Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেতুর জন্য কৃষকের ভোগান্তি

নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

নীলফামারীর সৈয়দপুরে একটি সেতুর জন্য চরম ভোগান্তিতে পড়েছে কৃষকরা। শহরের কোল ঘেঁষা খড়খড়িয়া নদীর একাংশে কুন্দল অংশে সেতু না থাকায় প্রায় ১শ’ একর জমির চাষাবাদ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে সংলগ্ন এলাকার কৃষকরা। দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলে আসলেও যেন দেখার কেউই নাই।
এলাকার একাধিক সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর শহরের ১১নং ওয়ার্ডের কুন্দল মহল্লা ঘেঁষে বয়ে গেছে খড়খড়িয়া নদী। শুষ্ক মৌসুমে নদীটি ক্ষিণ ধারায় বইলেও ভর বর্ষায় এটি ভয়াল রুপ ধারণ করে। নদীর পূর্ব তীরে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সৈয়দপুর শহর রক্ষা বাধ। কিন্তু পশ্চিম তীর বাধ না থাকায় ওই অংশের চাষাবাদে বিড়ম্বনার মুখোমুখী হচ্ছেন কৃষকেরা।
সূত্র জানায়, প্রতি বর্ষায় প্লাবিত হয় খড়খড়িয়া সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা। নদীর পূর্ব তীরের বাঁধ ঘেঁষে কুন্দল গ্রামের তিন শতাধিক কৃষকের আবাদি জমি রয়েছে নদীর পশ্চিম তীরে। নদী পার হয়ে ওই জমি চাষাবাদ করতে এলাকার কৃষকদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। কারণ নদীর অপর পারে যাওয়ার জন্য কোন সেতু নেই। নদী সাঁতরে অপর পারে যাওয়া সম্ভব না হওয়ায় জমিগুলো পরিণত হয়েছে এক ফসলি জমিতে।
এ কারণে দীর্ঘ দিন থেকে ওই এলাকার মানুষ কুন্দল গ্রামের ওই অংশে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে।
এলাকার কৃষিজীবীরা জানান, আমাদের বিশাল সেতুর দরকার নেই। একটি ফুটওভার ব্রিজের মত থাকলে ওপারের জমিতে গিয়ে নিয়মিত চাষাবাদ করা সম্ভব হতো।
কুন্দলের কৃষক মহসিন আলি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বেড়েছে। কিন্তু নদীতে সেতু না থাকায় সময় মত আবাদি জমিতে সারের ব্যবহার, কীটনাশক ও ওষুধ প্রয়োগ, জমির ফসল রোপন ও ঘরে তোলা এবং আবাদকৃত ফসল বাজারজাত করতে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। প্রতি বছর লোকসান গুনতে হচ্ছে আমাদের। সূত্র জানায়, বছর দু’য়েক আগে এলাকাবাসী নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছিল।
কুন্দল পুর্বপাড়ার কৃষক মকবুল হোসেন (৭০) জানান, ২০১৮ সালের বন্যায় বাঁশের সাকোটি স্রোতে ভেসে যায়। এ সময় সাঁকো রক্ষায় গ্রামবাসীরা এগিয়ে এলে স্রোতের তোড়ে বাঁশের আঘাতে এক গ্রামবাসীর একটি পা ভেঙে যায়। পরে দেড় বছরের চিকিৎসায় প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে ওই কৃষকের।
কুন্দল এলাকায় খড়খড়িয়া নদীতে সেতু না থাকায় দুর্ভোগের কথা জানালেন ওই এলাকার, আ: মান্নান, আফজাল হোসেন, শহিদুল ইসলাম, মোকছেদ আলী, গোলাম মর্তুজা, শফিকুল ইসলাম, আতাউর রহমান, আনিছুর রহমান ও জহুরুল হক। তাদের দাবি বড় কোন সেতু নয়। শুধু কৃষি পণ্য বহনের জন্য নদীর ওই অংশে ছোট আকারের একটি সেতু নির্মাণ করা হোক।
সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ বলেন, এলাকার কৃষি উৎপাদনের স্বার্থে অবশ্যই ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণ দরকার।
নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান আদেল বলেন, ফসল তুলতে এপারের কৃষকদের দুর্ভোগে কথা শুনেছি। তাই ওই স্থনে সেতু নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি। এ ব্যপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ