সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে রাজশাহীতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করা হয়েছে। রোববার সকালে রাজশাহী বিভাগীয় সাইবার ট্রাইবুনাল কোর্টে মামলার আবেদন করেন বগুড়া বার এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এ্যাডভোকেট একেএম সাইফুল ইসলাম। একই মামলায় মহিউদ্দিন হেলাল নামে অপর একজনকেও আসামী করা হয়।
বাদি পক্ষের আইনজীবী পারভেজ তৌফিক জাহেদী জানান, সম্প্রতি সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বিএনপি চেয়ারপার্সনের নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার মক্কেল আইনজীবী একেএম সাইফুল ইসলাম মামলার আবেদন করেছেন। আদালত আবেদন গ্রহন করে শুনানির দিন ধার্য করে।
তিনি আরও বলেন, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান ছাড়াও মহিউদ্দিন হেলাল নামের একজনকে আসামী করা হয়েছে। ঐ ব্যক্তির ফেসবুক লাইভে মুরাদ হাসান বক্তব্য রাখেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা হলেন, বিভাগীয় সাইবার ট্রাইবুনাল কোর্টের বিচারক জিয়াউর রহমান ছুটিতে আছেন। তবে মামলার আবেদন গ্রহন করার নির্দেশনা দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামীকাল সোমবার শুনানির দিন ধার্য করেছেন। শুনানির পর মামলা রেকর্ড করে তদন্ত করা হবে কি না তার আদেশ দিবেন বিচারক।
এদিকে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে ড. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা নেওয়ার জন্য আদালতে একটি আবেদন জমা পড়েছে। রোববার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা ওমর ফারুক ফারুকী এই আবেদন জমা দিয়েছেন।
ওমর ফারুক ফারুকীর আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, রবিবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক ছুটিতে আছেন। তাই আবেদনের বিষয়ে আগামীকাল সোমবার শুনানি হতে পারে। মামলা নেওয়ার আবেদনে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার নাতনি ও তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমান লন্ডনে আইন পেশায় নিয়োজিত। তাঁর সম্পর্কে মানহানিকর ও মিথ্যা তথ্যসংবলিত বক্তব্য দিয়েছেন মুরাদ হাসান। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। অপরদিকে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পরিবারের এক নারী সদস্য সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল বক্তব্য প্রদানের অভিযোগে সদ্য পদ হারানো তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করা হয়েছে। মামলার বাদী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম চট্টগ্রাম ইউনিটের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এস এম বদরুল আনোয়ার বলেন, ‘ব্যারিস্টার জাইমা রহমানকে নিয়ে ডা. মুরাদ আজেবাজে মন্তব্য করেছেন। তিনিসহ দুইজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৩০, ৩১ ধারায় সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করা হয়েছে। মামলাটি আদেশের জন্য রেখেছেন আদালত।
সম্প্রতি এক ফেসবুক পেজের লাইভে এসে খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল মন্তব্য করেন ডা.মুরাদ হাসান। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে দুই বছর আগের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। এতে ওই চিত্রনায়িকাকে ধর্ষণের হুমকি দিতেও শোনা যায় ডা.মুরাদ হাসানকে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর জামালপুরের এই সংসদ সদস্যকে আওয়ামী লীগের স্থানীয় কমিটি থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়। #