Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভাঙচুর করা হয়েছে ৩টি মোটরসাইকেল, ২টি কার্যালয়, বসত ঘরের দরজা ও জানালা

ইউপি নির্বাচন, নোয়াখালীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়িতে হামলা, আহত-১২

নোয়াখালী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ৫:২৫ পিএম

আগামী ২৬ ডিসেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নোয়াখালীর সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে হামলা, পাল্টা হামলা, সংঘর্ষ, ভাঙচুরের ঘটনা অব্যহত রয়েছে। এবার নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে উপজেলার কালাদরাপ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে তার নির্বাচনী কার্যালয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১২জন আহত হয়েছে। ঘটনায় সাধারন ভোটারদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন অন্য প্রার্থীরা।
সোমবার দুপুরে হামলার প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবীতে ৫নং ওয়ার্ড হাজী আমিন উল্যা বাজারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে স্বতন্ত্র মোটরসাইকেল প্রতীকে সমর্থকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে রোববার বিকেলে নুরু পাটোয়ারীহাটে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান মিজান ও স্বতন্ত্র মোটরসাইকেল প্রার্থী মো. নুরুল আমিনের সমর্থকদের সাথে বাকবির্তকের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে নৌকা প্রার্থীর ভাই মাকসুদুর রহমান মোটরসাইকেল প্রতীকের এক প্রচারকর্মীকে মারধর করে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। সন্ধ্যায় হাজী আমিন উল্যা বাজারে এসে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান নিলে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। উভয় পক্ষ একে-অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে উভয় পক্ষের অন্তত ১২জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
ইউনিয়নের একাধিক ভোটারের সাথে কথা হলে তারা জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকা ও মোটরসাইকেল প্রার্থীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ, পাল্টা-পাল্টি হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় সাধারন ভোটারদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতি চলমান থাকলে নিজেদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন বলেও জানান অনেকে। ভোট কেন্দ্রে ভোটের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
মোটরসাইকেল প্রার্থী মো. নুরুল আমিন অভিযোগ করে বলেন, রাত ৯টার দিকে নৌকা প্রার্থীর লোকজন হাজী আমিন উল্যা বাজারে থাকা আমার নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে আমার সমর্থক ছায়েদ, স্বপন, আলা উদ্দিন, মিলন, দুলাল ও কাশেমকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম ও ব্যাপক ভাঙচুর করে। এসময় তারা ওই বাজারে থাকা নিজেদের কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আমাদের দায়ী করার চেষ্টা করে।
তিনি আরও বলেন, হামলা পরবর্তী আমি নেতাকর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সাথে কথা বলতেছিলাম। রাত ১০টার দিকে বাজারের উল্টো দিক থেকে নৌকা প্রার্থীর লোকজন আমার বাড়িতে অর্তকিত হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা আমার বাড়ির গেইটে থাকা ৩টি মোটরসাইকেল, দরজা ও জানালা ভাঙচুর করে। এরআগেও নৌকা প্রার্থীর লোকজন একাধিকস্থানে তার নেতাকর্মীদের মারধর ও প্রচারে বাঁধা দিয়েছে বলেও অভিযোগ করে আগামী ২৬ ডিসেম্বর সুষ্ঠু ভাবে ভোটগ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন এ প্রার্থী।
অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকার প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান মিজান বলেন, মোটরসাইকেল প্রতীকের লোকজন কোন কারণ ছাড়া আমার অফিসে ভাঙচুর করেছে। নিজেদেরে বাড়িতে নিজেরা হামলা করে আমার ওপর দায় চাপাচ্ছে। এ ঘটনার সাথে আমি বা আমার কোন কর্মী জড়িত নেই।
সুধারাম মডেল থানার ওসি সাহেদ উদ্দিন বলেন, দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিকেল পর্যন্ত কোন পক্ষের কাছ থেকে আমরা লিখিত কোন অভিযোগ পায়নি।
রিটার্ণিং কর্মকর্তা আবুল মনছুর আহমেদ জানান, এ ঘটনায় কোন পক্ষই আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়িতে হামলা ও উভয় পক্ষের নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আগামী ২৬ডিসেম্বর ওই ইউনিয়নের ১১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ৬জন প্রার্থী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ