বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে সরকার দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার ইউনিয়নের পুরাতন অনন্তপুর বাজারে একটি ফার্নিচারের দোকান থেকে বিপুল পরিমাণ লগি-বৈঠা জব্দ করে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ ও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এছাড়াও নির্বাচনী এলাকায় স্থানীয় এমপি’র বিরুদ্ধে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে জনসংযোগের অভিযোগ করেছেন অন্যান্য প্রার্থীরা।
অভিযোগে জানা যায়, কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিন এমপি গত ৬ এবং ১৩ ডিসেম্বর হাতিয়া ইউনিয়নে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ব্যানারে নৌকা মার্কার প্রার্থীর পক্ষে জনসংযোগ করেন। যে কোন মূল্যে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ের ঘোষণায় নেতাকর্মীরা উষ্কে ওঠে। এছাড়াও এই ইউনিয়নে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গত ২ ডিসেম্বর শ্যামপুরের কাচারিয়ার ঘাটে নৌকা প্রতীক পোড়ানোর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তিনি। ১৩ ডিসেম্বর হাতিয়া ভবেশ এলাকায় হাতিয়া গণহত্যার অন্যতম হোতা মৃত. রাজাকার বাবর উদ্দিনের পুত্র মাওলানা মোবাশ্বের রাশেদীনসহ সাবেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আজিজার মাওলানাকে নিয়ে ওই ওয়ার্ডে প্রচারণা চালান। এছাড়াও তিনি সন্ধ্যায় সালাম পীর সাহেবের বাৎসরিক ওয়াজ মাহফিলে অংশ নিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চান বলে অভিযোগ উঠেছে।
অপরদিকে লগি-বৈঠা উদ্ধারের পর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে হাতিয়া ইউনিয়নের পুরাতন অনন্তপুর বাজারে রুবেল নামে এক ব্যক্তির স’ মিলে ৩০০ লগি-বৈঠার অর্ডার দেয়া হয়। পরে সেগুলো সাইজ করার জন্য ওই বাজারে সিয়াম ফার্ণিচারের দোকানে পাঠানো হয়। রুবেল স’মিলের হেড মিস্ত্রী মিন্টু মিয়া জানান, এই মাসের ২-৩ তারিখের দিকে রাজু ও জাহাঙ্গীর নামে দুই যুবক ৭ হাজার ৫শ’ টাকায় ৩০০ লগি-বৈঠার অর্ডার করে। জাহাঙ্গীর এজন্য আামকে ১ হাজার টাকার বায়না দেয়। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তারা নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী নয়ার জন্য অর্ডারটি করছে বলে জানায়। অপরদিকে সিয়াম ফার্নিচারের মালিক আনিছুর রহমান জানান, জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তি গত রোববার সকালে ৩০০ লগি-বৈঠার অর্ডার দেয়। এজন্য আমাকে তারা অগ্রিম ৫শ’ টাকা দিয়েছে। আমি সবগুলো লগি-বৈঠা তৈরি করেছি। তাদের সাথে আমার ২ হাজার টাকার চুক্তি হয়েছে। গত সোমবার রাত ১০টার দিকে উলিপুর থানা থেকে পুলিশ লগি-বৈঠাগুলো জব্দ করে নিয়ে যায়।
বিষয়টি নিয়ে হাতিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মোবাইলে জানান, হাতিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী ফারুক আমাকে লগি-বৈঠা তৈরি করার দায়িত্ব দিয়েছে। ভোটের দিন গÐগোল হলে এগুলো ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে। হাতিয়া ইউনিয়নে নৌকা মার্কার প্রার্থী শায়খুল ইসলাম নয়া জানান, আমি শুনেছি জাতীয় পার্টির কর্মীর দোকান থেকে লগি-বৈঠা পাওয়া গেছে। এর সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সেগুলো জব্দ করলেও আমাকে কোন ফোন দেয়নি। আমার স্বচ্ছ ইমেজ নষ্ট করার জন্য প্রতিপক্ষরা নোংরা খেলায় মেতেছে।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইমতিয়াজ কবির জানান, হাতিয়া ইউনিয়নের পুরাতন অনন্তপুর বাজার থেকে গত রোববার রাত ১০টার দিকে একটি ফার্নিচারের দোকান থেকে ৩০০ লগি-বৈঠা জব্দ করা হয়। নির্বাচনী পরিবেশ যাতে বিনষ্ট না হয় এজন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে। জেলা নির্বাচন অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম রাকিব জানান, এ ব্যাপারে রিটার্র্নিং অফিসার ও পুলিশের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও গতকাল বিকেলে উলিপুর উপজেলা পরিষদ হলরুমে এই উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের সকল প্রার্থীদেরকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা ও আচরণবিধি নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে জিরো টলারেন্সর সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সকল ধরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।