Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

যশোরের সরকারি চাকরিজীবী প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা!

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ৫:১৪ পিএম

যশোরের কেশবপুর উপজেলার ইউপি নির্বাচনে সরকারি চাকরিজীবী চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের আপত্তি আমলে না নিয়ে রবিবার স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আলাউদ্দিনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার বজলুর রশীদ। তার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর আপিল করেছেন নৌকার প্রার্থী গৌতম রায় ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আয়ুব হোসেন।

তাদের দাবি, ২০১৮ সালের এক প্রজ্ঞাপনে যশোরের কেশবপুর পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানে দর্শন বিষয়ের প্রভাষক পদে কর্মরত মো. আলাউদ্দিন। তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থেকেও কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি যশোরের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মো. হুমায়ুন কবীর।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই শিক্ষামন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষক বিভাগের উপসচিব লুৎফুন নাহার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর কেশবপুর পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারি করা হয়। বর্ণিত বিদ্যালয়টির নাম সংশোধন করে ‘কেশবপুর পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়’ যশোর নামে সরকারি করা হল। এরপর ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে কেশবপুর পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বেসরকারি আমলে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীর ৪৩টি পদ আত্তীকরণ করা হয়। এই আত্তীকরণের তালিকায় দর্শন বিষয়ের প্রভাষকের একটি পদ রয়েছে। আর ওই পদে একজন প্রভাষক কর্মরত আছেন, তিনি হলেন মো. আলাউদ্দিন।
এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়ালের ষষ্ঠ অধ্যায়ের ২৬ এর ২-ঙ ধারায় বলা হয়েছে, প্রার্থী প্রজাতন্ত্রের বা পরিষদের বা অন্যকোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কর্মে লাভজনক সার্বক্ষণিক পদে অধিষ্ঠিত থাকলে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।
কেশবপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডভোকেট আয়ুব হোসেন বলেন, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আলাউদ্দিন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। আইন অনুসারে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য। এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে আপত্তি দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আপত্তি আমলে নেননি। তাকে বৈধ প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে আপিল করেছি জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার বরাবর।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আলাউদ্দিন বলেন, প্রতিষ্ঠান ও পদ আত্তীকরণ (সরকারি) হলেও ব্যক্তি হিসেবে এখনো আমার চাকরি গেজট প্রকাশ হয়নি। এজন্য প্রার্থী হয়েছি। রিটানিং অফিসার যাচাই বাছাই করে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন।’
এ বিষয়ে কেশবপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার বজলুর রশীদ বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আলাউদ্দিনের প্রার্থীতা নিয়ে আপত্তি করা হয়েছিল। কিন্তু আপত্তির বিষয়ে যথাযথ তথ্য প্রমাণ দিতে না পারায় আলাউদ্দিনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।’
তবে আপত্তি তোলা প্রার্থীরা জানিয়েছেন, আলাউদ্দিনের মনোনয়নপত্র বাতিলের বিষয়ে যথাযথ তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার সেই সব প্রমাণপত্র আমলে নেননি।
প্রসঙ্গত, বেসরকারি কলেজের প্রভাষক পদে কর্মরত অবস্থায় ২০১৬ সালের নির্বাচনে কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত মো. আলাউদ্দিন। এরপর ২০১৮ সালে তার কর্মরত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ হয়েছে। তিনি বর্তমানে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি কেশবপুর পৌর বিএনপিসাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ