুরা চা বাগানে পর্যটকটরা ভিড় করছেন।
পর্যটকের উপস্থিতিতে টইটুম্বুর সূর্যদয়-সূর্যাস্তের কুয়াকাটা সৈকত। দেশি-বিদেশি পর্যটকের রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতিতে স্বরূপে ফিরে কুয়াকাটা। সকল হোটেল-মোটেল বুকিং থাকায় অনেক পর্যটক বাসা-বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আগত এসব পর্যটকরা সমুদ্রের নো-জলে গা ভাসিয়ে নেচে-গেয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতেছেন।
নগর জীবনের যান্ত্রিকতাকে পেছনে ফেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে এসেছেন সুন্দরবনে। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। ২৪ ঘণ্টায় সুন্দরবনের ৬টি রূপ, সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত, গাছগাছালি, জীববৈচিত্র্য, সাথে রয়েছে ট্যুর অপারেটরদের আতিথেয়তা সব মিলিয়ে চমৎকার একটি সময় পার করছেন পর্যটকরা। গত দুদিন ধরে সুন্দরবনের করমজল, দুবলার চর, হিরনপয়েন্ট, কোকিলমুনি, হারবারিয়া-সব স্থানেই দেখা গেছে পর্যটকের উপচেপড়া ভিড়।

কক্সবাজারে রেকর্ড পর্যটক, ২ হাজার টাকার রুম ১৩ হাজার
টানা ছুটিতে এ বছর রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত শহর কক্সবাজারে। অবস্থান করছেন ৪ লাখের বেশি পর্যটক। কিন্তু সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টে কোথাও রুম নেই। রুম সঙ্কট দেখিয়ে পর্যটকদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে একটি চক্র। পর্যটকদের অভিযোগ, যে রুম ২ হাজার টাকা ভাড়া ছিল, সেটি টানা ছুটিতে এখন আদায় করছে ১০ হাজার টাকার বেশি। সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে কথা হয় নারায়ণগঞ্জ থেকে আগত পর্যটক রহিম উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এবারের মতো হয়রানির শিকার আগে হননি তিনি। এক রাতের জন্য একটি রুম ভাড়া নিতে হয়েছে ১৩ হাজার টাকায়। যেটি গত ৩ মাস আগেও রুম ভাড়া ছিল ২ হাজার টাকা।

লাবনী পয়েন্টে আরেক পর্যটক ইলিয়াছ বলেন, জিয়া গেস্ট হাউসে একরাতে রুম ভাড়া নিয়ে ২ হাজার ৫০০ টাকা। তারপর রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেছে। কিন্তু রুম ভাড়া নিয়ে ছিলাম দুই দিনের জন্য। তবে ৫ হাজার টাকা দেওয়ার পর রুম ভাড়া দেয়। এখানে বেড়াতে এসে এত ভোগান্তি আগে কোনো দিন হয়নি। এবার হোটেল ব্যবসায়ীরা এক প্রকার গলাকাটা ব্যবসা করছে। ব্যবহারও অনেক খারাপ করছে।

এদিকে নানা ভোগান্তির পরও সাগরের জলরাশিতে আনন্দে মাতোয়ারা ভ্রমণপিপাসুরা। আর রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আগমনে চাঙা পর্যটন ব্যবসা। সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের সাগরতীর। তীরজুড়ে মানুষ আর মানুষ। নেই কোনো ভেদাভেদ। সকল বয়সের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে ৩ কিলোমিটার সাগরতীর। বিজয় দিবসের ছুটিতে সৈকতে এসেছে ৪ লাখের বেশি পর্যটক। গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আগমন হয় আরও লক্ষাধিক পর্যটকের। ফলে সৈকত পাড়ের হোটেল-মোটেলগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে না রুম। তারপরও কক্সবাজারে আগমন বাড়ছে ভ্রমণপিপাসুদের। ঢাকার মিরপুর থেকে আসা পর্যটক হিরন বলেন, পরিবার নিয়ে সাগরতীরে বেশ মজা করছি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সাগরে কাটাব। এরপর হোটেলে যাব।

কক্সবাজারে সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টে রাত্রিযাপন করতে পারে দেড় লক্ষাধিক পর্যটক। কিন্তু টানা ছুটিতে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের আগমনে ভোগান্তিতে পড়ছেন অনেকেই। অভিযোগ করে মহিউদ্দিন নামের এক পর্যটক বলেন, হয়রানির তো শেষ নেই। যেখানে যায়, সেখানে হয়রানিতে পড়তে হচ্ছে। যেমন শামীম গেস্ট হাউসে প্রথমে রুম নেই বলে দেয়নি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর দালাল এসে রুম দিতে পারবে বলে জানায় এবং ৫ হাজার টাকা ভাড়া চায়। এটি আসলে মেনে নেওয়া যায় না।

টানা ছুটিতে পর্যটক আগমনে চাঙা পর্যটন ব্যবসা। সৈকতের হকার থেকে শুরু করে ফটোগ্রাফার, ওয়াটার বাইক ও বীচ বাইক চালকরা দারুণ খুশি। তবে লাইফগার্ড কর্মী মো. রশীদ বলেন, রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের আগমনে সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তা দিতে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। প্রায় ৪ লাখ পর্যটকের সমুদ্র স্নানে নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করছি মাত্র ২৬ জন কর্মী। পর্যটকরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ছাড়াও প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, হিমছড়ি, ইনানী, পাতুয়ারটেক ও রামুর বৌদ্ধবিহারে ঘুরে ছুটে যাচ্ছেন।

পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, এখনো পর্যন্ত কোনো পর্যটক অভিযোগ করেননি। তারপরও প্রশাসন মাঠে রয়েছে। যারা পর্যটকদের হয়রানি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বান্দরবানে পর্যটকের উপচেপড়া ভিড়
বান্দরবান থেকে স্টাফ রিপোর্টার মো. সাদাত উল্লাহ জানান, মহান বিজয় দিবস ও টানা ৩ দিনের ছুটিতে বান্দরবানে পর্যটকের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে জেলা প্রশাসন পরিচালিত সব পর্যটন স্পটগুলোতে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ১ দিনের জন্য বিনা টিকিটে প্রবেশ করে সুযোগ করে দেয়ায় পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও পর্যটন স্পটগুলোতে ভিড় জমাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটকদের পদচারনায় মুখর পর্যটনকেন্দ্রগুলো। মেঘলা, নীলাচলসহ নীলগিরি সবখানে ছুটে বেড়াচ্ছেন তারা। পরিবার-পরিজন বন্ধুবান্ধব নিয়ে অবকাশ যাপনে ব্যস্ত ভ্রমণপিপাসুরা। চাঁদের গাড়িতে করে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে ছুটছেন সৌন্দর্য দেখতে। হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউসগুলোও জমজমাট।

স্বপ্ন বিলাস রিসোর্টের পরিচালক বিশ্বজিৎ দাশ বাপ্পা জানান, ৩ দিনের ছুটি থাকায় বান্দরবানে প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। আমাদের হোটেলের সবগুলো রুমও বুকিং হয়েছে। অনেকে রুমের জন্য আসছে তাদের রুম দিতে পারছি না। হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বেশিরভাগ হোটেল-মোটেল সম্পূর্ণ বুকড হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, পর্যটকরা যাতে কোথাও কোনো ধরনের হয়রানির স্বীকার না হয়, সে লক্ষ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। স্পটগুলোতে ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল টিম রয়েছে। গাড়ি ভাড়া যাতে বেশি নিতে না পারে মটর মালিক সমিতিকেও সতর্ক করা হয়েছে। আশা করি পর্যটকরা নিশ্চিন্তে বান্দরবানে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।

পর্যটকের উপস্থিতিতে টইটম্বুর সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের কুয়াকাটা সৈকত
পটুয়াখালীর কলাপাড়া সংবাদদাতা এএম মিজানুর রহমান বুলেট জানান, দেশি-বিদেশি পর্যটকের উপস্থিতিতে টইটুম্বুর সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বেলাভ‚মি পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা। রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতিতে স্বরূপে ফিরে কুয়াকাটা। সকল হোটেল-মোটেল বুকিং থাকায় অনেক পর্যটক বাসা-বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। পর্যটকের এমন ভিড়ে হাসি ফুটেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মুখে। আগত এসকল পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ ও নৌ-পুলিশসহ সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

স্থানীয়রা জানান, কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট, লেম্বুর চর, ঝাউবাগান, গঙ্গামতির লেক, কাউয়ার চর, মিশ্রিপাড়া, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন তাঁতপল্লি এবং শুঁটকী পল্লিসহ দৃষ্টিনন্দন পর্যটন স্পটগুলো এখন আগত দর্শনার্থীদের সরব উপিস্থিতি। অধিকাংশ হোটেল-মোটেলগুলোর রুম বুকিং হয়ে গেছে। বছরের বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে এমন পর্যটকদের আগমন ঘটে। আর এ রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের আগমনে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরাও খুশি।

পর্যটক মেহেদী হাসান বলেন, তিনদিনের ছুটিতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কুয়াকাটা এলাম। এর আগেও কয়েকবার এখানে এসেছি। যোগাযোগ ব্যবস্থার বেশ উন্নতি হওয়ায় এখন আর কুয়াকাটা আসতে তেমন বেগ পেতে হয়নি। তাই বিশেষ করে বাচ্চাদের নিয়ে এবার ট্যুরে এসেছি। তবে অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো মোটেই ভালো না। এগুলোর সংস্কার কিংবা মেরামত হলে পর্যটকদের সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে। অপর এক পর্যটক খুশি আক্তার বলেন, কুয়াকাটার পরিবেশটা অনেক সুন্দর, ভালো লাগছে। বাবা-মা ছাতার নিচে বসে আছে, আমরা ছবি তুলছি, বাচ্চারা খেলা করছে। এদিকে সৈকতে তিন বন্ধু মিলে বালু দিয়ে উঁচু করে কি যেন তৈরি করার চেষ্টা করছে। এ সময় তাদেরই একজন মিজান বলেন, সমুদ্রে গোসল করেছি। এখানে এসে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখলাম। তারা আরো দু’দিন থাকবেন।

সমুদ্র বাড়ি রিসোর্ট’র ব্যবস্থপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, আগেই আমাদের সবগুলো রুম বুকিং রয়েছে। আগামী ১৬ থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সবকক্ষ অগ্রিম বুকিং দেওয়া রয়েছে। নতুন কাউকে রুম দেওয়া সম্ভব নয়।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা টোয়াক সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় এখন পর্যটকদের আগমন বেড়েছে।

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরতে পারে এবং কোনো ধরনের প্রতারণার স্বীকার না হয়, সে জন্য কুয়াকাটা পৌরসভার টিম সার্বক্ষণিক তদারকি করছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোন সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের কয়েকটি টিম মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক নজড়দারি ও মাইকিং করে বারবার মাস্ক পড়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হচ্ছে।

সুন্দরবনে পর্যটকদের ভিড়
সুন্দরবন থেকে ফিরে ডিএম রেজা : শীতের পর্যটন মৌসুমে সুযোগটির পূর্ণ সদ্ব্যাবহার করতে পিছুপা হননি ভ্রমণপিপাসুরা। নগর জীবনের যান্ত্রিকতাকে পেছনে ফেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে এসেছেন সুন্দরবনে। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। ২৪ ঘণ্টায় সুন্দরবনের ৬টি রূপ, সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত, গাছগাছালি, জীববৈচিত্র্য, সাথে রয়েছে ট্যুর অপারেটরদের আতিথেয়তা সব মিলিয়ে চমৎকার একটি সময় পার করছেন পর্যটকরা।

গত দুদিন ধরে সুন্দরবনের করমজল, দুবলার চর, হিরনপয়েন্ট, কোকিলমুনি, হারবারিয়া-সব স্থানেই দেখা গেছে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। করমজল পর্যটন স্পটে পর্যটকের সংখ্যা বেশি। করমজলে রয়েছে কৃত্রিম বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্র, চিড়িয়াখানা, বনের ভেতরে দীর্ঘ কাঠের ব্রিজ ওয়াকওয়ে, সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার। টাওয়ার থেকে সুন্দরবনের বড় একটি অংশ এক নজরে দেখা যায়। ওয়াকওয়ে দিয়ে হাঁটার সময় চোখে পড়ে বানর আর হরিণের দল। বানরগুলো নির্ভয়ে চলে আসবে আপনার সামনেই। একইভাবে হিরনপয়েন্টসহ অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলোতেও বন্যপ্রাণির দেখা মেলে। দুর্ভাগ্য অথবা সৌভাগ্যক্রমে ডোরা কাটা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখাও মিলতে পারে। নদ-নদীতে দেখা মেলে কুমির ও ডলফিনের। সুন্দরী গড়ান গেওয়া কেওড়া গাছের ডালে ডালে শীতে হাজার হাজার পাখির মিলন মেলা দেখে পর্যটকরা মুগ্ধ হচ্ছেন।

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা সেখ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী। তিনি জানালেন, না এলে জানতেই পারতেন না সুন্দরবন এতো সুন্দর। জোয়ার-ভাটার দৃশ্য খুবই মনোরম। সুন্দরবনে কচ্ছপ, বানর, হরিণ, কুমির ও বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখেছেন তিনি। তার স্কুলপড়ুয়া দুই মেয়ে সুন্দরবনে এসে খুবই আনন্দিত। একই রকম কথা জানালেন, দিনাজপুর থেকে আসা আহসান হাবিব দম্পতি। তারা জানালেন, দিনাজপুরে রামসাগরসহ বিভিন্ন দেখার দর্শনীয় স্থান রয়েছে। কিন্তু সুন্দরবনের রূপই আলাদা। কৌত‚কের ছলে তারা জানালেন, জাহাজে আইড়, লইট্যা, ছুরি, চাঁদা আর সামুদ্রিক নাম না জানা বিভিন্ন সুস্বাদু মাছ খেয়ে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।

সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (পশ্চিম) ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, সুন্দরবনে পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে ছুটি থাকলে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যায়। পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা দিতে বনবিভাগ সচেষ্ট রয়েছে।

পর্যটকে মুখর রাঙামাটি :
ছুটিতে পর্যটকের পদভারে মুখর হয়ে উঠেছে রূপের রানীখ্যাত পার্বত্য জেলা রাঙামাটি। খালি নেই শহরের হোটেল-মোটেল। ঝুলন্ত ব্রিজ, পলওয়েল পার্ক, রাঙামাটি পার্ক, শহীদ মিনার, ডিসি বাংলো, আরণ্যক হলিডে রিসোর্টসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র লোকে লোকারণ্য। ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মো. আল-আমীন জানান, করোনার কারণে দীর্ঘ দিন কোথাও ঘুরতে যেতে পারিনি। টানা তিন দিন ছুটি পাওয়াতে পরিবার-পরিজন নিয়ে রাঙামাটি বেড়াতে এসেছি। তবে এত বেশি পর্যটকের ভিড় থাকবে সেটা ধারণা করতে পারিনি। রাঙামাটির সৌন্দর্য দেখার পর সমস্যার কথা ভুলে গেছি।

রাজশাহী থেকে বেড়াতে আসা সুজন দেব বর্মন বলেন, আমাদের গ্রামের অনেকগুলো পরিবার মিলে একটি বাসে রাঙামাটি ভ্রমণে এসেছি। তবে আবাসিক হোটেলগুলোতে জায়গা পেতে আমাদের অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে। আমরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে শহরের বিভিন্ন হোটেলে রুম বুকিং করেছি। পর্যটন নগরীতে হোটেলের এত অপ্রতুলতা সত্যিই হতাশার।
রাঙামাটিতে পর্যটকদের মূল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ কাপ্তাই হ্রদ। পাহাড়ে ঘেরা হ্রদের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ছোট-বড় নৌকা ভাড়া করে ভ্রমণে বের হচ্ছেন। অনেকেরই রয়েছে কাপ্তাই হ্রদে রাত্রিযাপনের পরিকল্পনাও।

রাঙামাটি পর্যটন ঘাটের ইজারাদার মো. রমজান আলী জানান, হ্রদ ভ্রমণসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে নৌপথে ভ্রমণের জন্য আমরা ছোট-বড় ট্যুরিস্ট বোটগুলো প্রস্তুত রেখেছিলাম।

সিলেটে পর্যটকদের জায়গা দিতে হিমশিম
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব মিলে সিলেটে ছুটে এসেছেন অনেকে। অতিরিক্ত পর্যটক আসায় জায়গা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা। সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.), হযরত শাহপরাণ (রহ.) ও গাজী বুরহান উদ্দিনের মাজারসহ পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর, জাফলং, বিছানাকান্দি, রাতারগুল, টিলাগড় ইকোপার্ক, লাক্কাতুরা চা বাগানে পর্যটকটরা ভিড় করছেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সাদাপাথরে ঘুরতে আসা সালমা আক্তার জানান, বুধবার রাতে পরিবারের আট সদস্য নিয়ে সিলেটে এসেছেন। দরগাহ এলাকার একটি হোটেলে রাত্রিযাপন করে ভোরে মাজার জিয়ারত করে সকাল ১০টায় সাদাপাথর আসেন। নেত্রকোনা থেকে বন্ধুদের নিয়ে মাইক্রোবাসে মাজার জিয়ারত করতে সিলেটে আসেন তায়েফ আহমদ। তিনি বলেন, সকালেই সিলেটে এসে পৌঁছেছি। এরপর শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরাণের (রহ.) মাজার জিয়ারত করেছি। জাফলং ও লালখাল ঘুরে নেত্রকোনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবো।

সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের শোয়েব জানান, টানা তিনদিনের ছুটি পাওয়ায় একসপ্তাহ আগে থেকে সিলেটের অধিকাংশ আবাসিক হোটেল বুকিং দিয়ে রাখেন পর্যটকরা। কোনো হোটেল মালিক অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন না। সিলেটে অতিরিক্ত পর্যটক আসায় তাদের জায়গা দিতে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে।



 

Show all comments
  • Sk Istiack Mahmud Anik ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১:২৬ এএম says : 0
    পর্যটক বেশি ব্যবসা ভালো হওয়ার থেকে বাটপারি বেড়ে যায়
    Total Reply(0) Reply
  • Riad Parvez ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১:২৬ এএম says : 0
    লক ডাউন দেন তখন দেখবেন দেশের লোক ভাত খাইতে পারে না, গরীব দুখী
    Total Reply(0) Reply
  • Mizanur Rahman Shamim ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১:২৭ এএম says : 0
    ওয়ান টাইম ব্যাবসা করে নিচ্ছেন, সামনে আপনাদের খারাপ সময় আসতেছে, অপেক্ষা করতে থাকেন,কেঁদে কেঁদেও পর্যটক খুজেও পাবেন না,,,
    Total Reply(0) Reply
  • Hasan Soyeb ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১:২৭ এএম says : 0
    এই ভিড় দেইখা কক্সবাজার না গিয়ে,, বাড়ির পুকুরের পানিতে অনেকক্ষন দপাইলাম গরম কালে যাবো ওইখানে
    Total Reply(0) Reply
  • Kazi Riad ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
    রাতের চিত্র টা খুবই ভিন্নি, যদি এই চিত্রের উপর একটা রিপোর্ট হতো তাহলে মনে হয় ভালোই হতো।
    Total Reply(0) Reply
  • Ferdousi Begum ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
    তারপরও ওরা বলবে এদেশের মানুষদের টাকা নাই। শুধু অভাব আর অভাব।দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্ব গতি।গতকাল দেখা গিয়ে ছিল ২০০ টাকার ভাড়া ৪০০ টাকা দিয়ে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। এখন তো ঈদ না।তবুও কেন ঢাকা ছাড়ছে।তবুও মিথ্যা বলেই যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Mosharaf Hossain Jabed ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
    হায়রে বাঙালি তারা নাকি খাইতে পারে না মাগার কক্সবাজার যাওয়া জন্য তারা টাকা কই পায়???
    Total Reply(0) Reply
  • Rojina Kabir ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
    আগে কক্সবাজার গেলে ভালো লাগতো এখন আর ভালো লাগেনা সাগরের ঢেউ নাই এত পর্যটক পর্যটক এর কারণে পানি নোংরা হয়ে গেছে
    Total Reply(0) Reply
  • Urmi Aktar ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১:৩০ এএম says : 0
    ভাবছি কসবাজার এ একটু জমি কিনে ঘর বানিয়ে ভাড়া দিমু , তাহলে আর চাকরি করা লাগবো না , ঘর ভাড়ায় সারাবছর বসে খাওয়া যাবে
    Total Reply(0) Reply
  • Simul Akter ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১:৩১ এএম says : 0
    আমার মনে হয় আমি বাদে সবাই কক্সবাজারে গেছে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ