পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আসি আসি করে শীতও আসছে না। সরবরাহ ভালো থাকার পরও বাজারে দাম করছে না শীতের সবজির। পাশাপাশি খাল-বিল শুকিয়ে যাওয়ায় বাজারে নানা পদের ছোট মাছের সরবরাহও প্রচুর। সঙ্গে চাষের রুই, কাতল, শিং, কই আর পাবদা তো আছেই। তবে থাকলে কি হবে? দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষের আয় না বাড়ায় অনেকেরই সাধ্যের বাইরে মাছ। গরুর গোশত, খাশির গোশতের পর দামের দিক দিয়ে ধীরে ধীরে মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে মুরগিও। গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগিও কেজি প্রতি প্রায় ২০ টাকা বেড়েছে। এ তালিকায় পেঁয়াজসহ আরও আছে আদা-রসুন-এলাচিও।
দ্রব্যমূল্যের যখন এই পরিস্থিতি তখন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতার লাইনটা খুবই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠে। ‘কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো কেউ কথা রাখেনি’। অবশ্য কবিতায় তেত্রিশ বছরের পরিবর্তে পঞ্চাশ বছর লিখলে হয়তো আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতো। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পূর্তিতে দেশের সাধারন মানুষের সবচেয়ে বড় আক্ষেপটাই হয়তো এই বাড়তি বাজারদর।
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে বাজারের এমন চিত্রই চোখে পড়েছে। দেখা গেছে, এখনও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব ধরনের সবজি। তবে বিক্রেতাদের দাবি, আগের চেয়ে দাম কমেছে সবজির। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, বিগত বছরগুলোতে এই সময়ে সবজির দাম অনেক কম ছিল। তবে এ বছর জুড়েই সবজির দাম খুব চড়া। এখনও বেশিরভাগ সবজি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার ওপরে। বাজারে দাম চড়া দেখে ক্রেতাদের প্রশ্ন, আর কবে সবজি দাম কমবে?
সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের সবজি প্রতি পিস বাঁধাকপি ৪০ টাকায় ও ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বেগুন ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, গাঁজর ৮০ থেকে ৯০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ম‚লা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, শালগম ৫০ টাকা, নতুন আলু ৪০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, সিম ৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ফুলকা প্রতি আটি ২০ থেকে ৩০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও এক হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। এছাড়া শাকের মধ্যে পালংশাক, লালশাকের আঁটি ১৫-২০ টাকা, লাউশাকের আঁটি ৩০-৪০ টাকা, মুলাশাক, সরিষাশাক ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বলে দাবি বিক্রেতাদের। পেঁয়াজের এমন দাম বাড়ার কথা জানিয়েছে সরকরি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশ বা টিসিবিও।
সংস্থাটির তথ্যে জানা গেছে, এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। এই সময়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ সর্বনিম্ন ৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে টিসিবি ট্রাকে পেঁয়াজ বিক্রি করছে ৩০ টাকা কেজিতে। এ ছাড়া সংস্থাটির পক্ষ থেকে গত সপ্তাহের ১২টি পণ্যের দামের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এর মধ্যে ৯টি পণ্যেরই দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে।
দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি আমদানি করা পেঁয়াজের দামও বেড়েছে আগের সপ্তাহের তুলনায়। সর্বোচ্চ ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে আমদানি করা পেঁয়াজ। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৪৫ টাকা। শুধু পেঁয়াজই নয়, খোলা ময়দাও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। প্রতি কেজি ময়দা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৪০ টাকা। পুরোনো আলুর কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা। আগের সপ্তাহে ছিল ২০ টাকা।
দেশি ও আমদানি করা রসুনের দাম বেড়েছে। বাজারে বেড়েছে আদা, এলাচসহ ব্রয়লার মুরগির দামও। গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া ১৪০ টাকা কেজির ব্রয়লার মুরগি এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। তবে কমেছে পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
মুরগির দামে মিশ্রপ্রবণতা থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। গত সপ্তাহের মতো ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া গরুর গোশতের কেজি ৫৮০-৬০০ টাকা, খাসির গোশত ৮০০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছবাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। এক সপ্তাহ আগে রুই ও কাতল মাছের কেজি ছিল ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে টাকি মাছ। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এ মাছগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামও পরিবর্তন আসেনি। কিন্তু ব্যাপক সরবরাহ থাকার পরও দাম না কামায় আক্ষেপ ক্রেতাদের।
তবে এক সপ্তাহ ধরে ঢাকায় চালের বাজার স্থিতিশীল। সরু চালের মধ্যে নাজির ও মিনিকেট বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৬৮ টাকায়, যা আগের সপ্তাহেও একই দর ছিল। মাঝারি মানের চালের মধ্যে পাইজাম ও লতা বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকা কেজি। মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা ও চায়না ইরি বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকা কেজি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।