Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাওয়াদ-এর প্রভাবে বরিশাল অঞ্চলে শত কোটি টাকার ফসলহানী

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০২১, ৭:২৯ পিএম

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সাম্প্রতিক নি¤œচাপ ‘জাওয়াদ’এ ভর করে অকাল বর্ষনে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে প্রায় শত কোটি টাকার ফসল সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে। তবে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর-ডিএই’র তরফ থেকে ৫৮ হাজার ৫শ হেক্টর জমির ফসল দূর্যোগ কবলিত বলে দাবী করে ১৩ হাজার ১৫৩ হেক্টরের ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানান হয়েছে। টাকার অংকে ক্ষতির পরিমান ৮০ কোটি বলে জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের জন্য চলতি রবি মৌসুমে বীজ ও সার বিভিন্ন ধরনের কৃষি উপকরন সরবারহে অধিদপ্তরে সুপারিশমালা পাঠান হয়েছে।
নি¤œচাপ জাওয়াদ-এ ভর করে গত ৫ থেকে ৭ ডিসেম্বর বরিশাল অঞ্চলে প্রায় ১শ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেও জোয়ারে পানির প্রবাহ অস্বভাবিকভাবে বাড়েনি। কিন্তু অগ্রহায়নের এ অকাল বর্ষনে মাঠে থাকা পাকা ও আধাপাকা অমন ও তার সাথী ফসল খেশারী ডাল ছাড়াও মুসুর ডাল, সরিষা, গোল আলু, গম সহ শীতকালীন আগাম সবজির যেসব জমি আক্রান্ত হয়েছে তার প্রায় ৩০Ñ৪২ভাগ পর্যন্ত সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানা গেছে।
ডিএইর দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, আমনের ২৪ হাজার ৮৮৫ হেক্টর, খেশারী ডালের ১০ হাজার ১৫৪ হেক্টর, মুসুর ডালের ৪ হাজার ৯৬৭ হেক্টর, সরিষার ২ হাজার ৮৭৪ হেক্টর, গমের ২০৮ হেক্টর, মরিচের ৫২১ হেক্টর এবং গোলা আলুর ৩২৬ হেক্টর জমি অতি বর্ষনে আক্রান্ত হয়। এভাবে রোপা আমন ও রবি ফসলের প্রায় সাড়ে ৫৮ হাজার হেক্টর জমি বৃষ্টির পানিতে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যার মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতির হার ছিল ফসল ভেদে ১০% থেকে ৪০% পর্যন্ত। ডিএই’র হিসেবে সম্পূর্ণ ক্ষতিতে রূপান্তর করলে তা ছিল ১৩ হাজার ১৬৩ হেক্টর বা প্রায় ৩৩ হাজার একর। ডিএইর এ হিসেবে টাকা অংকে ক্ষতির পরিমান প্রায় ৮০ কোটি বলা হলেও বেসরকারী সূত্রগুলো তা শত কোটি টাকারও বেশী বলে দাবী করা হয়েছে।
তবে ক্ষতি ৮০ কোটি বা ১শ কোটি যাই হোক না কেন, বরিশাল অঞ্চলের কৃষকের ঘরে এখন ফসল হারানো শোক। আমন নির্ভর দক্ষিণাঞ্চলে কৃষি ব্যবস্থায় এ ক্ষতি কৃষি অর্থনীতিতেও যথেষ্ঠ বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদগন।
এবার খরিপ-২ মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে যে ৮ লাখ ৫৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছিল, সেখানে উৎপাদন লক্ষ্য রয়েছে প্রায় ২০ লাখ টন চাল। জাওয়াদ’এর আঘাতের আগের দিন পর্যন্ত মাত্র ২৫ ভাগ জমির আমন ঘরে তুলেছিল কৃষকরা। গতবছরও ঘূর্ণিঝড় আম্পান এবং ভাদ্র মাসের বড় অমাবশ্যায় এ অঞ্চলের প্রায় ৭০ ভাগ আমনের জমি প্লাবিত হওয়ায় ভয়াবহ দূর্যোগে বরিশাল অঞ্চলে উৎপাদন ঘাটতি ছিল লক্ষমাত্রার প্রায় দেড় লাখ টন কম। এবার নি¤œচাপ জাওয়াদ-এর ক্ষতির অগে এ অঞ্চলের মাঠে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ হেক্টরে রবি সহ বিভিন্ন ফসল ছিল।
তবে বোরো বীজতলার ক্ষতি হলেও তা পূণর্বাশনের যথেষ্ঠ সময় রয়েছে। এবার রবি মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের মাধ্যমে প্রায় ১৫ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ